সিলেট [english_date] | [bangla_date] | [hijri_date]
প্রকাশিত: 10:31 PM, May 22, 2022
Sharing is caring!
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের পরিবহন নেতা রুনু মিয়া মঈন ও সাব উদ্দিন সাবু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টোকেন বাণিজ্য, হামলা মামলার অভিযোগের অন্তঃনেই । জেলার বিভিন্ন সড়কে চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ পর্যন্ত তারা প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা অবৈধভাবে কামাই করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানা ও কোর্টে তাদের বিরুদ্ধে বহু মামলা-মোকদ্দমাও রয়েছে। সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ শ্রমিকদের কাছ থেকে বেআইনী ও জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে তারা বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের (চট্ট-১৩২৬) এর াবদ্যমান সভাপতি ও তামাবিল শাখার সদস্য শাহাব উদ্দিন সাব’র নেতৃত্বে গঠিত সিন্ডিকেট এ চাঁদা আদায় ও আত্মসাত করছে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রম আদালত সিলেটে-এ দায়ের করা মামলায় (নং-বিএল-০২/২০২২) অভিযোগ করা হয়-রুনু মিয়া মঈন সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং- চট্ট-১৩২৬) এর বর্তমান সভাপতি। সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের সমবায় ভবনে রয়েছে তার প্রধান কার্যালয়। আজ থেকে ২০ বছর আগে ছিলেন একজন সাধারণ টেম্পোচালক। বর্তমানে তিনি অনেক গাড়ি-বাড়ি ও বিত্ত-বৈবভের মালিক। নগরের উপকন্ঠ দক্ষিণ সুরমার বাসস্ট্যান্ড, বাইপাস এলাকায় নামে-বেনামে রয়েছে তার বিশাল সম্পত্তি। সিলেট সদরের খাদিমপাড়ায় একটি বিলাসবহুল বাড়িসহ রয়েছে কয়েকটি বহুতল বাড়ি। রুনু মিয়া মঈন আজ থেকে ২০ বছর আগে লোক দেখানো এক নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতির আসনে বসে দীর্ঘ ২ দশক ধরে অগণতান্ত্রিক পন্থায় সভাপতির পদ আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। ইউনিয়নের জন্য সরকার অনুমোদিত গঠনতন্ত্রের সব ক’টি ধারা-উপধারা লঙ্ঘন করে এ যাবত তিনি লুটপাট ও আত্মসাতের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইউনিয়নের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ছাড়াও সিলেটের তামাবিল এলাকায় অবৈধ স্ট্যান্ড বসিয়ে ব্যাপক হারে চাঁদাবাজি, বেআইনি হিউম্যান হলার, ইমা, লেগুনা, সুজুকি, মেক্সি, রাইডার, ইত্যাকার রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানবাহনে পুলিশের টোকেন বাণিজ্য করে দৈনন্দিন লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন তামাবালি শাখা শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি সাব উদ্দিন সাবুসহ সিন্ডিকেট সদস্যরা। তাদের অনেককেও এ সব মামলায় আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো প্রকাশ- ১৮ বছর ধরে নির্বাচন না দিয়ে রুনু মিয়া মঈন সিন্ডিকেট বেআইনিভাবে জেলা হিউম্যাল হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের ক্ষমতা দখল ও ভোগ করছেন। এ বিষয়ে একাদিক মামলার পাশাপাশি গত ৩ মার্চ সিলেটে পৃথক সংবাদ সম্মেলনও করা হয়েছে।
মামলা ও সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- সিলেট জেলায় আনুমানিক ২৫০০ গাড়ি রয়েছে। চলাচলকারী প্রতি গাড়ি থেকে ৪০ টাকা হারে প্রতিদিন এক লাখ টাকা আদায় করেন রুনু মিয়া ও তার সহযোগীরা। মাস শেষে এ টাকার পরিমাণ হয় ৩০ ত্রিশ লাখ টাকা। এতে গত ১৮ বছরে পাঁচ কোটি চল্লিশ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বর্তমান অনির্বাচিত সভাপতি রুনু মিয়া মঈন।
প্রতি গাড়ি থেকে লাইন খরচ বাবদ প্রতিমাসে ছয়শত টাকা করে চাঁদা আদায় করেন তারা।এতে ২৫০০ গাড়ি হতে প্রতি মাসে তাদের চাঁদার পরিমাণ ১৫ লাখ টাকা। আর নতুন গাড়ি কিনে লাইনে চালাতে হলে রুনু মিয়া মঈনকে প্রতি গাড়িতে ১৫ থেকে বিশ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। যেকোনো গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন হলেও ভর্তির নামে প্রতিটি গাড়ি থেকে বিশ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করেন তারা।এভাবে গত ১৮ বছরে ২৫০০ গাড়ি নতুন ক্রয় ও মালিকানা পরিবর্তন করা গাড়ি থেকে রুনু মিয়া সিন্ডিকেট ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে। এছাড়া শ্রমিক সদস্য ফি ছয়শত টাকা করে মোট ৫ হাজার শ্রমিকের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা ও রিনিউ বাবত প্রতি দুই বছর পরপর একশত বিশ টাকা করে মোট ৫হাজার শ্রমিকের কাছ থেকে আরও ৫৪ লাখ টাকা চাঁদা আদায় ও আত্মসাৎ করে রুন মিয়া ও তার সিন্ডিকেট। রুনু মিয়া মঊন নিজের ইচ্ছামতো শ্রমিক ইউনিয়নের নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন। এভাবে বিগত ১৮ বছরে মোট ৪৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন রুনু মিয়া মঈন ও তার সিন্ডিকেট।
রুনু মিয়া মঈন, সাবুদ্দিন সাবুসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে ফৌজদারী মামলার সম্প্রতি কোতোয়ালি থানা ও কোর্টে একাধিক মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় ১০ টি পৃথক অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, রুনু মিয়া মঈন সিন্ডিকেট ও সাবুদ্দিন সাব সিন্ডিকেটের কথামত চাঁদা না দিলে তারা রোডে গাড়ি চালাতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর পাশাপাশি মারপিট করে শ্রমিকদের গুরুতর জখমও করেন। এ বছরের ২৩ জানুযারি এধরণের একটি হামলা ও গুরুতর জখমের ঘটনায় রুনু মিয়া মঈন ও সাব উদ্দিন সাবুসহ তাদের সিন্ডিকেটের ২১ জনকে এজাহারভুক্ত করে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা {নং৬২(১)২২} দায়ের করা হয়েছে।
চাঁদাবাজি প্রাণনাশর হুমকি ও আত্মসাতের অভিযোগে গত ১ মে রুনু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতে আরেকটি পিটিশন মামলা (নং-সিআর ৬৪৩/২০২২) দেওয়া হয়েছে, যা তদন্তাধীন রয়েছে।
সিান্ডকেট প্রধান রুনু মিয়া মঈনের বাড়ি সিলেট মেট্রোসিটির শাহপরাণ থানাধীন খাদিমনগর বাহুবলে। তিনি ওই গ্রামের রই মিয়ার পুত্র এবং তার সহযোগী শ্রমিক ইউনিয় তামাবিল শাখার সভাপতি শাহপরাণ থানাধীন দাসপাড়ার মৃত ইরফান আলীর পুত্র। এ দুজনের বিরুদ্ধে সাধারণ শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি পাশাপাশি বেআইনী চালানোয় ব্যবহৃত পুলিশের টোকেন বাণিজ্যেরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
রুনু-সাবু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি টোকেন বণিজ্যের অভিযোগের অনÍ: নেই। শুধু সিলেট তামাবিল রোড নয়, জেলার বিভিন্ন স্থানে স্ট্যান্ড বসিয়ে চাঁদা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে, যা ক্রমান্বয়ে দৈনিক সোনালি সিলেট-প্রকাশ পাবে।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক-শ্রমিক ইউনিয়নের (চট্ট-১৩২৬) বর্তমান সভাপতি রুনু মিয়া মঈনের সঙ্গে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মামলার বাদী শাহাব উদ্দিন তার ইউনিয়নের কোনো সদস্য নন। তিনি শ্রমিক লীগের মানুষ। শ্রমিক লীগ আমাদের উইনিয়ন দখলে নিতে এসব মিথ্যে মামলা ও াভিযোগ করছে। তিনি াাগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক-শ্রমিক ইউনিয়নে বৈধ সভাপতি বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
তবে আদারতে দেওয়া একাধিক মামলার বাদী শাহাব উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, তিনি ওই ইউনিয়নের বৈধ সদস্য এবং ভোটার সদস্য। ২০১৯ সালের দেওয়া ভোটার কার্ড তার কাছে রয়েছে।
………………………..
Design and developed by best-bd