সিলেট ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মার্কিন অভিবাসন আদালতে আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে সিলেটি বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে। মামলায় ভাষা সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে সিলেটি অভিবাসীবহুল মিশিগানের অভিবাসন আদালতের বিচারক সিলেটি ভাষার দোভাষী (ইন্টারপ্রেটার) অনুমোদন করেছেন।
মিশিগান অঙ্গরাজ্যের আদালতে অভিবাসনের বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন অভিবাসীরা। দোভাষী হিসেবে বাংলাভাষী লোকজনের উপস্থিত থাকলেও অভিবাসন মামলায় জড়িয়ে পড়া সিলেট অঞ্চলের লোকজনকে নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। পাসপোর্টের সূত্র অনুযায়ী, আদালতে বাংলা ভাষায় দোভাষী রাখা হলেও সিলেট অঞ্চল থেকে আসা অভিবাসীরা প্রমিত বাংলা ভাষায় তাঁদের মামলার আবেদন ব্যাখ্যা করতে পারেন না।
মিশিগানের ট্রয় নগরের বাসিন্দা জাকারিয়া আহমদ বলেন, ২০০৭ সাল থেকে তিনি দোভাষী হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি সিলেট অঞ্চল থেকে নানাভাবে আসা লোকজনের অ্যাসাইলামের জন্য বেশি আবেদন করছেন।
জাকারিয়া আহমদ বলেন, বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল থেকে আসা লোকজনের অ্যাসাইলাম আবেদন বেশি প্রত্যাখ্যান হয়। সিলেটের গ্রামাঞ্চল থেকে আসা এসব অভিবাসীদের ভাষাগত সমস্যা টের পেয়ে তিনি সহকর্মী সাঈদ এলাহিকে নিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন। তাঁরা দেখেন, দোভাষীরা অনেক ক্ষেত্রেই সিলেটি ভাষার আবেদনকারীর মূল বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন না বা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ফেলেন।
২০১৭ সালে সিলেটর একজন বাসিন্দা তিনবার অভিবাসন বিচারকের সামনে উপস্থিত হয়েও নিজের সমস্যা ব্যাখ্যা করতে পারেননি ভাষাগত সমস্যার কারণে। নয় মাস কারাগারে থাকার পর এ অভিবাসী কিছুটা ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করেন। পরে তিনি অভিবাসন বিভাগকে জানান যে, তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের সিলেট জেলায়। তিনি সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। তখন অভিবাসন বিভাগ থেকে জাকারিয়া আহমদকে ডাকা হয়।
জাকারিয়া বলেন, বিচারক ১৫ মিনিট সময় দিয়ে অভিবাসন আবেদনকারীর সমস্যা ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিলেন। অভিবাসন আবেদনকারী জানান, বাংলা ভাষায় ব্যাখ্যা করার জন্য আগে কলকাতার বাংলাভাষী কোনো একজনকে ডাকা হয়েছিল। এ কারণে আবেদনকারী যা বলেতে চেয়েছেন দোভাষী নিজেই তা বোঝেননি।
পরে বিষয়টি বিচারককে জানালে বিচারক সিলেট সম্পর্কে জানতে চান। অভিবাসন বিচারক ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখেন, আসামের একটি অংশ ছিল সিলেট। এ অঞ্চলের ভিন্ন ভাষা সম্পর্কেও বিচারক তথ্য সংগ্রহ করে সিলেটি ভাষাকে অভিবাসন আদালতে ব্যাখ্যার জন্য অনুমোদন দেন।
জাকারিয়া আহমদ আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে ভাষাগত সমস্যার কারণে বিপাকে পড়েন সিলেট থেকে আসা অভিবাসীরা।
আমেরিকায় সিলেটি ভাষা স্বীকৃতি পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন নগরীতে বসবাসরত সিলেটিদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। অনেকেই দেশে বিদেশে পত্রিকা অফিসে ফোন করে তাদের উচ্ছাস প্রকাশ করেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd