সিলেট ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২২
মোঃ সাইফুল ইসলাম::সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের সাহেবের বাজারে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে বিরোধপূর্ণ ভূমি দু’টি পক্ষ হতে দখলমুক্ত করে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানা।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ ও স্হানীয় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে দোকান কোঠায় তালা ঝুঁলিয়ে উভয়পক্ষ থেকে দখলমুক্ত করা হয়। জানা যায়, দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে সাহেবের বাজারের ঘোড়ামারা বাজারতল গ্রামের আকরাম উদ্দিন ও মৃত সোনাফর আলীর উত্তরসূরি আব্দুল নূর গংদের মধ্যে মৌরসি সত্ত্ব জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।মৃত সোনাফর আলী’র জৈষ্ঠ্যপুত্র আব্দুল নূর বার্তা বাজারকে জানান,আমার বাবা সহজ সরল একজন নিরিহ মানুষ ছিলেন।বাবা’র ৩৫ শতক ভূমি প্রভাবশালী আকরাম উদ্দিন অর্থ আর গায়ের জোরে তার নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা জবরদখল করে নেন।একই দাগের একাধিক বায়াগণ তাদের পরিমাণের অতিরিক্ত ভূমি অবৈধভাবে বিক্রি করার ফলে প্রকৃত মালিকানা থেকে বঞ্চিত হন আমার বাবা মৃত সোনাফর আলী।আমরা নিরীহ মানুষ। প্রভাবশালী আকরাম উদ্দিনের কাছে আমরা অসহায় বলেন আব্দুল নূর।এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইনের আশ্রয় চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টের সিভিল রিভিশন মামলা ৩৮২৯,তাং ২২ ইং,দায়ের করেন আব্দুল নূরগং। মহামান্য হাইকোর্টের এ রায়কে কার্যকর করার জন্য অতিরিক্ত জেলা হাকিম আদালতে এয়ারপোর্ট থানা বিবিধ মামলা নং ৪৫,২২ দায়ের করলে হাকিম মহোদয় এয়ারপোর্ট থানাকে বিবিধ মোতাবেক আদেশ প্রদান করার নির্দেশ দেন। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের আলোকে সাহেবের বাজারস্হ আব্দুল নূর গংয়ের জায়গা বিবাদী আকরাম উদ্দিন কর্তৃক জবরদখলকৃত দোকান কোঠা বন্ধ করে সাহেবের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির জিম্মায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে চাবি হস্তান্তর করেন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাহেবের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ আরব আলী বার্তা বাজারকে জানান,বিরোধপূর্ণ ভূমি’র দোকান কোঠার চাবিগুলো পুলিশ আমাদের জিম্মায় রেখে গেছেন।জায়গা আমাদের জিম্মায় রয়েছে।হাইকোর্টের নির্দেশ থাকায় উভয়পক্ষের মধ্যস্থ হিসেবে আমাদের কাছে এ দায়িত্ব দিয়েছেন থানার ওসি।বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলেন আরব আলী। স্হানীয় এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, সাতগাছি নামক গ্রামের হাওরে অন্য বিরোধপূর্ণ ভূমিতে দু’পক্ষের ধানকাটাকে কেন্দ্র করে আকরাম উদ্দিনের ভাই নিজাম উদ্দিন মারা যায়।এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আকরাম উদ্দিন। সেই মামলায় খাদিমনগর ইউনিয়নের চার বারের বয়োবৃদ্ধ সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম,সমাজকর্মী মোঃ নুরুল ইসলাম,৭নং ওয়ার্ডের সদস্য,জনপ্রতিনিধি মোঃ আনসার আলী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য,অ্যাডভোকেট খুরশেদ আলমসহ একাধিক নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যাভাবে আসামি করা হয়। এসকল নিরপরাধ মানুষকে মিথ্যাভাবে আসামি করায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন বৃহত্তর সাহেবের বাজার এলাকাবাসী। এদিকে হাওরের জমি নিয়ে ভাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত সোনাফর আলীর উত্তরসূরি নূরদেরকে আসামি করেন আকরাম উদ্দিন।মামলার ভয়ে নূরেরা পলাতক হয় এবং পরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় তারা জেলে চলে যায়।আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নূরদের দখলে থাকা সাহেবের বাজার সংলগ্ন ভূমি আকরাম উদ্দিন রাতারাতি জবরদখল করে তার নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে কাঁচাপাকা ঘর নির্মাণ করেন বলে দাবি করেন আব্দুল নূর।তিনি আরও জানান,আকরাম উদ্দিন একজন চিহ্নিত প্রভাবশালী ভূমিখেকো। শুধু আমাদের জমি নয়,অপরের জমি অবৈধভাবে দখলের পাশাপাশি সাহেবের বাজার মাদরাসা এবং বাজারের রাস্তা বিভিন্ন সময়ে জবরদখল করতে অপচেষ্টা করছেন আকরাম উদ্দিন।এলাকাবাসীকে আপনারা জিজ্ঞেস করলে তার সত্যতা পেয়ে যাবেন বলেন প্রতিবেদককে।
স্হানীয় সূত্র জানায়,বাজার ও মাদরাসার রাস্তা গায়ের জোরে একসময় নিজের রাস্তা বলে দাবী করে অপদখলে নামেন আকরাম উদ্দিন, সে সময় এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন।তখন এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শবনম শারমিন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে সরেজমিন চিত্র দেখে রাস্তাকে রাস্তা বলেই স্বীকৃতি দিয়ে যান।এসময় শবনম শারমিন রাস্তা ছেড়ে ৪ফুট দূরে গিয়ে আকরাম উদ্দিনকে ঘর নির্মাণ করতে মৌখিক নির্দেশনা দেন।তবু এতে পরোয়া করেননি আকরাম উদ্দিন বলেন স্হানীয়রা।এছাড়া আকরাম উদ্দিনের নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনীসহ স্হানীয় বাসিন্দাদের নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আকরাম উদ্দিনের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বার্তা বাজারকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,রাস্তাটি আমার, এটি বাজার বা মাদরাসার রাস্তা নয়।রাস্তাটি আমার ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য বলে দাবি করেন তিনি। মৃত সোনাফর আলী’র ভূমি কৌশলে জবরদখল করে রাখার বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন রোল ইস্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,হাইকোর্ট থেকে কী এসেছে না এসেছে এটি আমি জানিনা,জায়গাটি আমার দখলে রয়েছে,আমি জোরপূর্বক কোনকিছু করিনি।আমার বিপক্ষের লোকজন এসেছিলো পুলিশ তাদের ভিডিও করে নিয়ে গেছে এবং পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির বার্তা বাজারকে বলেন,মহামান্য হাইকোর্টের নোটিশ আমরা উভয়পক্ষকে পাঠিয়েছি,উভয়পক্ষ নোটিশ গ্রহণ করেছে এবং তারাও বুঝেছে।আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই আমরা দেখছি। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।এ বিষয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ওসি বলেন,না,কোন মামলা মোকদ্দমা হয়নি।
স্হানীয় বাসিন্দারা জানান,এয়ারপোর্ট থানার ওসি খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির এর নিরপেক্ষ অবস্থানের কারণে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে,নতুবা অনাকাঙ্খিত অনেক বড় ধরনের ঘটনা সেদিন ঘটতে পারতো।তাৎক্ষণিকভাবে বৃহত্তর সাহেবের বাজার এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ণ রাখায়
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd