সিলেট ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট বিভাগের পাসপোর্ট অফিসগুলোতে দালাল আর দালাল। প্রবাসী বহুল সিলেটে এ বিভাগে দালালী ব্যবসা রমরমা। লাইডসেন্সবিহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ট্রাভেল আর ট্যুরিজমের সাইনবোর্ডে মূলত পাসপোর্ট অফিসের দালালীই করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ের মূল ও মূখ্য উৎস পাসপোর্টর দারালী ও মানববপাচার। নগরের বিভিন্ন মার্কেটে ব্যঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা ট্রাভেলস গুলোর মালিকরা নিজে অথবা তাদের কর্মচারী দিয়ে করছে পাসরেপার্টের দালালী। তাইতো কোনকোন কথিত ট্রাভেছলস এর মার্কা না হলে পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করাই হয়না। যেমন বিআরটিএর দালাল ছাড়া গাড়ির ড্রাইভিং লাপইসেন্সসহ কাগজপত্র পাওয়া যায় না।
তাই এবার সিলেটসহ সারাদেশে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে একযোগে অভিযান শুরু করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। এর অংশ হিসেবে রোববার বিভাগের হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে র্যাব অভিযান চালায়। অভিযানকালে ৮ দালালকে দণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে এই দিন কোন অভিযান চালানো হয়নি। অভিযান না চালালেও দু-একদিনের মধ্যে অ্যাকশনে নামছে র্যাব। সাংবাদিকদের এমন তথ্য দিয়েছেন র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার মেজর মাহফুজুর রহমান।
তিনি বলেন, সারাদেশে রোববার সকাল থেকে দালালদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন একযোগে অভিযানে নেমেছে। পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ কার্যালয়, সরকারি হাসপাতালসহ যেখানেই দালালদের দৌরাত্ম্য, সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছে র্যাব। অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে অভিযানের অংশ হিসেবে বিভাগের সিলেটছাড়া অন্য জেলাগুলোতে অভিযান চালানো হয়েছে এবং দালালদের কারা ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। তবে সিলেটে রবিবার অভিযান পরিচালনা না করা গেলেও আজ-কালের মধ্যে হবে।
মেজর মাহফুজুর রহমান জানান, সুনামগঞ্জ পাসপোর্ট কার্যালয় চত্বরে অভিযান চালিয়ে দুই দালালকে তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম এস এম রেজাউল করিম এই আদালত পরিচালনা করেন। দন্ডাপ্রাপ্তরা হলেন মো. খোকন মিয়া ও মো. আব্দুল গনি পাঠান। তাদের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায়।
তিনি জানান, সকালে র্যাব-৯, সিপিসি-৩ (সুনামগঞ্জ ক্যাম্প)-এর একটি আভিযানিক দল লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম এস এম রেজাউল করিমের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ পাসপোর্ট কার্যালয় চত্বরে অভিযান চালায়। এসময় মো. খোকন মিয়া ও মো. আব্দুল গনি পাঠানকে আটক করা হয়। পাসপোর্ট করে দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা নিচ্ছিলেন তারা। পরে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
একইদিন হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসেও চালানো হয় অভিযান। রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের নং পুল এলাকায় অবস্থিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে চিরুণী অভিযান শুরু হয়। এসময় ৬ দালালকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।অভিযানে নেতৃত্ব দেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শামছুদ্দিন মো. রেজা, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাহিদ হাসান ও সিনিয়র এএসপি মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল র্যাব সদস্য।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামছুদ্দিন মো. রেজা জানান, অভিযানকালে জামাল আহমেদ ও হাবিবুর রহমান নামে দুইজনকে আটক করে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ৬ মাস করে কারাদন্ড ও হাবিবুর রহমানকে ১০ হাজার এবং জামাল আহমেদকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।এছাড়াও মো. শিরু চৌধুরী, টেনু মিয়া, আব্দুর রাহিম, বাছির মিয়াকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ৫শত টাকা করে জরিমানা প্রদান করা হয়। সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অভিযানের খবরে সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে অভিযান আতংক । সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দালাল ও এজেন্টরাা রোববার থেকে গা ঢাকা দিতে শুরু করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd