সিলেট ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
ক্রাইম প্রতিবেদক: এসএমপি পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ, উত্তরের ডিসি আজবাহার আলী শেখ, দক্ষিণের ডিসি সোহেল রেজা। সাংবাদিকদের কাছ থেকে এসএমপি এলাকার পতিতালয় ও জুয়ার বোর্ডের খবর পান। অধিনস্থ ওসিদের অভিযান বা বন্ধের জন্য নির্দেশনাও দেন। ওসি বিষয় গুলো তাদের অধিনস্থ বা থানা এলাকার পুলিশ ফাঁড়িকে অবগত করে অভিযানের নির্দেশ দেন। আইসি পর্যন্ত ওসির নির্দেশনার ক্ষমতা পর অভিযানে নামের আগেই অপরাধীধের কাছে খবর বলে দেয় আইসিদের নিজস্ব পাশে থাকা মানুষগুলো। তখন এসব অপরাধী আর অপরাধ স্পটের রক্ষাকর্তা হয়ে যায় তারা। তাই এসএমপি এলাকার নানামুখি অপরাধ ধমনে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। কয়েক দিনের দীর্ঘ অনুসন্ধানে এসএমপি এলাকার নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকান্ডের স্পট ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু দক্ষিণ জোনে নয়, এসএমপির উত্তর জোনের কালীঘাটে কিছুতেই থামছে না ইন্টারনেট ভিত্তিক ভারতীয় শিলং তীর, তিনতাস, ঝান্ডুমন্ডু নাক জুয়া খেলা। ডিসিরা নির্দেশ দিলেও থানা বা ফাঁড়ি পুলিশ, ডিবি এসব স্পটে কখনো অভিযান চালায় না। কারণ তাদের সাথে জুয়াড়ীদের রয়েছে মাসিক-সাপ্তাহিক চুক্তি। পাশাপাশি এসএমপি ডিবির কতিত সদস্যরারা নাকি এসব আসর থেকে নিয়মিত মাসিক-সাপ্তাহিক বখরা নিয়ে থাকেন। এ তালিকায় রয়েছে কিছু কতিত সাংবাদিকও।
সূত্রমতে দিনে রাতে মোট ৪ বার তীর খেলার টোকন বিক্রি হয়। একই স্পটে রাত হলেই তীরের পাশাপাশি বসে, তিনতাস,কাটাকাটি, ঝান্ডু-মান্ডু নামের জুয়ার আসর। তবে প্রশাসনের সাথে এসব জুয়াড়ীদের সখ্যতা দেখে স্থানীয়রা বাকরুদ্ধ প্রতিবাদ করার সাহস হারিয়ে ফেলছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, নগরীর কালিঘাটের বস্তাপট্টি নামক মার্কেটের দ্বিতীয় তলার ছাদে প্রতিদিন বসে উত্তর সুরমার সব চেয়ে বড় জুয়ার আসর। সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে ছাদের এক পাশে রাখা পলিথিন ও পাটের বস্তার বান্ডিল। আরেক পাশে দুটি চেয়ারে বসেন বড় জামাল ও ছোট জামাল। টেবিলে আছে কাগজের কিছু টুকরো। জুয়া খেলতে সারি বেঁধে আসছেন নানা পেশার শ্রমজীবি মানুষজন। প্রথমে দেখে মনে হবে কোনো যানবাহনের অথবা চিকিৎসকের টিকিট বিক্রির কাউন্টার। কিন্তু আসলে এই টোকেন হচ্ছে শিলং তীর নামে জুয়া খেলার। দিনে এক রকম চিত্র হলেও একই জায়গার চিত্র পালটে যায় সন্ধ্যার পর। সেখানে বসে ঝান্ডু-মান্ডু, তিনতাস, কাটাকাটি নামের জুয়ার আসর। মার্কেটের ছাদে বস্তা রাখা হয় বলে মার্কেটটি সবার কাছে ‘বস্তা মার্কেট’ নামে পরিচিত। হলেও এখন তীর মার্কেট হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। মূলত এই আসরটি পরিচালিত হয় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ব্যানারে। শরিফ নামের জনৈক ব্যক্তি নাকি এই জুয়ার বোর্ডে শেল্টারদাতা। যদিও সেখানে গিয়ে শরিফকে পাওয়া যায়নি। তবে শরিফের নামে পাওয়া গেছে বিস্তর অভিযোগ। তাকে নিয়ে চলছে অনুসন্ধান।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কালীঘাটের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বোর্ডের মালিক শরিফ হলে মুলতো এই জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করেন বড় জামাল ও ছোট জামাল নামেই দুই ব্যক্তি। দিনে তীর শিলং ও রাতে ঝান্ডু-মান্ডু জুয়ার আসর বসে সেখানে। জামালদের সহযোগী হিসাবে কাজ করে মাছুম, ছেন্টু ও মঞ্জু। তবে জামালই প্রশাসন ম্যানেজ করে মাসিক-সাপ্তাহিক বখরা দিয়ে। যদিও সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কিছু দিন আগে এদের উচ্ছেদ করতে অভিযানে নামেন। এরপর পর থেকে জুয়াড়ীরা আরো ব্যাপরোয়া হয়ে উঠে।
কালিঘাট গিয়ে জানা যায়া, কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা জামাল, নাসিম, শিপু কুমিল্লার নজরুলকে। এরা এক সময়ে ভবে ঘুরে বা দোকানের কর্মচারী হলে এখন কোটি টাকার মালিক একেকজন। এছাড়া নগরীর কাষ্টঘর সবজি মার্কেট ও সোবহানীঘাট ফাঁড়ির পাশেই রয়েছে শিপুর দুটি জুয়ার বোর্ড এ দুটি স্পটের প্রশাসনিক দেখাশোনা করেন সেলিম নামের একজন। কিন্তু সুবহানীঘাট পুলিশ ফাড়ির ৫০ গজের ভিতরে শিপুর বিশাল দুটি জুয়ার বোর্ড যে গুলো এক সময় নিয়ন্ত্রণ করতো মৌলভীবাজারের রানা। তবে এ দুটি জুয়ার আসরের খবর জানেন না ফাঁড়ির আইসি।
তবে এসব জুয়ার আসর থেকে প্রতি সপ্তাহে পুলিশ ফাঁড়িগুলো এবং ডিবির নামে কত টাকা সাপ্তাহিক মাসিক বখরা তোলায় হয়, সে তালিকা প্রকাশের অপেক্ষায়। কারণ ইতিমধ্যে এসএমপি এলাকার উত্তর-দক্ষিণ জোনের ৫৭টি জুয়ার বোর্ডের তালিকা, মালিক, নিয়ন্ত্রণ, বখরার হিসাবে রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে। যা ক্রমেই প্রকাশ করা হবে এবং লিখিত ভাবে এসএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ করা হবে।
এদিকে, এসএমপির এক শীর্ষ কতর্মকর্তা জানান, গত কয়েক মাসে সিলেট এসএমপি এলাকায় অন্তত শতাধিক জুয়ার বোর্ডে অভিযান চালিয়েছে মহানগর পুলিশ। কোথায় ও জুয়ার খবর পেলে অভিযান চালায় পুলিশ।
ধারাবাহিক প্রতিবেদন-১
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd