বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : প্রেম মানে না রাত দিন, মানে না সমাজের বিধিনিষেধ! তাই প্রেমের টানে ইতিহাসে হয় নানান সব ঘটনা। সিলেটের বিশ্বনাথে প্রেমের টানে প্রেমিকের বাড়িতে হাজির হন ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী।
ওই তরুণী উপজেলার নরসিংপুর গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বিয়ের দাবিতে পার্শবর্তি দশদল গ্রামের সমুজ আলীর ছেলে প্রেমিক ইমরান আহমদ (২৩) এর বাড়িতে গিয়ে ওঠেন ওই তরুণী।
তবে কপাল খারাপ প্রেমিক ইমরানের। সে এসময় সিলেটে অবস্থান করছিলো। বিষয়টি ইমরান আহমদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানা পুলিশকে খবর দিলে এসআই জয়ন্ত সরকার ইমরানের বাড়িতে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
পরে সন্ধ্যায় তরুণীর পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে এক সপ্তাহের ভেতরে ইমরানের কাছে বিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান।
এসআই জয়ন্ত জানান, ইমরানের পরিবার ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে জানালে আমি সেখানে গিয়ে তরুণীকে থানায় নিয়ে আসি। পরে সন্ধ্যায় তরুণীকে ভাইয়ের জিম্মায় দেয়া হয়।
এব্যাপারে প্রেমিক ইমরান আহমদ বলেন, গতবছর তারা দু’জন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এনিয়ে ওই তরুণীর পরিবারের মামলায় প্রায় দেড়মাস তাকে জেল কাটতে হয়েছে। আজ হঠাৎ করে এই তরুণী আমার বাড়িতে যাওয়ার বিষয়টি আমি জানিনা। এসময় আমি সিলেটে ছিলাম। পরে আমি আমার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে জেনেছি।
সূত্র জানায়, বিশ্বনাথ পৌরসভার নরশিংপুর গ্রামের তরুণীর (১৮) সাথে রামপাশা ইউনিয়নের দশদল (কাদিপুর) গ্রামের সমুজ আলীর ছেলে ইমরান আহমদের (২৩) দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। সোমবার দুপুরে প্রেমের টানে ইমরানের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন ওই তরুণী।
এ সময় ইমরান বাড়িতে ছিলেন না। তার পরিবার তরুণীকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু তিনি কিছুতেই প্রেমিকের বাড়ি ছাড়বেন না বলে সাফ জানালে ঘটনাটি মুঠোফোনে ইমরানকে অবগত করেন তার মা।
অপরদিকে, খবর পেয়ে ওই তরুণীর পরিবারের লোকজন ইমরানের বাড়িতে গিয়ে তরুণীকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হন। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে জাতীয় জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তা চান প্রেমিক ইমরান। ওই কলের প্রেক্ষিতে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
সূত্র আরও জানায়, প্রেমের টানে গত বছরের প্রথমদিকেও একবার ইমরানের হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন ওই তরুণী। সে সময় পরিবারের অভিযোগ পেয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা থেকে ইমরানকে আটক ও তরুণীকে উদ্ধার করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।
পরে তরুণীর বড়ভাই বাদী হয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রায় দেড়মাস জেল খাটেন ইমরান।
কথা হলে ইমরান আহমদ জানান, ‘আজ সকালে জরুরী কাজে আমি সিলেট শহরে চলে যাই। দুপুরের দিকে খবর পাই, ওই মেয়েটি (প্রেমিকা) আমার বাড়িতে চলে এসেছে। পরে, তাকে নিতে এসে তার ভাইয়েরা আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। তাৎক্ষণিক আমি ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাই।
তরুণীর এক ভাই ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘ইমরানের কারণে কোথাও আমার বোনকে বিয়ে দিতে পারছি না। সে তার ব্রেনওয়াশ করে ফেলেছে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘৯৯৯ থেকে কল পেয়ে আমরা মেয়েটিকে ইমরান আহমদের বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসি। পরে, মেয়েটির মা মেয়েটির পছন্দের পাত্রের কাছে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজের জিম্মায় নিয়ে যান।
Sharing is caring!