সিলেট ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২২
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নে যুুগির গাঁও গ্রামে তাসলিমা আক্তার (৪০) নামের এক গৃহবধূর নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নিখোঁজের ১৫ দিনেও ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা এই গৃহবধূকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। নিখোঁজের ঘটনায় স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি গ্রহণ করলেও মেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ বা জিডি না নেয়ার অভিযোগ পাওয়ায় গেছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের বিরুদ্ধে।
মেয়ের সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত করে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আমলগ্রহণকারী আদালত।
জানা যায়, ২০২০ সালে দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নে যুুগিরগাঁও গ্রামের মৃত তালেব আলীর ছেলে শামীম আহমদের সাথে শান্তিগঞ্জ উপজেলার মৃত আব্দুল হান্নানের মেয়ে তাসলিমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন এই দম্পত্তির সংসার ভালো চললেও এরপর থেকে নানা কারনে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়।
মেয়ের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়, বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সাংসারিক নানা কারনে তাদের মেয়ে তাসলিমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামী শামীম আহমদ। নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বিচার-শালিক হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন আগে ২ আগস্ট নির্যাতিত গৃহবধূ মুঠোফানে নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে কান্নাকাটি করেছেন। এভাবে প্রায়ই মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে নির্যাতনের বিষয়ে জানাতো বলে অভিযোগ করেন নিখোঁজ তাসলিমার মা রেসা বেগম।
এদিকে ৪ আগস্ট ভোর রাত স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে দোয়ারাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন স্বামী শামীম আহমদ।
অপরদিকে নিখোঁজের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, নিখোঁজের ঘটনায় থানায় গিয়ে জিডি বা অভিযোগ করতে চাইলেও রহস্যজনক কারনে বিষয়টি আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। অনেক চেষ্টার করেও অভিযোগ বা জিডি না দিতে পারায় আদালতে গিয়ে মেয়ের জামাই শামীম আহমদ ও তার মা করিমুন্নেছাকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেছেন নিখোঁজ গৃহবধূর মা রেসা বেগম। অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি দিতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন আমলগ্রহণকারী আদালত।
নিখোঁজ তাসলিমার মা গণমাধ্যমকে জানান, আমার মেয়েকে প্রায় সময়ই নির্যাতন করা হতো। সে নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন আগেও ফোন করে কান্নাকাটি করেছে। তাকে তার স্বামী অনেক মারপিট করেছে। আমার ধারণা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করে তার লাশ গুম করা হয়েছে। তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে। তবে এ ব্যাপারে স্বামীর পরিবারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেব দুলাল ধর বলেন, নিখোঁজের পর মেয়ের স্বামী থানায় একটি জিডি করেছেন। এই জিডি ধরেই প্রথম দিন থেকে আমার ঘটনাটির তদন্ত করছি। তবে এটি স্পষ্ট হয়েছি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। দুই পরিবার একাধিকবার তা সমাধান করেছেন। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা বিষটি গুরুত্বসহকারে দেখছি।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আমি দোয়ারাবাজার থানার ওসিকে বলেছি গৃহবধূর বিষয়টি যেন অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd