সিলেট ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
জৈন্তাপুর প্রতিনিধি :: জৈন্তাপুরের মুজিব নগরের এক বিধবা মহিলার সন্তান প্রসব। নবজাতক ছেলেটিকে গলাটিপে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনা জেনে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং অবৈধ গর্ভপাতের সাথে জড়িত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ফখরুল ইসলাম মেম্বারকে আটক করেছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুুলিশ এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার গোয়াবাড়ী গ্রামে গেল বছরে নির্মিত হলো গৃহহীন অসহায় পরিবারের জন্য মুজিব নগর গ্রাম। সেখানে ১২৮ নং ঘরে সরকারী বরাদ্ধ পায় কমলাবাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলীর মেয়ে শরুফা বেগম (৩৫)।
প্রায় ১০ বছর পূর্বে স্বামী মারা গেলে ৮বছর বয়সী এক ছেলেকে নিয়ে প্রথমে পিতা আশ্রয়ে কমলাবাড়ী গ্রামে ছিল এবং পরবর্তীতে মুজিব নগরের সরকারী ঘরে স্থায়ী বসাবাস শুরু হয়।
দরিদ্রতার সুযোগে এই মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে একই গ্রামের বাসিন্দা ১নং নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম (৫০)।
তার সাথে সহযোগী ছিল একই গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে সুহেল আহমদ (৩৩) ও লামনীগ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে ট্রাক ড্রাইভার জমির উদ্দিন। বিভিন্ন সময় তাদের শারীরিক সম্পর্কে শরুফা বেগম অন্তস্বত্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায় দীর্ঘ ৭মাস পর ৩০ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টায় নিজ ঘরে শরুফা বেগম এক ছেলে সন্তান প্রসব করে। এঘটনা জেনে অভিযুক্ত ফখরুল, সুহেল ও জমিরের পরামর্শে নবজাতক শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করে স্থানীয় সইদুরের বাড়ীর পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এসময় সইদুরের মা ঘটনা দেখে আশ-পাশের লোকজনকে বিষয়টি জানালে গ্রামবাসী জৈন্তাপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তদন্ত আব্দুর রবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা দেওয়া শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
এসময় শরুফা বেগমের জবানবন্দি অনুযায়ী এই ঘটনার সাথে জড়িত একই গ্রামের বাসিন্দা ১নং নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম (৫০) কে আটক করা হয় এবং আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভীকটিম মহিলাকেও থানায় নিয়ে আসা হয়। এদিকে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার সহ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি
হওয়াতে এই ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই ব্যাক্তি সুহেল ও জমির গা-ডাকা দেয়।
এব্যাপারে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমদ’র সাথে আলাপকালে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা যা আমাদের সমাজকে কূলসিত করছে। ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করি এবং মহিলার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রধান অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামকে গ্রেফতার করি। অপর
দুই ব্যাক্তিকে গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে এবং নবজাতক শিশুটিকে ডিএনএ টেষ্টের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এঘটনায় আটক ও পলাতক অভিযুক্তদের আসামী করে জৈন্তাপুর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন ৯/১ এবং শিশু হত্যা মামলার দায়ের করা হয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd