সিলেট ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
ওসমানীনগর সংবাদদাতা: সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলায় ১৭ বছরের তরুনীর সন্তান প্রসবকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। বিয়ের আগেই ধর্ষণ কান্ডে সন্তান প্রসবের পর পিতার স্বীকৃতি পেতে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে দেড় মাসের শিশুসন্তান নিয়ে ১৫ ঘন্টা অনশন করেও কোন সুরাহা হয়নি।
পুলিশ আবারও মেয়ের বাবার বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছে তাকে। আলোচিত এই ঘটনায় মামলা দায়ের করলেও ৪ মাসে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়- গত ২৩ জুলাই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ধর্ষণ হওয়া কিশোরী। গত বৃহস্পতিবার স্ত্রী ও সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে ধর্ষকের বাড়িতে উঠেন কিশোরী। সকাল ৯ টা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত ওই বাড়িতে অবস্থান নিলেও ঘরের কেউ দরজা না খোলায় আকুতি মিনতে করেও স্ত্রীর মর্যাদা না পেলে আত্মহত্যার হুমকিও দেন কিশোরী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অভিযুক্তের পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলতে না পেরে তরুনীর সাথে আলোচনা করে গভির রাতে শিশু সন্তানসহ তাকে বাবার বাড়িতে পৌছে দেয় পুলিশ।
আজ শনিবার সকালে সরজমিনে কিশোরীর বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে শিশু সন্তান নিয়ে একটি ঘরে বসে আছেন কিশোরী। বর্তমানে শিশু সন্তানসহ বাবার বাড়িতে থাকলেও সজু গ্রেফতার না হওয়া, প্রভাবশালীদের চাপ ও সামাজিক ভাবে হ্যায় প্রতিপন্ন হওয়ার কথা জানিয়ে ভুক্তভোগী তরুনী বলেন, আমি আমার ছেলের পিতৃ পরিচয় চাই।
মামলা সূত্রে জানা গেছে- গত বছরের ২০ অক্টোবরে ভোরে কিশোরী পূজার ফুল তুলতে গিয়ে নিজ বুরুঙ্গা গ্রামের রাখাল দেবের ছেলে সজু কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়।পরবর্তীতে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে একাধিকবার ধর্ষণ করে সজু। একপর্যায়ে কিশোরী শারিরীক পরিবর্তন হয়ে বিষয়টি জানাজানি হয়। সজুর পক্ষ হয়ে ইউপি সদস্য দীপংকর দেব নগদ ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কথিত ডাক্তার বাসু দেবের মাধ্যমে অনাগত সন্তানের গর্ভপাত ঘটিয়ে বিষয়টি মিমাংসার জন্য চাঁপ প্রয়োগ করেন।
এই বিষয়ে পঞ্চায়েতের লোকজন শালিশে বসলে নির্ধারতি দিনে ইউপি সদস্যসহ সজুর পরিবারের কেউ উপস্থিত হননি। পরে ২মে থানায় সজুকে আসামী করে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করেন কিশোরীর পিতা। চার দিন পর রাতে মামলার বাদিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কথিত ডাক্তার বাসু দাশের চেম্বারে আটকে রাখা হয়।
বাসু দাশসহ অভিযুক্ত সজুর ভাই রঞ্জু দেব, দিপংকর দেব ৫ লক্ষ টাকা গ্রহনের মাধ্যমে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও কিশোরীর গর্ভপাত করাতে চাপ সৃষ্টি করেন। এই ঘটনা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশের পরামর্শক্রমে তিনদিন পর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন মামলার বাদি ও নির্যাতিতার পিতা।
অন্যদিকে, ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবিতে ১৯ জুন ওসমানীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে ছিলেন নির্যাতিতার পরিবার।
মামলার বাদি কিশোরীর পিতা জানান- ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে গর্ভপাত করাতে নানা কৌশল অবলম্বন করে ব্যর্থ হয় সজু। পরে মামলা দায়ের করলেও পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করছে না। আমার মেয়ে অভিযুক্তের বাড়িতে অনশনে গেলে পুলিশ তাকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে গেছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মাসুদুল আমিন বলেন- শিশুসহ মেয়েটি বর্তমানে তার বাবার বাড়িতে রয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd