সিলেট ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকরের লামাপাড়া এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধে হামলার শিকার হয়ে মো. সিদ্দেক আলী এক মাসের বেশি সময়েও সুস্থ হতে পারেননি। সন্ত্রাসী হামলায় তার হাতপায়ের অন্তত ১০টি স্থানে হাঁড় ভেঙ্গে গেছে। এদিকে, তার ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছে পরিবার। হামলাকারীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এখন মামলা তুলে নেওয়া ও জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে।
রবিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সিদ্দেক আলীর মেয়ে মোছা, তামান্না আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। তাকে প্রাণেই মেরে ফেলতে চেয়েছিল আমাদের গ্রামের একটি প্রভাবশালী ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী চক্র। তিনি হাসপাতালে থাকায় সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারেননি।’
তামান্না অভিযোগ করেন, ‘গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে শহিদ আহমদ (২৫) ও আলী আহমদ (২১), তাদের সহযোগী গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে লোকেছ মিয়া (২৬), তৃতা মিয়ার ছেলে নাছির উদ্দিন (৩০) এবং আবদুল লতিবের ছেলে ছবির মিয়া (৩৫) মিলে একটি প্রভাবশালী কুচক্র গড়ে তুলেছেন। তারা গ্রামের নিরীহ মানুষদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।’
এদের সঙ্গে পরিবারের জায়গা-জমি নিয়ে তাদের বিরোধ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেন আমার বাবা। তাই তারা আমার বাবার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে আমার বাবা বাড়ির পার্শ্ববর্তী বোরো ফসলের জমিতে পানি সেচ দিয়ে ‘এফডিএফ ব্রিক ফিল্ড’র সামন দিয়ে বাড়ি আসার পথে সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেধড়ক মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। দুই হাত ও দুই পায়ে আঘাত করে পঙ্গু করার চেষ্টা করে। ফলে আমার বাবার দুই হাত ও দুই পায়ের অন্তত ১০ স্থানে হাড় ভেঙ্গে গেছে।’
তামান্না বলেন, ‘ব্রিক ফিল্ডের মানুষজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত গিয়ে বাবাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।’
এ ঘটনায় ৩ জানুয়ারি গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করলে বিবাদীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন বলে জানান সিদ্দেক আলীর মেয়ে তামান্না। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও জান-মালের ক্ষতি করার হুমকি দিচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি আমরা।’
তামান্না আক্তার বলেন, ‘বিবাদীদের কয়েকজন দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসী। তারা স্বর্ণ চোরাচালন চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে তারা অল্প দিনেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন এবং গ্রামের নিরীহ মানুষজনকে হয়রানি করা বাড়িয়ে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, সম্প্রতি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণের একটি বড় চালান ধরা পড়েছে। ওই চালানের সঙ্গেও নাকি তারা জড়িত ছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
তামান্না বলেন, ‘এই স্বর্ণের চালান আটকের পেছনে নাকি আমার বাবার হাত রয়েছে। কিন্তু বিষয়টি আদৌ সত্য নয়। আমার বাবা একজন সহজ-সরল গ্রাম্য মানুষ। আমরা আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে আদালতেও একটি মামলা করেছি। কিন্তু আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আবারও আক্রমণের আশঙ্কা করছি। এই অবস্থায় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের আশু সুদৃষ্টি ও পদক্ষেপ কামনা করছি।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd