সিলেট ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২১
ক্রাইম ডেস্ক :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চাঁদা না দেওয়ায় এক যুবকের হামলা করে হাতের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে। আহত যুবক সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার টুকেরগাঁও গ্রামের সাজু মিয়া ছেলে আকাশ (২০)।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিকভাবে আহত যুবককে মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পাঠায়। বিগত এক মাস ধরে আহত ছেলেকে নিয়ে প্রানের মায়ায় থানা পুলিশে জড়াতে ভয় পাচ্ছে সাজু মিয়া।সাজু মিয়া আরও জানান,থানায় মামলা করলে মনির আমাদেরকে মেরে ফেলবে।এলাকায় থাকতে দিবেনা। এখন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি স্যার যদি আমাদের নিরাপদে বেচে থাকার নিশ্চয়তা দেন তবে থানায় মামলা করবো। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার টুকের বাজারস্থ ভিকটিমের নিজ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সামনে।
ভিকটিমের পিতা সাজু মিয়া প্রতিবেদককে জানান, শুক্রবার ২১ মে সন্ধ্যা ৬ সময় তার নিজের আইসক্রিম ফেক্টরিতে কাজ করছিলেন।তখন উত্তর বুরদেও গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র মনির মিয়ার নেতৃত্বে তার বড় ভাই রতন মিয়া,রতন মিয়ার ছেলে কামাল মিয়া,বিল্লাল মিয়া, দক্ষিণ বুরদেও গ্রামের দুলাল মিয়ার পুত্র বিজয় সহ ৬/৭ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ছুরি/চাকু নিয়ে এসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। সাজু মিয়া তাদেরকে চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে চাঁদাবাজরা তার উপর চরাও হয়।
এ সময় ভিকটিম আকাশ মিয়া এগিয়ে আসলে কামাল ও বিজয় আকাশকে ঝাপটে ধরেন।এসময় মনির মিয়া, বিল্লাল ও রতন মিয়া ভিকটিম আকাশের বুকে, কাধে ছুরিকাঘাত করে। শুধু তাই নয় তাকে চিরতরে পঙ্গু করে ফেলতে তার বাম হাতের তিনটি রগ কেটে ফেলেন। যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে যান, যদি চাঁদার টাকা না দেওয়া হয় তবে আবারও তাদেরকে এইরকম অবস্থা করা হবে। যদি এই ঘটনার কথা পুলিশকে জানানোর চেষ্টা করা হয় তবে সবাইকেই খুন করে ফেলবো।আর পুলিশকে জানালেও আমার কিছুই হবেনা, কারন আমার বাসাতে পুলিশের অনেক কর্মকর্তারা ভাড়া থাকেন। পূর্বেও কামাল ও তার বড় ভাই বিল্লালের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এম সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলামের উপর হামলাসহ এলাকায় বখাটেপনার অনেক অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম কর্তক দায়েরকৃত মামলায় বিল্লাল এজাহারভূক্ত অন্যতম আসামী রয়েছে। খোজ নিয়ে জানা যায় মনির মিয়ার সাথে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রতিনিয়তই উঠাবসা হয়।প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের সাথে মনিরের ভালো সম্পর্ক থাকায় সে যেন অনেকটা ব্যাপরোয়া প্রকৃতির হয়ে উঠেছে।
মনিরের মা খুশি বেগম জানান, মনির আমার ছেলে হলেও সে মানুষ ভালো না।সে আমাদের খরপোস দেয় না।সে বাড়ি গাড়ির মালিক হলেও আমাদের সে ভাত কাপর দেয় না।মনির আমাকে তার বাড়িতে যায়গা দেয়না তাই আমি আমার মেয়ের স্বামীর বাড়িতেই থাকি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ব্যবসায়ী খাইরুল আমিন জয় জানান,ঘটনাটি আমার দোকানের পাশেই ঘটেছে।এইরকম রক্তাক্ত ঘটনা আমি প্রথম দেখলাম।হামলা শেষে আমার সামনে দিয়েই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।আমি অপরাধিদের শাস্তি কামনা করছি। প্রত্যক্ষদর্শী সুটকি ব্যবসায়ী রুসমত আলী,আবেদ আলী ও জুতার ব্যবসায়ী মতিন মিয়া জানান, আকাশ ছেলেটা খুব ভদ্র। তার উপর এভাবে অতর্কিত হামলা হবে আর হামলাকারীদের শাস্তি হবে না তা আশা করা যায় না।শিগ্রই আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
হামলাকারী মনির মিয়ার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, বিষয়টি মিমাংসাধীন।কোনো পক্ষই থানায় মামলা করবেনা।হামলায় তার ভাতিজা কামাল ও ভাগ্না বিজয় অংশ নিয়েছেন স্বিকার করেন মনির মিয়া।তবে হুমকির কথা সে অস্বিকার করে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল জাহান কাজল বলেন, বিষয়টি শুরুতেই শুনেছিলাম। সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। কিন্তু ভিকটিম আমাদেরকে কিছু যানায়নি। তারা যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তবে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd