সিলেট ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২১
স্টাফ রিপোর্টার: একটি হত্যা মামলায় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ষড়যন্ত্র করে আসামী বানিয়ে পরিবারের সকল সদস্যের জীবনকে চরম নিরাপত্তাহীন করার অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল ২৫ জুলাই ২০২১ ইংরেজী তারিখ সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বড়লেখার মোহাম্মদ নগর গ্রামের পাহলোয়ান বাড়ির মাহমুদা খানম । লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০২০ সালের ২ মার্চ মোহাম্মদ নগর গ্রামে ফয়সল নামে এক ছাত্রলীগের ইউনিয়ন নেতার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। পরদিন নিহতের ভাই বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কোনো তদন্ত ছাড়াই আসামী করা হয় তার স্বামী সফর উদ্দীন ও ছেলে আসিফ আহমদ আব্দুল্লাহকে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে একটি মহলের ইন্দনে এমন ঘটনায় মোহাম্মদ নগর গ্রামের পাহলোয়ান বাড়ির সদস্যদেরকে আসামীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর ভয়ে তার স্বামী ও ছেলেরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
এর পর থেকে পুলিশ তাদের বাড়িতে রাত বিরাতে এসে আসামী ধরার নামে গোটা বাড়ি তল্লাশি করে। পুলিশের সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগ,ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও এসে হৈ হাল্লা, ধমক দিয়ে পরিবারের সবাইকে ভীত সন্ত্রস্ত্র করে তোলে। এমন অবস্থায় ঘটনার ৬মাস পর উচ্চ আদালত থেকে তার স্বামী ও ছেলে জামিন নিয়ে আসেন বাড়িতে। মাহমুদা খানম বলেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেও বাড়িতে তার স্বামী সফর উদ্দীন ও ছেলেরা শান্তিতে বসবাস করতে পারছেন না। গত ১০ অক্টোবর সন্ধার পর বড়লেখা বাজার থেকে তার স্বামী সফর উদ্দীন ও তার কনিষ্ঠ ছেলে তাহসিন আহমদ মারজান সিএনজি অটোরিক্সাযোগে বাড়ি ফেরার পথে রাতিরপোল এলাকায় একদল দৃর্বৃত্ত তাদের পথরোধ করে দাড়ায়, কিছু বুঝে উঠার আগেই সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। ৭/৮ জনের ওই দলের আচমকা আক্রমনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। দাড়ালো দা দিয়ে কোপ দিলে সফর উদ্দীন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা তার ছেলে তাহসিন আহমদ মারজানকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি আক্রমন করে। হকিস্টিক, রড, দাড়ালো দা দিয়ে মারজানকে উপর্জুপুড়ি আঘাত করলে মারজানও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাদের আর্তচিৎকারে স্থানীয় জনতা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা দ্রুুুত ওইস্থান ত্যাগ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদা খানম কান্নাজড়িত কন্ঠে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় পরদিন তার বড় ছেলে জাবের আহমদ বাদশা বড়লেখা থানায় জীবনের নিরপত্তা চেয়ে জিডি এন্ট্রি করতে যায় কিন্ত পুলিশ জিডি গ্রহণ করেনি। আমার ছেলেকে পুলিশ এই বলে তিরস্কার করে যে- খুনি পরিবারের আবার কিসের নিরাপত্তা। মাহমুদা খানম উল্লেখ করেন, বড়লেখায় নিরাপত্তা না পেয়ে তার স্বামী ও ছেলে সিলেট জেলা সদরের শিবগঞ্জের বাসায় গিয়ে উঠেন। তিনি আরো জানান, শুধুমাত্র বিএনপি ও জামায়াত করার কারণে তার পরিবারের উপর রাষ্ঠ্রীয় মদদে আসছে একের পর এক আঘাত । তিনি বলেন, তার ছোট ছেলে তাহসিন আহমদ মারজান কারো সাথে কখনো মারামারি তো দুরের কথা কোনোরুপ বাকবিতন্ডায় পর্যন্ত জড়ায়নি, কিন্ত ২০১৯ সালে তার ছোট্র ছেলে মারজানকে স্কুল থেকে ফেরার পথে কিডন্যাপ করা হয়। ভাগ্যগুনে ছেলেটি আামার বুকে ফিরে আসে ৭দিন নিখোঁজ থাকার পর। মারজানের অপরাধ সে বড়লেখা উপজেলা ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিল। প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেনে মাহমুদা খানম জানান, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাহসিন আহমদ মারজান উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য যুক্তরাজ্য গমন করে। কিন্তু অত্যন্ত দু;খের বিষয় মোহাম্মদ নগর গ্রামে সংঘটিত হত্যাকান্ডের মামলায় সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র করে পুলিশের দেয়া অভিযোগ পত্রে তাহসিন আহমদ মারজানকে হত্যা মামলার আসামী বানানো হয়েছে। উল্লেখিত ঘটনার সত্য উদঘাটনে জাতির বিবেক সাংবাদিকরা ভুমিকা রাখার পাশাপাশি উক্ত ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মাহমুদা খানম।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd