সিলেট ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট বনবিভাগের সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন। দীর্ঘ আড়াই দশক ধরে একই রেঞ্জে তিনি কর্মরত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্তঃ নেই। অনিয়ম-দুর্নীতে ডুবে রয়েছেন তিনি। আর এর কারণেই দিনদিন উজাড় হচ্ছে রেঞ্জের বনাঞ্চল। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে চলে যাচ্ছে ভূমিখেকোদের। আর এদের অনেকেই সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিনের স্বজন ও পরিজন। পদায়নের পর গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সাদ উদ্দিনের শেল্টারে রেঞ্জ এলাকায় ৪০ টিরও বেশি অবৈধ করাতকল বসানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাদ উদ্দিন প্রত্যেকটি করাতকল থেকে ১লাখ টাকা করে আদায় করে নেন। এর পর থেকে মাসে প্রতিটি করাতকল থেকে মাসে ২ হাজার টাকা করে মাসোহারা আদায় করে থাকেন। করাতকল গুলোতে সর্বদা বনভূমির গাছ কেটে ও চিরে বিক্রি করা হয়ে থাকে।
সাদ উদ্দিনের আমলে সারী রেঞ্জের অধীন গোয়াইনঘাট এলাকায় স্থাপিত হয়েছে ৮ টি ইটভাটা। প্রতিটি ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে বনভূমির কাট-বৃক্ষ। প্রত্যেকটি ইটভাটা থেকে সাদ উদ্দিন প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে মাসোহারা আদায় করে থাকেন। সাদ উদ্দিন বনভূমির গাছ বহনে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি প্রত্যেকটি ট্রলি থেকে ৫শ’ টাকা এবং প্রত্যেকটি ট্রাক থেকে ১ হাজার টাকা করে আদায় করে থাকেন। তার আমলে গোয়াইনঘাটে অতিথি পাখীর শিকার জমজমাট আকার ধারন করেছে। শিকারীরা প্রত্যহ তার বাসাবাড়িতে অতিথি পাখি দিয়ে থাকেন। ফলে গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরের বাজার ও রেস্টুরেন্টগুলো অতিথি পাখিতে সয়লাব। গোয়াইনঘাট বনবিটের পুরনো বাগানগুলো দেখিয়ে শত শত একর ভূমিেিত নতুন বাগান করার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ এনে তা আত্মসাত করছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ। নতুন কোন বাগানের অডিস্তত্ব নেই তার রেঞ্জ। এমনকি বাগানের মুর্তাগুলো বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। মুর্তা বিক্রির অনেক আলামত দিবালোকের ন্যয় বিদ্যমান। রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীর মামা পরিচয় দিয়ে সম্পূর্ণ বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম ও আত্মসাত করে চলেছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ।
বিট অফিসার হিসাবে ২০ বছর গোয়াইনঘাট উপজেলায় ছিলেন সাদ উদ্দিন। সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসাবে ৫ বছর পার করছেন তিনি। সাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বনবিভাগের ৫ টি দায়িত্ব নিজের কব্জায় রেখে একাই বনের রাজা হয়ে গেছেন। তিনি একাধারে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তা, সারী, এফএফপিসি, জৈন্তাপুর, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখঘাট এসএফএনটিসি। এছাড়াও তিনি সিলেট টাউন রেঞ্জের বিশেষ টহল বাহিনীর সহকারী প্রধান। সাদ উদ্দিনের অমলে তার স্বজনরা রেঞ্জের গোয়াইনঘাট বিটের দমদমা, কাঠালবাড়িকোনা, কাঠলিকোনা, সিটিংবাড়ি প্রভৃতি সংরক্ষিত এলাকার হাজারো একর বনভূমি দখলে নিয়ে গেছেন। সাদ উদ্দিনকে এলাকাবাসী বনের রাজা সাদ, বনসাদ, বনখেকো সাদ প্রভৃতি উপাধিতে ভুষিত করে থাকেন। অসৎ উপায় অবলম্বন করে সাদ উদ্দিন শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সিলেট নগরের সুবিদবাজার বনকলাপায় নিজ শশুরের নামে কিনেছেন কোটি টাকার বাড়ি। এই বাড়িতে সপরিবাওে বাস করে ১৫ লাখ টাকার ব্যক্তি মালিকানা গাড়ি চড়ে ডিউটি করেন এবং সর্বত্র চষে বেড়ান। তার স্ত্রী শালা শালী ও ভাইবেন প্রত্যেকের নামে ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। অনুসন্ধানে রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম-আত্মসাতের আরো বহু বিরল তথ্য বেরিয়ে এসেছে। যা ক্রমান্বয়ে মিডিয়ায় প্রকাশ পাবে।
উল্লেখিত সব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে রোববার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তার সেলফোনে কল দিলে তিনি এ প্রতিবেদকের মোবাইর ফোন রিসিভ করেননি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd