সিলেট ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : চিত্রনায়িকা পরীমনিকে মুক্ত করতে উচ্চ আদালতে বিনা পয়সায় আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না। তার সঙ্গে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের একদল আইনজীবী।
রোববার (২২ আগস্ট) রাতে ফেসবুক পোস্টে জেড আই খান পান্না লিখেন, পরীমনির মামলা বিনা পারিশ্রমিকে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা সঙ্গে থাকতে চান থাকবেন।
পরে জেড আই খান পান্না গণমাধ্যমকে বলেন, পরীমনির পক্ষে বিনা পয়সায় আইনি লড়াই করবো। আমার সঙ্গে একদল আইনজীবী থাকবেন।
আইনজীবী দলে রয়েছেন- অ্যাডভোকেট মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, মাহরিন মাসুদ ভূইয়া, আয়েশা আক্তার, রোহানী সিদ্দিকা, রোহানী ফারুক খান, দেবাজিৎ দেবনাথ, মশিউর রহমান রিয়াদ, মানিবেন্দ্র রায় মন্ডল, নাজমুস সাকিব, ইয়াসমিন ইতি প্রমুখ আইনজীবী।
এর আগে এই আইনজীবী বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত হ-ত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া মিন্নির পক্ষে আইনি লড়াই করে হাইকোর্ট থেকে জামিন করিয়েছিলেন।
গত ২১ আগস্ট তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
৪ আগস্ট চিত্রনায়িকা পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই অভিযানে তার বাসা থেকে বিপুল মাদকদ্রব্য উদ্ধারের কথা জানায় বাহিনীটি। মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ৫ আগস্ট পরীমনির নামে বনানী থানায় মামলা হয়।
সে মামলায় প্রথম দফায় তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নায়িকাকে ফের দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন বিচারক। পরবর্তীতে তৃতীয় দফায় ১৯ আগস্ট পরীমণির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম।
নজর২৪ ডেস্ক- তিন দফা সাত দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি। শক্তিশালী আইনজীবী প্যানেলের মাধ্যমে আবেদন জানিয়েও মিলছে না জামিন। আইন বিশেষজ্ঞরা অবশ্য দেখছেন এর তিন কারণ- জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা, বারবার রিমান্ড আবেদন ও মিডিয়ায় আসামিকে নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো।
বনানীর নিজ বাসা থেকে মাদকসহ গত ৪ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়া এ চিত্রনায়িকাকে সিএমএম আদালত জামিন না দেওয়ায় এবার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা। গতকাল রবিবার অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান জামিন আবেদনটি দাখিল করলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তা গ্রহণ করে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ঠিক করেন।
মামলায় দেখা যায়, পরীমনির বাসা থেকে সাড়ে ১৮ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক ব্লট এলএসডি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১), ২৪(খ), ২৯(ক), ১০(ক) এবং ৪২ ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। অপরাধ প্রমাণিত হলে এর মধ্যে ৪২ ধারায় এক বছর, ২৪(খ) ধারায় তিন থেকে পাঁচ বছর, ১০(ক) ও ২৯(ক) ধারায় এক থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সাজা হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলাটির ৪২ ধারা ছাড়া অপরগুলো জামিন অযোগ্য। তাই তিনটি জামিন অযোগ্য ধারা থাকায় এতদিনেও জামিন পাননি পরীমনি। এ ছাড়া জামিন অযোগ্য ধারার কোনো মামলায় আসামির বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন থাকলে সাধারণত আদালত জামিন দেন না। পরীমনির মামলায় পুলিশ গত ৫ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত তিন দফা রিমান্ড আবেদন করেছে। তাই এ সময়ের মধ্যে জামিন মেলেনি। অন্যদিকে যেসব মামলার বিষয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার হয়, সেগুলোতে আসামিকে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত জনসাধারণের মনোভাব বিবেচনায় নিয়ে থাকেন। পরীমনির ক্ষেত্রে এ বিষয়টিও বিপক্ষে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, ‘মামলাটিতে চারটি ধারা রয়েছে, যার তিনটিই জামিন অযোগ্য। আসামির কাছে ভয়ানক মাদক পাওয়া গেছে। সিএমএম আদালত সাধারণত এ ধরনের মামলায় জামিন দেন না।’ আসামি একজন নারী হওয়ার পরও বারবার রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘আসামির কাছে যে ভয়ানক মাদক পাওয়া গেছে তা কোথা থেকে এলো, সেটি জানা দরকার। কিন্তু সেটি আসামি প্রকাশ না করায় বারবার রিমান্ড আবেদন করতে হয়েছে। আবার দেখবেন, মামলার তদন্ত প্রথমে ডিবির কাছে ছিল। এর পর সিআইডিতে গেল। তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হলে সাধারণভাবেই নতুন যারা দায়িত্ব পায় তারা রিমান্ড আবেদন করে থাকে।’
পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান অবশ্য বলেন, ‘মামলার তিনটি ধারা জামিন অযোগ্য হলেও সাজা এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। চার্জশিট দাখিল হলে সিএমএম আদালতই মামলাটির বিচার করবেন। তাই আদালত চাইলে তার আসামিকে জামিন দিতে পারতেন। কিন্তু বারবারই আমাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। অবশ্য জামিন নামঞ্জুর করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। তাই আমাদের কিছু বলার নেই। আশা করছি দায়রা জজ আদালত থেকে আমরা জামিন বঞ্চিত হব না।’
ফৌজদারি বিশেষজ্ঞ আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম সজিব বলেন, ‘সাধরণত মাদক মামলায় একবারের বেশি রিমান্ড আবেদন দেখা যায় না। অধিকাংশ সময় তা নামঞ্জুর হয়ে থাকে। কারণ মাদক উদ্ধার হয়ে থাকলে রিমান্ডের আর প্রয়োজন হয় না। নারীদের বেলায় রিমান্ডের ক্ষেত্র তো আরও কম। তাই পরীমনির ক্ষেত্রে মাদক আইনের মামলায় বারবার রিমান্ড আবেদন অস্বাভাবিক বলেই মনে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাদক আইনের ৪৭ ধারায় নারী বিবেচনায় জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে পরীমনি সুবিধা পাবেন।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd