সিলেট ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক :: নতুন সড়ক পরিবহন আইনের পর অনেকেই ভাবছিলেন বিভিন্ন সড়কে বন্ধ হয়ে যাবে অনটেস্ট সিএনজি অটোরিক্সার টোকেন বিক্রি। সম্প্রতি একটি অনুষ্টানে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন নাম্বারবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা বন্ধের কঠোর নির্দেশ দেন। কিন্তু দক্ষিণ সুরমার আলতাফ হেসেন ওরফে টোকেন আলতাফ এসপি ও এসএমপি’র এ নির্দেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে চলেছেন। এসএমপি ও জেলা পুলিশের অসাধু কর্তাব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা ও দদহরম মহরম করে অনটেস্ট সিএনজি অটোরিক্সার টোকেন বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন আলতাফ । প্রতিমাসে অবৈধপন্থায় কামাই করছেন লাখ লাখ টাকা। এসএমপির দক্ষিণ সুরমাস্থ পুরাতন পুলের মুখ থেকে কামালবাজার, জালালপুর, গহরপুর ও বিশ^নাথ এই চার রোডে নিজ নামে দেদারছে বিক্রি করছেন অনটেস্ট অটোরিক্সার টোকেন। এই টোকেন বা স্টিকার গাড়ির সামনে গ্লাসে লাগানো থাকলে বা চালকের কাছে থাকলে পুলিশ ধরছে না গাড়ি। নগরের স্টেশনরোড হয়ে এই চার রোডে আলতাফ নামের টোকেনধারী অবৈধ (অনটেস্ট) সিএনজি অটোরিক্সার সংখ্যা দুই শতাধিক। তারা প্রতিমাসে আলতাফকে ৮ শ’ থেকে ১ হাজার টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে আলতাফ নামের টোকেন সংগ্রহ করেন। আর এ টোকেনের মাধ্যমে আলতাফের অর্জিত টাকার একটা বড় অংশ পেয়ে থাকে মহানগর ও জেলা ট্রাফিক পুলিশ। ফলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকাধীন এই চার সড়কে নাম্বারবিহীন ও রেজিস্ট্রেশন বিহীন অটোরিক্সা চলাচলে বাঁধা থাকছে না কোথাও।
সূত্রমতে টোকেন বাণিজ্যের মূলহোতা আলতাফ দক্ষিণ সুরমা এলাকার এই চার সড়কে চলাচলরত সিএনজি অটোরিক্সার নিয়ন্ত্রক। তার নামের টোকেন (স্টিকার) লাগিয়ে দিলেই অনটেস্ট সিএনজি অটোারিক্সাগুলো চলাচলের জন্য বৈধ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়-ওই চার রোডে চলাচলরত অনটেস্ট সিএনজি অটোরিক্সার মালিক ও চালকরা বিআরটিএ’র রেজিস্ট্রেশনের পরিবর্তে প্রথমে এককালীন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আলতাফ-এর হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে প্রতিটি অনটেস্ট সিএনজি অটোরিক্সার জন্য মাসিক হারে (৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকার) একটি টোকেন বরাদ্দ দেন আলতাফ। এই টোকেন অটোরিক্সার সামনের গ্লাসে লাগিয়ে দিলে গাড়িগুলো সড়কে চলাচল করতে আর কোনো অসুবিধা থাকেনা। বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে নতুন সিএনজি অটোরিক্সার রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) বন্ধ থাকার সুযোগে জেলার অনান্য সড়কের ন্যায় উপরোল্লেখিত এই চার সড়কের নাম্বারবিহীন অটোরিক্সা চলাচলের জন্য এই টোকেন বাণিজ্য গড়ে তুলেন আলতাফ হোসেন ওরফে টোকেন আলতাফ।
সূত্রমতে- সিলেটের প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশের সব সেক্টরে টোকেনের মাধ্যমে আদায়কৃত টাকার ভাগ দিয়েই অবৈধ টোকেন বাণিজ্যের অনুমতি নিয়েছেন আলতাফ। তাই তার (আলতাফ) নামে দেয়া পরিচিতি টোকেন নিতে পারলেই দক্ষিণ সুরমার গহরপুর, কামালবাজার, জালালপুর ও বিশ^নাথ রোডে অবৈধ অটোরিক্সা চালাতে ও যাত্রী বহনে কোন বাঁধা থাকেনা। এই টোকেন ছাড়া কেউই অনটেস্ট সিএনজি অটোরিক্সা চালাতে পারবে না বলে জানান কয়েকজন চালক। এছাড়াও আলতাফ ওরফে টোকেন আলতাফ দক্ষিণ সুরমার স্টেশন রোডস্থ ভূইয়া পেট্রোল পাম্পের সামনে অবৈধ সিএনজি অটোস্ট্যান্ড বসিয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলাচলরত বৈধ-অবৈধ সকল সিএনজি অটোরিক্সা থেকে ১০ টাকা/২০ টাকা করে দৈনিক হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে থাকেন। পুরাতন পুলের দক্ষিণ মোড়ে বন্দর বাজারগামী আরেকটি অবৈধ অটোরিক্সা স্ট্যান্ড বসিয়েও চাঁদা আদায় করেন আলতাফ। পুলিশেকে গোপন ইজারা মানি দিয়েই আলতাফ এসব চাঁদাবাজি করে থাকেন বলে সুত্রে প্রকাশ। আলতাফের মূল বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে। বর্তমানে দক্ষিণ সুরমার বদিকোনায় স্থায়ী বসবাস করেন তিনি।
এদিকে, বৈধ সিএনজি চালকরা জানান, প্রসাশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা থাকায় এই টোকেন বাণিজ্যের হোতা আলতাফের অবৈধ টোকেন ব্যবসা ও চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না। টোকেন বাণিজ্য করে আলতাফ জ্ঞাতআয় বহির্ভুত পন্থায় ইতোমধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ফলে সিএনজি অটোরিক্সার মালিক ও চালকরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেপরোয়া হয়ে চালাচ্ছেন অনটেস্ট অটোরিক্সা। আর এ কারণেই প্রতিটি সড়কে লেগে থাকে অসহনীয় যানজট ও জনজট। ঘটতে থাকে যতসব মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা।
এব্যাপারে বক্তব্য নিতে আলতাফের সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অনটেস্ট গাড়ির টোকেন ব্যবসার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- সাংবাদিকরা আমাকে না জানিয়ে আমার বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখালেখি করেন,যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd