সিলেটে সমাজ সেবা অধিদফতরে চার তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২১

সিলেটে সমাজ সেবা অধিদফতরে চার তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের ছোটমণি নিবাসে দুই মাসের শিশু হত্যার ঘটনায় এখনো মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর মাঝেই সমাজ সেবা অধিদফতর পরিচালিত সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের চার তরুণী নিজের হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। পরে তাদেরকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, চার তরুণীর ওপর নির্যাতনের কারণে তারা আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে সিলেটের সমাজ সেবা অধিদফতরের সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র খাদিম নগরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করলে রক্তাক্ত অবস্থায় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

আত্মহত্যার চেষ্টা করা চার তরুণী হলেন- কলি বেগম (২১), পপি আক্তার (২২), সুহাদা আক্তার তান্নি (১৬), সুলতানা আক্তার লিজা (২২)।

তাদের অভিযোগ, ‘প্রশিক্ষক ও স্টোরের দায়িত্বে থাকা দেলোয়ার হোসেন ও অফিস সহকারী আনোয়ারা বেগম তাদের উপর নির্যাতন করেন। এমনকি ঘটনা দিন সকাল ১১ টার দিকে প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। দীর্ঘদিনের নির্যাতন-অপমান সহ্য করতে না পেরে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।’

সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে গেলে দেখা যায় চার তরুণী চিকিৎসাধীন আছেন। এসময় কলি বেগম অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে তাদেরকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়। দেলোয়ার এবং আনোয়ারা মিলে নির্যাতন করেন। মাঝে মাঝে অফিস সহকারী আনোয়ারা তাদেরকে জুতাপেটাও করেন। এদিন সকালে খাবার নিয়ে প্রশিক্ষক দেলোয়ার তাদেরকে খারাপ কথাবার্তা বললে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

চার তরুণী আরও জানান, মোট ৩৮ তরুণী ও ২ শিশু মিলে সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের মোট বাসিন্দা ৪০ জন। এদের মধ্যে কিছুদিন আগে তাদের সাথের এক তরুণী বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। ওই তরুণীর শিরনী হবে শুক্রবার। মূলত এ শিরনী নিয়েই বকাঝকা করেন দেলোয়ার।

তবে অভিযুক্ত প্রশিক্ষক ও স্টোরের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা দেলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই প্রশিক্ষণার্থীরা সামন্য কিছু হলেই হাত কেটে ফেলেন। এর আগেও একাধিকবার তারা নিজেরাই হাত কেটে ফেলে। আমি মাত্র পাঁচ দিন ধরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে স্টোরের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। এর আগে আনোয়ারা বেগম অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতেন। প্রশিক্ষণার্থীদের বুঝিয়ে বলা হয়েছিল শিরনির জন্য অতিরিক্ত কোনো বরাদ্দ নেই স্টোরে যা বরাদ্দ সেগুলো দিয়েই রান্না করা হবে। কিন্তু তারা সেগুলো শুনতে চায়নি। তাই তারা কোন কারণ ছাড়াই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

অপরদিকে অপর অভিযুক্ত এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অফিস সহকারী আনোয়ারা বেগমের মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী ব্যবস্থাপক লুৎফর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে অন্তত ১৫ বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..