গোয়াইনঘাটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড: দুই সন্তান নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত মা

প্রকাশিত: ১০:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২১

গোয়াইনঘাটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড: দুই সন্তান নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত মা

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: সিলেটের গোয়াইনঘাটে হতাকান্ডের শিকার একই পরিবারে তিন সদস্যের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাদ আছর নিহত আলিমা বেগমের পৈত্রালয় উপজেলার রামনগর গ্রামের একটি মাঠে জানাযার নামাজ শেষে গ্রামের কবরস্থানে তাদের (মা, ছেলে ও মেয়ের) দাফন সম্পন্ন হয়। জানযার নামাজে এলাকার শতশত মানুষ অংশ নেন।

এর আগে আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ নিহত তিনজনের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে ঘরের ভেতর তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- দিনমজুর হিফজুরের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩০) ও তাদের দুই সন্তান মিজান (১০) এবং তানিশা (৩)।

এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন হিফজুর রহমান। তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার (১৬ জুন) সকালে অনেক বেলা পর্যন্ত হিফজুরের ঘরের কেউ ঘুম থেকে উঠছিলেন না দেখে প্রতিবেশীরা হিফজুরের ঘরের সামনে যান। এসময় ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনে দরজায় ধাক্কা দেন তারা। এসময় দরজার সিটকিনি খোলা দেখতে পান তারা। ভেতরে প্রবেশ করে তারা খাটের মধ্যে তিন জনের জবাই করা মরদেহ ও হিফজুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে গোয়াইনঘাট থানায় খবর দিলে একদল পুলিশ গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে ও হিফজুরকে হাসপাতালে পাঠায়। হিফজুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে দায়ের কোপ রয়েছে।

খবর পেয়েই সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএমসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে বড় এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। হিফজুরের সঙ্গে তার মামার জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর জের থেকে হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। আবার স্ত্রীর সঙ্গেও হিফজুরের বিরোধ রয়েছে। সেটা স্ত্রীর পাশের বাড়ি যাওয়াকে কেন্দ্র করে। তাই হিফজুরকেও সন্দেহের বাইরে রাখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, হিফজুরের জ্ঞান ফিরার পর তার কথা বলার মতো অবস্থা হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তখন আসল বিষয় বেরিয়ে আসবে।

বুধবার বিকেলে সহকারী পুলিশ সুপার (গোয়াইনঘাট সার্কেল) প্রভাষ কুমার সিংহ বলেন, হিফজুরের জ্ঞান ফিরলেও তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলার অবস্থায় নেই। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি পুলিশ হেফাজতে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় কাউকে এখনও আটক করা হয়নি বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার প্রভাষ কুমার সিংহ।

মূলত: হিফুজর তার মামার বাড়িতে ঘর বানিয়ে থাকেন। তার বাড়ি পাশ্ববর্তী গ্রামে। আহত হিফজুর যে ঘরে থাকতেন ওই ঘরটি তার মায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত। আর পাশের আরও দুটি ঘরে তার মামারা থাকেন।

হিফজুর দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার মামাসহ প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে আটক করেনি পুলিশ।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..