সিলেট ১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৪৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
এইচ.কে.শরীফ সালেহীন :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৬নং ফতেপুর ইউনিয়নে।নির্বাচনী হাওয়া বইছে এলাকাজুড়ে।চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে ক্ষমতাসীন দলের হাফ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। প্রার্থীরা প্রত্যেকেই দলের বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন।আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন লাভে হাফ ডজনের বেশি প্রার্থীর লবিং তৎপরতা তদবির চলছে উপজেলা জেলা ও কেন্দ্র পর্যন্ত। পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থীরা স্বপক্ষে জনমত তৈরিতে তৃণমূল কর্মীদের সাথে যোগাযোগসহ এলাকাব্যাপী ব্যাপক গরুয়া গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা সদর থেকে দূরত্বে অবস্থান হওয়ায় ছোটবড় সকল সমস্যা সমাধানে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণের কাছে গ্রাম্য আদালতই হচ্ছে সর্বোচ্চ ভরসারস্থল।আর এ কারণে এ এলাকার ‘জনপ্রতিনিধি নির্বাচন’ বিষয়ে ইউনিয়নবাসীর আগ্রহ ও উৎসাহ একটু বেশিই।গ্রাম পাড়া মহল্লার দোকান ও কোলাহলে নির্বাচনের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে হাট-বাজার বাসাবাড়িতে যোগাযোগ করে চলেছেন প্রার্থীরা।
ইউনিয়ন একসময়ের বিএনপি দুর্গ হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমানে সরকারের নানাবিধ উন্নয়ন ও জনমুখী সেবাসমুহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছায় এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক বহুগুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।তবে সরেজমিন ঘুরে এ ইউনিয়নে আসন্ন নির্বাচনে ব্যতিক্রমধর্মী তথ্য,পরিসংখ্যান লক্ষ্য করা গেছে। এলাকাটিতে সরকার দলীয় ‘মনোনয়ন লাভ’ জয়ের প্রাথমিক স্তম্ভ নির্ণীত হলেও ‘অঞ্চল ভিত্তিক’ প্রার্থীর আত্বপ্রকাশ ঘটায় নির্বাচনে ভোটাররা বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে আঞ্চলিকতার প্রশ্নে।এই ইউনিয়নের প্রায় সকল চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রায় এলাকাভিত্তিক ইউনিয়ন।
আঞ্চলিকতা হবে প্রার্থীদের বড় পুঁজি আর জয়ের চুড়ান্ত মাত্রা। একেক প্রার্থী একেক অঞ্চলের হওয়ায় যার যার অঞ্চলে তাঁর তাঁর ভোট ব্যাংক রয়েছে পর্যাপ্ত।
৬নং ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন যারা-ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক শাহাব উদ্দিন,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার নজরুল ইসলাম,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার ফরিদ আহমদ শামীম,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন,প্রমুখ।
অঞ্চলভিত্তিক চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকার ফলে ভোটারদের দৃষ্টি “আঞ্চলিক নেতা” নির্বাচিত করা।যদিও আওয়ামী দলীয় মনোনয়ন লাভকৃত প্রার্থী সকল আওয়ামী ঘরানার প্রার্থীদের একাভূত করার চেষ্টা চালাতে পারেন।
উপরোল্লিখিত আলোচিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন লাভে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত জোরালো লবিং তদবির করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী,প্রার্থীতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আমিনুর রহমান চৌধুরী চেয়ারম্যান জানান,’ দীর্ঘ দু’যুগ ধরে দল করে আসছি,তার সুফল হিসেবে দল মূল্যায়ন করে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে গত নির্বাচনে জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন।আমি সরকারের সকল উন্নয়ন মূলক বরাদ্দ সুষমভাবে জনগনের মাঝে বন্টন করেছি।ইউনিয়নের সকল রাস্তা ঘাট পুল কালভার্ট মসজিদ মাদ্রাসা স্কুল সব প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। তিনি আরো বলেন।আমাকে দল এবারের নির্বাচনে ও মূল্যায়ন করবেন বলে তিনি আশাবাদী।আমি আবার মনোনয়ন পেয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে উন্নয়ন মূলক অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবো।সকল রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করবো।দরিদ্র অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান ভাতা সেবাদান অব্যাহত রাখবো”।
অপর প্রার্থী মাস্টার ফরিদ আহমদ শামিম জানান, “দলের জন্য শ্রম ঘাম ও আর্থিক ব্যয় করছি।তৃণমূল নেতাকর্মীর দুঃখ দুর্দশায় সবসময় এগিয়ে আসছি।সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, কর্মপরিকল্পনা, জনকল্যাণে অবদানসমুহ সাধারন জনগণের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।দলীয় কর্মী সমর্থকের সংখ্যা বৃদ্ধি করণে ভুমিকা রেখে চলেছি।দলের কাছে মনোনয়নের চেষ্টা করবো।মনোনয়ন পাবার জন্য শতভাগ আশা রাখছি।মনোনয়ন পেয়ে জনরায়ে নির্বাচিত হয়ে পশ্চাৎপদ এ ইউনিয়নে শিক্ষা স্বাস্থ্য সামাজিক নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বোতো নিয়োজিত থাকবো। সর্বপরি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত মেনে নিয়ে কাজ করবো”।
আরেক প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক শাহাব উদ্দিন জানান। মনোনয়ন পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেন,’বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলাম।তখন দল উপযুক্ত মনে করে অন্যজনকে মনোনয়ন দিয়েছিল,তবে আমাকে তখন আশ্বস্ত করা হয়েছে যে,পরবর্তী সময়ে মূল্যায়ন করা হবে।সে অনুযায়ী আমি দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের জন্য কাজ করেছি।আশা করি দল যথাযথ মূল্যায়ন করলে আমাকে মনোনয়ন দিবেন।নির্বাচিত হতে পারলে রাস্তাঘাট পুল কালভার্ট সংস্কারসহ ও দরিদ্র পরিবারের মানবিক সহায়তাসেবা যথাযথ উদ্যোগ নেব”।
মনোনয়ন প্রত্যাশি মাস্টার নজরুল ইসলাম জানান,”দলের জন্য আমার ত্যাগ সর্বোচ্চ।আমি দুঃসময়ে নির্যাতিত হয়েছি,আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছি দলীয় বিবেচনায় আমিই যোগ্য হবার কথা।সংগঠনের সঠিক মূল্যায়ন চাই।তিনি আরো দাবি করেন জনগণের ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে ফতেপুর ইউনিয়নকে দরিদ্রমুক্ত উন্নত ও আধুনিক ইউনিয়নরুপে উপহার দেবেন”।
অপর প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন জানান,”আমরা জন্ম থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।জনগণের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে যুগ যুগ ধরে জনতার সাথে মিশে আছি।তিনি বলেন,জনসেবাই আমাদের মূল লক্ষ্য।সরকারের সকল উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড আ’ম জনতার মাঝে প্রচার প্রচারণায় আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।তিনি বলেন,আমি দলীয় মনোনয়ন চাইবো।সংগঠন আমাদের দুর্দিনের ত্যাগ ও জনপ্রিয়তার বিচার করে আমাকে মনোনয়ন দিবেন বলে প্রত্যাশা করি।তিনি আরো জানান,দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে এ এলাকার মাদকসেবি সন্ত্রাস চাঁদাবাজ নারী নির্যাতনকারীদের নির্মূল করে একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তর করবো”
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd