পাঁচ বছরে দ্বিগুণের বেশি সম্পদ বেড়েছে মন্ত্রী ইমরান আহমদের স্ত্রীর

প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩

পাঁচ বছরে দ্বিগুণের বেশি সম্পদ বেড়েছে মন্ত্রী ইমরান আহমদের স্ত্রীর

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: সিলেট-৪ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ইমরান আহমদ গত নির্বাচনে জিতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এ পাঁচ বছর মন্ত্রী থাকাকালে ইমরান আহমদের স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এই সময়ে সম্পদ বেড়েছে ইমরান আহমদেরও।

ইমরানের স্ত্রী অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বেগম বদরুন্নেসা ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন।

২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায় নিজের ও স্ত্রীর সম্পদের বিবরণ দেন ইমরান আহমদ।

সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা রয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬০ টাকা।

আর এবারের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায় ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে তিন কোটি ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৯ টাকা রয়েছে। এই পাঁচ বছরে স্ত্রীর ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় দুই কোটি।

সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রাসেল হাসানের কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

ইমরান আহমদের দেয়া আগের হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৮ সালে ইমরানের স্ত্রীর ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা মূল্যের একটি সুজুকি গাড়ি ছিল। এবার সেই গাড়ির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি হার্ড জিপ। পাঁচ বছর আগে ড. নাসরিন আহমাদের কোনো কৃষিজমি ছিল না। এবারের হলফনামায় তার ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৬০ টাকা মূল্যের ১০৫ শতক কৃষিজমির উল্লেখ আছে।

এ ছাড়াও বর্তমান হলফনামায় ড. নাসরিনের ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণ, পাঁচ কাঠা অকৃষি জমি, ছয় তলা ভবনের ২৫ শতাংশ মালিকানার বিষয় উল্লেখ আছে, যা পাঁচ বছর আগেও ছিল।

এ পাঁচ বছরে সম্পদ কিছুটা বেড়েছে ইমরান আহমদেরও। ২০১৮ সালের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার নামে ব্যাংকে জমা ছিল এক কোটি ৫৭ হাজার টাকা। এখন আছে এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মন্ত্রী থাকাকালে তার বাৎসরিক আয় বেড়েছে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৮ টাকা, তবে পাঁচ বছরে তার স্থাবর সম্পত্তি অপরিবর্তিতই আছে।

এবার হলফনামায় ইমরান আহমদ ব্যবসা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ছয় লাখ ৬৩ হাজার ৩৮০ টাকা। শেয়ার-সঞ্চয়পত্রে আমানত তিন লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা, চাকরি থেকে আয় ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ১৯৬ টাকা, ব্যাংক সুদ থেকে প্রাপ্ত এক লাখ ৬১ হাজার ৪৭৫ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে ৩১ লাখ ৫৫ হাজার ১৯ টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ এক কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৭ টাকা, ৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ আছে।

বর্তমান হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ইমরানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া কৃষিজমি চার দশমিক ৪৭ একর এবং চার দশমিক পাঁচ একর অকৃষিজমি। চা ও রাবার বাগান এবং মৎস্য খামার রয়েছে ইমরানের।

এ বিষয়ে সোমবার ইমরান আহমদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক তথা সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ইমরান আহমদ হলফনামার সঙ্গে আয়ের যে কাগজপত্র দিয়েছেন, তা নির্বাচন কমিশনের উচিত ভালো করে যাচাই-বাছাই করে দেখা। আয়ের কোনো অসঙ্গতি আছে কি না, তা খোঁজ নেয়া প্রয়োজন, তবে বৈধ আয়ের মাধ্যমে কারও সম্পত্তি বাড়লে তাতে আপত্তির কিছু নেই।’

সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘সব প্রার্থীই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা জমা দিয়েছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, তবে কারও ব্যাপারে কোনো আপত্তি আসলে, তা আবার যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।’

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2023
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..