সিলেট ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:১৯ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২৪
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের বালাগঞ্জে নর্থ ইস্ট বালাগঞ্জ কলেজে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পুরণের নামে মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়া, নীতিমালা অমান্য করে গত বছর এক বা দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীদের এবার ফরম পুরণের সুযোগ না দেয়া, পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বঞ্চিত করার মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার টার্গেট নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়া হয়, গত বছরের অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিলে ফরম পুরণের সুযোগ দেয়া হবে। তাদের ব্যক্তিগত এমন ফরমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল মতিন মাখন ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তামান্না বেগম অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইতোমধ্যে ফরম পুরণের নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ায় পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা আরো বেড়ে যায়। নিরুপায় হয়ে তারা বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের অবহিত করেন। সাংবাদিকরা ৫ মে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমির কান্তি দেবকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান। শিক্ষা কর্মকর্তা প্রথমে শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। এরপর এবিষয়ে তিনি নীতিমালার কথা তুলে ধরে চাপ দিলে এক পর্যায়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ফরম পুরণে করতে রাজি হয়।
কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ফরম পুরণের বিষয়টি পরীক্ষার্থীদের জানাননি। কলেজের নোটিশ বোর্ডে কোনো নোটিশও ঝুলানো হয়নি। এতে অভিভাবক-পরীক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েন। আদৌ কী পরীক্ষার্থীরা ফরম পুরণ বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে?
এবিষয়ে জানার জন্য ৭ মে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে মুঠোফোনে কল দেন দৈনিক সকালের সময় ও দৈনিক জাগ্রত সিলেট পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ্য জাকির হোসেন। কিন্তু অধ্যক্ষ সদোত্তর দেননি। তিনি বলেন, আমাদেরকে কি তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জানাতে হবে। তারা নিজ থেকে খোঁজ নেয় না কেনো। আর এ বিষয়ে জানার আপনি ই বা কে। পরক্ষণেই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল মতিন মাখন সাংবাদিক জাকির হোসেনের মোবাইলে কল দেন। জাকির হোসেন কেনো অধ্যক্ষকে কল দিলেন এবিষয়ে তিনি কৈফিয়ত চান। তিনি জাকির হোসেনকে তুই-তুকারি করে অশ্লীল, অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন।
জাকির হোসেনকে তিনি বলেন, ‘আমার বাপের টাকায় কলেজ বানিয়েছি, কলেজ চলবে আমার কথায় আমার আইনে, এসব বিষয়ে জানার তুই কে’। তিনি দম্ভ করে এ-ও বলেন, ‘তুই কত বড় সাংবাদিক হয়েছিস, দেখি তুই আমাদের বিরুদ্ধে কী করতে পারিস আর কী লিখতে পারিস’ বলে হুমকি দেন।
জাকির হোসেন তাকে চাচা সম্বোধন করে শান্ত হয়ে কথা বলার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তিনি বারবার গালি, ধমক ও হুমকি দিয়ে কথা বলেন। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা জানার পর উপজেলা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের এমন ঘৃণ্য ভাষা ব্যবহার ও হুমকির প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। এবিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রতিবাদি কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
সাংবাদিক জাকির হোসেন বলেন, এত জগন্য আচরনের একজন মানুষ তিনি আবার শিক্ষানুরাগী! আমাকে এভাবে নোংরা ভাষায় গালাগাল করবেন আমি ভাবতেই পারিনি। এসব মানুষদের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হচ্ছে, সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি হচ্ছে।
সাংবাদিককে গালাগালের বিষয়ে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমীর হোসেন নুরুকে জ্ঞাত করা হলে তিনি গোয়ার্তুমি স্বরে বলেন, ‘সাংবাদিক আমাকে ফোন না দিয়ে অধ্যক্ষকে কেনো ফোন দেবে’। আর কোনো কথা না বলে একটি মিটিংয়ে থাকার অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল মতিন মাখন অলিখিত ফরমান জারি করে ফরম পুরণে ৫ হাজার থেকে আরো অধিক টাকা আদায় করছেন। গত বছরের অকৃতকার্যদের কাছ থেকে এবার ফরম পুরণের নামে কৌশলে আর্থিক বাণিজ্য করার হীন উদ্দেশ্যে চরিতার্থে পরিকল্পনা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে কথা বললে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং তার মানোনিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমাদের সাথে অশালীন আচরণ ও গালমন্দ করেন। আমাদের পক্ষে বা ন্যায় পক্ষে কথা বলায় ও তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাওয়ায় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাংবাদিককেও গালাগাল করেছেন।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল মতিন মাখনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমির কান্তি দেব বলেন, ‘সার্বিক বিষয়ে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল মতিন মাখন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কে ইউএনও স্যারের অফিসে আসতে বলা হয়েছে’।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd