একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে দিশেহারা কোম্পানীগঞ্জের ৬ সদস্যের পরিবার

প্রকাশিত: ১০:৫৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৩

একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে দিশেহারা কোম্পানীগঞ্জের ৬ সদস্যের পরিবার

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়কে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় মাইক্রোবাসের থাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. কালন মিয়াসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে পরিবারগুলোতে। ঘরের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এখন দিশেহারা কালন মিয়ার পরিবার।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. কালন মিয়ার মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে পরিবারে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষন ব্যক্তি কালন মিয়াকে হারিয়ে দিশাহারা বৃদ্ধা মা-বাবা এবং স্ত্রী ও দুই শিশু। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

কালন মিয়া গত দুই বছর ধরে কোম্পানীগঞ্জের টুকেরবাজার সিএনজি স্ট্যান্ডে ভাড়ায় চালিত গত অটোরিকশা চালিয়ে আয় করা টাকা দিয়ে ৭ সদস্যের সংসার চালাতেন।

কালনের ৫ বছর বয়সী ছেলে আবু বক্কর ইসলামপুর হাফিজিয়া মাদরাসার শিশু শ্রেণিতে লেখাপড়া করে এবং সাড়ে ৩ বছর বয়সী জুনাইন এখনও বিদ্যলয়ে ভর্তি হয়নি। মো, কালনের স্ত্রী সামছুন্নাহার বেগম (২৮), পিতা শাহ জাহান মিয়া (৬৫), মাতা তাহেরা বেগম (৫৮) ছাড়াও তানদ্রা আক্তার নামে ১৪ বয়সী একটি ছোট বোন রয়েছে।

কালনের বাবা ৬৫ বছর বয়সী শাহ জাহান মিয়া বয়সের ভারে কোনো কাজ করতে পারেন না বলে কলনের আয়ের ওপর ভরসা করে চলত এ সংসার।

কালনের মৃত্যুর পর থেকে এলাকার মানুষজন ভিড় করছেন তার বাড়িতে। তাদের সবার দাবি, শিশু দুটির ভবিষ্যৎ বিবেচনায় সরকারি সহযোগিতা।

গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় সরেজমিনে নিহত কালনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কালদের স্ত্রী সামছুন্নাহার বেগম (২৮) কন্নাকাটি করছেন। জানীয় মানুষ তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার গগনবিদারী কর আকাশ জানাচ্ছি। বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। আবেগ আপ্লুত হয়ে তিনি এ প্রতিবেদকে জানান, সুখ-দুঃখ নিলে আমাদের সংসার চলছিল ভালোই। একটি দুর্ঘটনায় আমার সোনার সংসার শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশাহারা হয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমার এই সংসার কীভাবে চলবে। দুটি সন্তানের ভরণপোষণ ও লেখাপড়া করার কেউ নাই। আল্লাহর রহমত ও মানুষের সহযোগিতা ছাড়া আমার আর কিছু রইল না।

কালনের পিতা শাহ জাহান নিয়া বলেন, ‘বয়সের ভারে আমি গত কয়েক বছর ধরে কাম-কাজ করতে পারি না। ছেলের অন্ন আয় ও স্বজনদের সহযোগিতা নিয়ে কোনোরকম আমাদের সংসা চলছে। এখন আমার ছেলে নাই আমাদের দেখবে কে? তার দুইটা শিশু সন্তান ও বউয়ের ভবিষ্যতের কী হবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমার কোনো সম্পত্তিও নাই যে তা বিক্রি করে ছোট ছোট বাচ্চাদের ভবিষৎ গড়ব।

প্রতিবেশী যুবক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অটোরিকশা চালিয়ে কালনের অল্প আয়ে চলত তাদের সংসার। তার মৃত্যুতে এই পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদেরকে সামাজিক ও সরকারিভাবে সহযোগিতা করার জোর দাবি।

কোম্পানীগঞ্জ প্রকল্প কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কান্তি বলেন, ‘সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের গোয়াইনঘাট উপজেলার মুদ্রারও এলাকায় দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনের বাড়ি আমাদের উপজেলায়। তাদের পারিবারিক অবস্তা নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আশা করি সরকারিভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।’

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..