সিলেট ১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:২৪ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০২২
মোঃ কামরুল ইসলাম : সিলেটে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক ব্যক্তির নিকট ভূমি বিক্রি করেও পূনরায় আত্মসাতের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন সৈয়দ ফরিদ আহমদ নামের এক ভূমি মালিক ও স্বত্ববান।
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ে পশ্চিমপ্রান্ত সংলগ্ন এস.এ জে.এল নং- ২৪, বি.এস.জে.এল নং- ৭, এস.খতিয়ান নং- ২৭৮, বি.এস খতিয়ান নং- ১৬৬, এস. দাগ নং- ৯৫২, ৯৫৩, ৯৫৪, ৯৫৫, এবং বি.এস দাগ নং- ২২৭৫, ২২৭৬, ২২৭৭ নং দাগের ১৭.১৪ একর ভূমির মালিক ও স্বত্ববান এয়ারপোর্ট থানাধীন নূরানী ৯/৩, বনকলাপাড়া, সুবিদবাজারের মৃত সৈয়দ ইয়াওর মিয়া ওরফে খাজুরের পুত্র সৈয়দ ফরিদ আহমদ। তফসিল বর্ণিত ভূমির মধ্যে ৮.৫৭ একর ভূমি এক কোটি টাকা দাম সাব্যস্থ করে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জগন্নাথপুর উপজেলার লহরী নোয়াগাঁওয়ের মৃত সৈয়দ উল্লাহের পুত্র মনোয়ার আলীর নিকট বিগত ১৩/০৯/২০২০ ইং সনে নির্ধারিত সাকুল্য টাকা সমজিয়া নিয়া সিলেট সদর সাব-রেজিষ্ট্রারী অফিসে ৫৫৭৮/২০ নং রেজিষ্ট্রারী সাফ-কবালা দলিলমূলে হস্তান্তর করেন সৈয়দ ফরিদ আহমদ।
তবে কিছু দিন যেতে না যেতেই সৈয়দ ফরিদ আহমদ পূনরায় তার বিক্রিত ভূমি আত্মসাতের অসৎ উদ্দেশ্যে সে বাদী হয়ে বিগত ০৯/১১/২০২১ ইং সনে ক্রেতা মনোয়ার আলী ও তার স্ত্রীকে বিবাদী করে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি প্রতারণার নালিশা মামলা দায়ের করে। যাহার কোতোয়ালী সি.আর মামলা নং- ৯৫৪/২০২১ ইং। বিজ্ঞ আদালত উক্ত নালিশা মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি জোন সিলেটকে আদেশ প্রদান করেন।
বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অনুযায়ী সিআইডি জোন সিলেটের এসআই (নিঃ) আবু বকর সিদ্দিক উক্ত নালিশা মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে ২৬/০৫/২০২২ ইং সনে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন সুত্রে জানা গেছে- মামলার বাদী নালিশা মামলার এজহারে তিনি নিজেকে একজন আইনমান্যকারী ব্যক্তি দাবী করলেও তদন্তকালে তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন থানা ও বিজ্ঞ আদালতে মামলা রয়েছে। যাহার জগন্নাথপুর থানার মামলা নং- ০৭, তাং- ০৫/০৭/২০২০ইং যাহার জগন্নাথপুর থানার অভিযোগপত্র নং- ৯০, তাং- ৩০/০৫/২০২০ইং। এছাড়াও এসএমপি কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ৩৭, তাং- ০৯/১১/২০২১ ইং।
তদন্তে আরো জানা গেছে- উক্ত নালিশা মামলার ১নং বিবাদী মনোয়ার আলী ও ২নং বিবাদী লিজা সাবরিনা চৌধুরী পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। মামলার বাদী এজহারে বিবাদীগণকে ঠগ, প্রতারক, ধান্দাবাজ, পরধনলোভী ও আইন অমান্যকারী প্রকৃতির লোক দাবী করলেও তদন্তকালে সিডিএমএস যাচাই এবং ইনকোয়ারী স্লীপের জবাব পর্যালোচনায় তাদের বিরুদ্ধে বিরূপ কোন কিছু পাওয়া যায় নি।
তদন্তকালে বাদী সৈয়দ ফরিদ আহমদ কর্তৃক ২০১৯ ইং সনে ফারহানা আহমদ, শাহেদ শরীফ আহমদ, আব্দুর রকিব, লুৎফুর রহমান, আলমগীর বখত চৌধুরী, কামরুল ইসলাম রাকিব এবং শেখ শিব্বির হোসেন নামের একাধিক ব্যক্তির নিকট উক্ত নালিশা ভূমি কখনো এতিমখানা, কখনো পার্ক/রিসোর্ট, কখনো বিনোদন পার্ক করার নামে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিল নং- ৯৮১২/২০১৯ ইং এবং চুক্তিনামা দলিল নং- ৫৫৭৭/২০২০ ইং সম্পাদন করেন। তাতে প্রমানিত হয় যে, উক্ত তফসিল বর্ণিত ভূমি দেখাইয়া বিভিন্ন প্রজেক্টের কথা বলে মানুষজনের সাথে প্রতারণা মূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বাদী সৈয়দ ফরিদ আহমদ একাধিক মানুষের সঙ্গে কখনো ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব চুক্তিপত্র কখনো বা চুক্তিনামা দলিল নামে একাধিক দলিল সম্পাদন করেন।
সরজমিন তদন্তে, গুপ্তচর হতে প্রাপ্ত তথ্য, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় বাদী সৈয়দ ফরিদ আহমদ বিবাদীগণের নিকট হইতে অন্যায় লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তাড়িত হয়ে বিজ্ঞ আদালতে উক্ত নালিশা মামলাটি দায়ের করছেন। উক্ত নালিশা মামলায় বাদীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহিত আলোচনাক্রমে নালিশা মামলার বর্ণিত বিবাদীগণকে উক্ত মামলার অভিযোগ দায় হইতে অব্যাহতি দানের আবেদন জানিয়ে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
উল্লেখ্য এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনের উপর বাদী পক্ষ এখনো কোন ধরণের নারাজি পিটিশন দাখিল করেন নি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd