সিলেট ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:০০ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২২
নিজস্ব সংবাদদাতা :: ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলের পানিতে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকাসহ উপজেলার নতুন নতুন অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ফলে সময়ের সাথে সাথে বন্যায় বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, সেই সাথে বেড়ে চলছে ক্ষয়ক্ষতি। বন্যার কারণে গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছেন।
এদিকে, বিশ্বনাথে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে থাকলেও পাশে নেই সিলেট-২ আসনের (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) এমপি ও গণফোরামের কামাল হোসেনের অংশের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান। তিনি এক সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এমন দুর্ভোগের সময়ে জনপ্রতিনিধিকে পাশে না পেয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করছেন বিশ্বনাথবাসী। এমপি মোকাব্বির খানের সমালোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বইছে ঝড়।
বন্যাকবলিত উপজেলাবাসীর প্রশ্ন- প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যেখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি পর্যন্ত বাতিল করে দেয় সরকার- সেখানে বিশ্বনাথবাসীর বন্যার বিপদের চাইতে এমপির কাছে ওই সফর কি বড়?
তবে এমপি মোকাব্বির খান কী কর্মসূচি নিয়ে থাইল্যান্ড গেছেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তাঁর প্রেস সচিব সাংবাদিক অসিত রঞ্জন দেব শনিবার (২১ মে) জানান, মোকাব্বির খান গত ১১ মে এক সরকারি সফরে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর সঙ্গে থাইল্যান্ডে গেছেন। তবে কী কর্মসূচি তা বিস্তারিত জানেন না অসিত রঞ্জন দেব। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে মোকাব্বির খান দেশে চলে আসার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, মসজিদ, স্কুল-কলেজ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার পাশাপাশি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ভেসে গেছে অনেক ফিসারি ও পুকুরের মাছ। তাছাড়া ব্যাপক গতিগ্রস্ত হয়েছে পাকা ধানসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির বাগানের চাষাবাদকৃত জমি।
উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মাহতাবপুর এলাকায় নদীর তীরে চলমান ব্লক বসানোর কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলার (সঠিক সময়ে ব্লক না বসানোর ফলে) কারণে বন্যার পানিতে ভেঙে অনেক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
প্রথমদিকে উপজেলার লামাকাজী, খাজাঞ্চী ও অলংকারী ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হলেও পর্যায়ক্রমে রামপাশা, দৌলতপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে। আর বন্যার পানিতে নিমজ্জিল এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা ও অসুস্থ ব্যক্তিরা পড়েছেন বিপাকে।
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার কারণে নতুন নতুন আরও এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দূর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে। পানি বৃদ্ধির ফলে ইতিমধ্যে সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে জনসাধারণকে ব্যবহার করতে হচ্ছে নৌকা-ভোরা।
অন্যদিকে, বন্যার পানিতে পৌর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণের বসতঘর নিমজ্জিত হওয়ার কারণে পরিবার পরিজনের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু নিয়েও বিপাকে রয়েছেন মানুষজন।
বানভাসি মানুষের বক্তব্য- ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক হওয়ার কারণে বন্যা পরিবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে হিমশিম খেতে হবে। আর বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীদের এগিয়ে আসা জরুরি। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান, সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নুশরাত জাহান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা জাহান সরকার প্রমুখ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd