সিলেট ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: সিলেটে জুয়ারি সিন্ডিকেটে চক্রের দাপটে অসহায় প্রশাসন, দেদারছে চলছে জুয়ার রমরমা ব্যবসা, প্রতিদিন লোটে-পুটে খাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। হতাশ নগরবাসী। বিগত কয়েক বছর যাবৎ একটি অপরাধী চক্র সিন্ডিকেট করে মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন মার্কেট, ব্যস্ততম রাস্তা, দোকানপাট, অলি-গলিতে ও সরকারি ভূমিতে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে জুয়ার বাজার তৈরি করে নগরীকে কলুষিত করেছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালি ব্যক্তি এবং সচেতন সিলেটবাসী মূখে কুলুফএটে এসব অপরাধী চক্রের অপরাধ দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করে এইসব অপরাধীদেরকেই সমর্তন করছেন। মনে হয় সবাই সুবিধা পেয়ে চুপসে আছেন। জুয়ারী মানিক, শরিফ, জাকির, রাসেল, বাদশা, আইয়ুব, আাকাশ সিন্ডিকেট করে বেতের বাজার, কাজির বাজার, মদিনা মার্কেট, মকন দোকান এবং কীন ব্রিজের নিচ সহ ৪টি জুয়ার বোর্ড চালানোর তথ্য উঠে এসেছে তালাশের অনুসন্ধানে।
প্রশাসনের গুটিকয়েক অসাধু কর্মকর্তাদের কারনে জুয়ারী দের দাপটে সমস্ত প্রশাসন যেন অসহায়। বার বার অভিযান চালিয়েও জুয়ারী চক্রের মুল হোতাদের আটক করতে পারছেনা, ফলে অভিযান শেষ হওয়ার আধাঘণ্টা পর আবার শুরু হয় রমরমা জুয়ার ব্যবসা, এ যেন চুর-পুলিশ খেলা। তাই দিন দিন জুয়ারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
জুয়ারী চক্র প্রকাশ্যে দিবালোকে এইসব স্পটে দুপুর ২.০০ঘটিকা থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত শীলং তীর, তিনতাস, জান্ডু-মুন্ডু, নামক বোর্ড বসিয়ে রমরমা জুয়ার ব্যবসা চালানোর কারণে জোয়ায় আসক্ত নিম্ন আয়ের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উৎসাহিত হচ্ছে। এসব কারণে একদিকে যেমন বাড়ছে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অন্যদিকে বাড়ছে,পারিবারিক বিবাদ-কলহ, চুরি-ছিনতাই সহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড।
নগরীতে সরজমিন ঘুরে সাধারণ মানুষ ও বোর্ড মালিকদের সাথে কথা বলে জানাযায় প্রশাসন, মিডিয়া কর্মী, শ্রমিক নেতা, রাজনৈতিক নেতা এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা চালায় অপরাধী জুয়ারী চক্র। তারা আরোও বলে সহযোগীতা না পেলে কিভাবে অবৈধ জুয়ার ব্যবসা চালাবো। আমাদের বিরুদ্ধে লিখে পেঠে লাতি দিবেননা, হয়তো এখন বন্ধ করবেন পরে ঠিকই চালাবো, আমাদের হাত কতো লম্বা তা আপনারা জানেননা। পত্রিকায় লিখে আমাদের কিছু করতে পারবেন না।
এ ব্যপারে সাধারণ জুয়ারিরা বলেন সারাদিন যে টাকা ইনকাম করি সেই টাকা দিয়া সংসার চলেনা। তাই বাড়তি আয়ের জন্য খেলতে আসি। একবার পাইছি কিন্তু সবসময় দান পাইনা। আবারও পাওয়ার আশায় প্রতিদিন খেলি। সে আরো বলে মানিক ও তাহের সবার বোর্ডেই জুয়া খেলেছি, খেলতে গিয়ে অনেক সময় খালি হাতে বাসায় যাই তখন বাসায় ঝগড়া বিবাদ হয়। অনেক টাকা নষ্ট করেছি ভাই, সেই টাকা তুলতে গিয়ে খাদের কিনারে চলে এসেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন বেকার ভালোলাগেনা তাই খেলতে আসি। আসলে হাজার ৫শত টাকা খেলি। পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে হতাশার সুরে বলেন ৫ হাজার টাকা নষ্ট হলেও এখনো দান পাইনি। তিনি আরও বলেন সব প্রতারণা একশ জনের একজন পায় বাকী ৯৯ জন পায়না, সব পায় বোর্ড মালিক।
ভোক্তভোগীরা তালাশকে বলেন রক্ষক যখন ভক্ষক হয় তখন কিছু করার থাকেনা। খোদ প্রশাসনই জুয়া বন্ধ করতে পারছেনা। গরীব মানুষগুলো ফকির হয়ে যাচ্ছে আর জুয়ার বোর্ড মালিকরা প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এসব জুয়ায় নগরীর টুকাই, ভিক্ষুক, নিন্ম এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ঠেলাচালক,ভ্যান চালক, রিক্সাচালক, সিএনজি চালক,বাস চালক, মাইক্রবাস চালক,ট্টাক চালক, পিকআপ চালক,হেলপার, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, বেকার যুবক, বিভিন্ন কলোনির বিধবা মহিলা, কাজের ভুয়া এবং তাদের সন্তানেরা রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভে এসব জুয়ার আসরে সারাদিনের ইনকাম বিনিয়োগ করে দিনশেষে প্রতারিত হয়ে খালি হাতে বাসায় ফেরে। ফলে একদিকে যেমন বাসায় অশান্তি, কলহ সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে পরিবারের আহার জোগাতে চুরি ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ে এসব জুয়ারীরা। তাই সিলেট মহানগরীতে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এ ব্যপারে এসএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমাকে সঠিক তথ্যদেন, জুয়ারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd