সিলেট ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ব্যাংক কর্মকর্তা বরকে নিয়ে দুই নববধূর মধ্যে টানাটানি সংঘটিত হয়েছে। এ ব্যাপারে দুই নববধূর পক্ষের লোকজনের মাঝে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয়রা দুই পক্ষকে শান্ত করে ওই বর ও দুই নববধূকে আটকে রেখে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেন। বিষয়টি গণ্যমান্যরা সমাধানের আগেই উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে এক নববধূসহ বরকে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভরতের ছড়া গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জনতা ব্যাংক ভূরুঙ্গামারী শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের আব্বাস আলীর মেয়ে আশানুল আঁখীকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে আসেন। শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ওই নববধূকে (আঁখী) নিয়ে ভূরুঙ্গামারীতে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার সময় উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের খামার আন্ধারীঝাড় এলাকার আয়নাল হকের মেয়ে আইরিন আইমিন নিজেকে ছানোয়ারের স্ত্রী দাবি করে তার বাড়ি আসেন। এসময় ছানোয়ারের পরিবার এবং আঁখীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আইরিনের সঙ্গে আসা তার বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের বাক-বিতণ্ডা বাধে।
এদিকে ছানোয়ারকে নিয়ে দুই বধূর টানাটানি শুরু হয়। আঁখীর আত্মীয়-স্বজন ছানোয়ারকে মাইক্রবাসে তুলে নিয়ে যেতে চায় অপরজন টেনে নামাতে চায়। এক পর্যায় বিষয়টি হাতাহাতির পর্যায় যায়। এই অবস্থায় এলাকাবাসী উভয়কে শান্ত করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সুরাহার উদ্যোগ নেন। এ সময় আঁখীর পক্ষে ভূরুঙ্গামারী ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ১০/১২ জন নেতাকর্মী একটি মাইক্রোবাস যোগে এসে ছানোয়ার এবং আঁখীকে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
নববধূ আইরিনের দাবি, ছানোয়ারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৩ জুলাই নাগেশ্বরীতে তার মামার বাড়ি ছানোয়ারের পরিবারের সম্মতিতে রেজিস্ট্রি করে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছানোয়ারসহ ওই মামার বাড়ি দুইদিন কাটান তারা। শুক্রবার (৩০ জুলাই) পারিবারিকভাবে তাকে ছানোয়ারের বাড়ি তুলে নিয়ে আসার কথা ছিল। সে মোতাবেক বাড়ি আয়োজনও চলছিল। আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াতও করা হয়েছিল। বরযাত্রী আসার দেরি দেখে ছানোয়ারকে ফোন দেয়া হচ্ছিলো কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে লোকের মাধ্যমে ভূরুঙ্গামারীতে তার বিয়ের কথা জানতে পারি এবং এসে দেখি নতুন বউ নিয়ে সে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছেন। আমি ছানোয়ারের বিয়ে করা প্রথম স্ত্রী দাবি করে এখন তার বাড়ি অবস্থান করছি।
এদিকে নববধূ আঁখীর দাবি, ছানোয়ারের সঙ্গে তার চলতি বছরের মার্চ মাসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে কারণবশত তা ব্যাপক আকারে প্রকাশ করা হয়নি। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আমি শ্বশুর বাড়ি আসি। আমিই ছানোয়ারের প্রথম স্ত্রী। ওরা (আইরিন) ছানোয়ারকে বাড়ি চায়ের দাওয়াত দিয়ে জোর করে বিয়ের রেজিস্টার করিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ছানোয়ার কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। তবে মুখোমুখি কথা বলতে চেয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাস্টার জানান, একজন ব্যক্তি সপ্তাহের মধ্যে দুই বিয়ে করার ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায় বসার কথা ছিল। তবে এক পক্ষের লোকজন ছাত্রলীগের ছেলে নিয়ে এসে ছানোয়ারসহ আঁখীকে নিয়ে যায়।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার জানান, আমরা কয়েকজন গিয়ে ছানোয়ার ও আঁখীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমার জানামতে ছানোয়ারের সঙ্গে আঁখীর এক বছর আগে বিয়ের রেজিস্টার হয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আরটিভি নিউজকে জানান, স্ত্রীর দাবি করা দুজনই ব্যাংক কর্মকর্তা ছানোয়ারের বৈধ স্ত্রী। একজনকে চলতি বছরের মার্চ এবং অপরজনকে জুলাই মাসে বিয়ে করেছেন। এটা তাদের পারিবারিক বিষয়। এ নিয়ে কোনোপক্ষই এ পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd