সিলেট ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:০১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২২
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের জৈন্তাপুরে গৃহহীনদের বরাদ্দের ঘর নিয়ে অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। দেড় বছর আগে উপজেলায় মুজিব শতবর্ষের উপহারের ঘর ফেরত দেওয়ার পর এবার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গৃহহীনদের বরাদ্দ দেওয়া স্বপ্ননীড়ের এ ঘর ইস্তেফানামা (ত্যাগপত্র) মূলে বিক্রি করে দেন উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের মজুমদারপাড়ার আব্দুল মালেকের মেয়ে শিরিন আক্তার।
সম্প্রতি তিনি ১ লাখ টাকায় ওই ঘর বিক্রি করে একই এলাকার পানিরহাটার বাসিন্দা জেসমিন আক্তার ও তাঁর স্বামী তাজুল ইসলাম মনুর কাছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
ঘরটি বিক্রির পর তা আবার ফিরিয়ে দিয়ে টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছেন জেসমিন ও তাঁর স্বামী। এমনকি মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আরেক আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিক্রেতা শিরিনের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর বিক্রি ও প্রতারণার অভিযোগ করেন ওই নারী। ইউপি সদস্য মাসুক আহমদ ও আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ আহমদ ওই ইস্তেফানামায় সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন। একজন জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে কীভাবে সরকারি ঘর বিক্রির সঙ্গে জড়ালেন তা নিয়েও চলছে সমালোচনা।
স্বপ্ননীড়ের ঘরের কাগজপত্রে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ১৯ জুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জৈন্তাপুরের ১৮৯/২০২০-২১ আদেশে ২ শতক জায়গার মালিক শিরিন আক্তার। গোয়াবাড়ি মৌজার যার জেএল নং-৪০, বিএস খতিয়ান নং-১ ও নামজারি নং-৩০৬। একই দাগের ওই ভূমি অর্থাৎ সরকারি ঘর গত ৩০ সেপ্টেম্বর শিরিন আক্তার তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে ইস্তেফামূলে বিক্রি করে দেন। জৈন্তাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সনদধারী দলিল লেখক আমিনুল ইসলাম ওই ইস্তেফাদান সম্পাদনও করেন।
এক লাখ টাকার বিনিময়ে ঘর কিনে জেসমিন ও তাঁর স্বামী সেখানে কিছুদিন বসবাসও করেন। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে ঘরটি আবার শিরিনকে ফিরিয়ে দিয়ে টাকা ফেরত দাবি করেন তাঁরা। কিন্তু টাকা উদ্ধার না করতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সরকারি ঘর বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন জেসমিন। এতে তিনি বিক্রেতা শিরিন আক্তার ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হানিফ আহমদ ও নিজপাট ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মাসুক আহমদের বিরুদ্ধে ঘর ক্রয় করতে উৎসাহ প্রদানসহ নানা অভিযোগ করেন।
এর আগে একই উপজেলায় গত ২৪ জানুয়ারি ঠাকুরের মাটি এলাকার বশির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ভূমিহীন নয় দাবি করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপির হাতে বরাদ্দ পাওয়া ঘরের যাবতীয় কাগজপত্র ফেরত দেন। ওইদিন মন্ত্রী উপজেলার একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে তোলপাড় দেখা দেয়। এমনকি উপজেলায় ঘর বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগও ওঠে।
সরকারি ঘর বিক্রি বিষয়ে জৈন্তাপুরের ইউএনও আল বশিরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ এখনও আমার হাতে আসেনি। তবে বিষয়টি জানতে পেরে সরেজমিন লোক পাঠিয়েছি। সরকারি ঘর বিক্রির সত্যতা পাওয়া গেলে বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে।
ঘর ক্রয় প্রসঙ্গে জেসমিন আক্তার দাবি করেন, তিনি সরকারি ঘরের বিষয়টি জানতেন না। নিজের ঘর ও নিজে মাটি ভরাটের পর নির্মাণ করেছেন দাবি করে তা বিক্রি করেন বলে জানান শিরিন।
অভিযোগ বিষয়ে ইউপি সদস্য মাসুক আহমদ বলেন, শিরিন ও জেসমিন পরস্পর আত্মীয়। তাঁরা নিজেরা ঘর ক্রয়-বিক্রয় করেছেন। টাকা দেওয়ার সময় আমার সামনে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। সূত্র-সমকাল
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd