সিলেটে গৃহকর্মী জান্নাত নির্যাতন : পলাতক নার্স শাহনাজকে খুঁজছে পুলিশ

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২৩

সিলেটে গৃহকর্মী জান্নাত নির্যাতন : পলাতক নার্স শাহনাজকে খুঁজছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: গৃহকর্মী এক কিশোরীকে বিভিন্ন অপবাদ-অজুহাতে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার (৩৭) বিরুদ্ধে। গৃহকর্মী জান্নাত (১৩) বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী জান্নাতের বাবা গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকার মো. জাকির হোসেন খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সোমবার (৩ জুলাই) রাতে মামলা দায়ের করেছেন। (যার মামলা নং-০৫, তারিখ- ০৩-০৭-২০২৩ইং)।

এদিকে ঘটনার শুরু থেকে এই পরিবারের পাশে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন আইনি সহায়তা প্রদান করে আসছে।

মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, জান্নাতের বাবা মো. জাকির হোসেন খানের বাড়ি ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার বাবার বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকার চৈলাখেল গ্রামে। সেই সুবাদে জাকিরের মেয়ে জান্নাতকে শাহনাজ তার বাসায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে মাসিক ১৫০০ টাকা বেতনে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজে নেন।

কিন্তু ওই বাসায় যাওয়ার পর থেকেই জান্নাতের উপর নেমে আসে বর্বর নির্যাতন। ভাত বেশি খাওয়াসহ বিভিন্ন অপবাদ-অজুহাতে জান্নাতকে শাহনাজ ও তার স্বামী পলাশ মিয়া (৩৮) এবং বোন রেহেনা আক্তার রুমি (২৪) প্রায় প্রতিদিনিই বেধড়ক মারধর করেন। এমনকি রান্নার কাজে ব্যবহৃত স্টিলের খুন্তি আগুনে গরম করে জান্নাতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দিয়েও নির্যাতন করতেন তারা। কিন্তু এসব বিষয় পরিবারকে জানালে জান্নাতকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন শাহনাজরা। তাই এতদিন জান্নাত মুখ খোলেনি।

নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ দেড় বছরে একবারও জান্নাতকে বাবার বাড়ি যেতে দেননি শাহনাজ। এবার ঈদুল আজহায় শাহনাজ তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। সঙ্গে যায় জান্নাত। সে সেখানে গিয়ে এক ফাঁকে বাবার বাড়ি গেলে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পরিবারের লোকজনের চোখে পড়ে। এসময় তারা জিজ্ঞাসাবাদ করলে জান্নাত তার ওপর চলা নির্যাতনের কথা খুলে বলে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার মোবাইল ফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগের সভাপতি রকিব আল মাহমুদ বলেন, প্রথমেই আমি এই জঘন্যতম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবি করছি। সংস্থার পক্ষ হতে এই অসহায় জাকির মিয়ার পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদান সহ প্রয়োজনে যে কোন ধরনের সহযোগিতা করা হবে । শুরু থেকে এই পরিবারটির পাশে আমরা আছি এবং শেষ পর্যন্ত থাকবো ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) মহাসচিব ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তা মো. ইসরাইল আলী সাদেক বলেন, শাহনাজের বাসায় কী ঘটনা ঘটেছে তা আমরা জানি না। তবে সোমবার থেকে তিনি হাসপাতালে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান- এ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্তদের খুঁজছে পুলিশ। তারা পলাতক রয়েছেন। জরিতদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আশাকরি শিঘ্রই তাদের ধরা যাবে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..