ওসমানী হাসপাতালে ঔষধ পাচারের নেপথ্যে কারা?

প্রকাশিত: ১১:৫৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২১

ওসমানী হাসপাতালে ঔষধ পাচারের নেপথ্যে কারা?

Manual2 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি :: সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর শরীরে প্রয়োগ না করে বিক্রি হচ্ছে সরকারি ঔষধ। ধরা পড়ে না এর নেপথ্যের নায়ক নায়কারা। সম্প্রতি ঔষধ পাচারকালে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এর নেপথ্যের নায়িকা হিসেবে নাম এসেছে এক স্টাফ নার্সের।
অভিযোগ রয়েছে, ডাক্তার যখনই কোন রোগীর জন্য দামি ঔষধ লিখে দেন, তখন স্টাফ নার্সরা ডাক্তারের লেখা কাগজ নিয়ে স্টোর থেকে ওয়ার্ডে ঔষধ নিয়ে আসেন। পরে তারা রোগীর শরীরে প্রয়োগ না করেই অন্যত্র পাচার করে দেন। বিশেষ করে লেখাপড়া না জানা এটেন্ডেন্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা রোগীর নামে বরাদ্দকৃত ঔষধ বাইরে পাচার অথবা অন্য ওয়ার্ডের রোগীদের কাছে বিক্রি করে দেন। প্রতিদিন রাত হওয়া মাত্র সিএনটি অটোরিক্সযোগে চোরাই ঔষধগুলো নগরে বিভিন্ন ফার্মেসী বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কাজে ব্যবহার করা হয় হাসপাতাল রোডস্থ একটি ফার্মেসীর কর্মচারী মামুনকে। ফলে ডাক্তারের দেওয়া ব্যবস্থা মতে চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হন না রোগী। চিকিৎসা বিড়ম্বনা ও বিভ্রান্তির শিকার হয়ে অনেক রোগীকে মৃত্যুর মুূখেও পতিত হতে হয়। এক্ষেত্রে নার্সরা ওয়ার্ড বয়সহ বাইরের দালাদের সহায়তা নিয়ে থাকেন।
সম্প্রতি বেশ কিছু সরকারী ঔষধ নিয়ে সে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় জনতা এক যুবককে আটক করে পুলিশে দেন। এর আগেও ঔষধ পাচারকালে একাধিকজন পুলিশের হাতে আটকও হয়েছে। কিন্তু নেপথ্যের কারিগররা থেকে যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে এবার ঔষধসহ পুলিশের হাতে আটকের পর নার্স খাদিজা খানের নাম বলেছে আটক ওই ব্যক্তি।
আটক বাবুল হোসেন (৪০) সিলেট নগরীর খাসদবির এলাকার চুনু মিয়ার ছেলে। এসময় তার কাছ থেকে বেশ কিছু সরকারি ঔষধ এবং ইনিজেকশন উদ্ধার করা হয়।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, তাকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় পাঠানো হয়েছে।
আটককৃত বাবুল হোসেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের লেবার অটির (ডেলিভারি ওয়ার্ড) নার্সের ইনচার্জ খাদিজা খানের নাম বলেছেন। বাবুলের ভাষ্যমতে ওই ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স খাদিজা তাকে ঔষধগুলো দিয়েছিলেন।
খাদিজা খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঔষধগুলো দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, রুবিনা নামের এক মহিলার পিতা অসুস্থ। তাকে ডাক্তার কিছু ঔষধ লিখে দিয়েছিলো। এজন্য পরিচিত হিসেবে আমি ঔষধগুলো দিয়েছি। এর বেশি কিছু না। সরকারি ঔষধ বাইরে বিক্রি করেন কি ভাবে? দোষ স্বীকার খাদিজা বলেন, আসলে এগুলা বেআইনী এবং আমার অন্যায় হয়েছে।
খাদিজা খানম সরকারি সকল নিয়ম বঙ্গ করে বেসরকারি হাসপাতাল মাদার কেয়ার ক্লিনিকে নিয়মিত ডিউটি পালন করছেন। এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এর আগেও খাদিজার বিরুদ্ধে সরকারি ঔষধ বিক্রির অভিযোগ উঠলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। এত কিছুর পরও বেপরোয়া স্টাফ নার্স খাদিজা।

Manual2 Ad Code

এ বিষয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। ঘটনার বিষয়ে আমি এখনো জানি না। আমি এসে বিষয়টি দেখব।’

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..