সিলেট ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৫৭ অপরাহ্ণ, জুন ৯, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা একটি প্রতারক চক্র ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে ১৫ লাখ টাকা চুক্তি করে অগ্রিম ৫লাখ টাকা নেয়।
কিন্তু ইউরোপ পাঠাতে ব্যর্থ হলে পুলিশের এসআই পদে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করতে শুরু করে টালবাহানা। টাকা চাইলে উল্টো হামলা চালায়। মঙ্গলবার (৮ জুন) মঙ্গলবার কুলাউড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন প্রবাসীর স্ত্রী রহিমা আক্তার নামক এক ভুক্তভোগী।
জানা যায়, রহিমা আক্তারের স্বামী সৌদি প্রবাসী মুজিবুর রহমান। ছেলে হাবিবুর রহমান শিপুকে ইউরোপের ফ্রান্সে পাঠানোর কথা বলে ৩ বছর পূর্বে চাঁন্দপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন ও আবুল হোসেনের সাথে ১৫ লক্ষ টাকা চুক্তি করা হয়। চুক্তি মোতাবেক ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম প্রদান করেন। কিন্তু তারা ফ্রান্স পাঠাতে ব্যর্থ হলে ১৮ লক্ষ টাকায় পুলিশের এসআই পদে চাকুরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কালক্ষেপন শুরু করে। কিন্তু বিদেশ পাঠানো ও চাকুরি প্রদানে ব্যর্থ হলে আবুল ও নাসিরের নিকট ৫ লক্ষ টাকা ফেরৎ চাইলে টাকা দিতে অস্বীকার করে এবং এই টাকা দাবী করলে নানাবিধ মামলা-হামলা এমনকি তাঁর ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।
এনিয়ে এলাকায় সালিশি বৈঠকে বসলে নগদ ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ ও সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক সিলেট শাখার (চেক নং-০১০৩১০০০০০৬৬০) চেক দেয় নাসির ও আবুল। কিছুদিন পর আমার ছেলে শিপু সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা আবুলের নিকট ফেরৎ চাইলে আবুল পুনরায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একদিন আমার ছেলে শিপুকে বাড়ীর গেইট থেকে অতর্কিতভাবে মুখ বেঁধে রাতে ধরে নিয়ে যায় আবুল গংরা। নির্জন স্থানে নিয়ে আমার ছেলেকে বেধড়ক মারপিট করে। মৃত ভেবে ভারতীয় সিমান্তের কাঁটাতারের পাশে ফেলে দেয়। পরে এলাকার লোকজন শিপুকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশ বসিয়ে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে মিমাংসার আশ্বাস দেন। কিন্তু এ ব্যাপারে আজও কোন সালিশ হয়নি।
ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী রহিমা আক্তার জানান, ঈদুল ফিতরের পর গত ১৫ মে সোমবার সন্ধ্যায় আমার ছেলে শিপু সেই সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা আবুলের কাছে ফেরত চাইতে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। তখন আবুল ও তার সাথে থাকা কয়েকজন লোক আমার ছেলে শিপুর উপর চড়াও হয়। এ সময় ছেলের চিৎকারে আমি ঘটনাস্থলে গেলে আমাকে ও আমার ছেলেকে মারপিট করে আবুল ও তার সহযোগিরা। গুরুতর আহত অবস্থায় আমি ও আমার ছেলে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহন করি। ঘটনার দু’দিন আমরা চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আমিসহ আমার পরিবারের সকলকে আসামী করে কুলাউড়া থানায় আবুলের চাচাত ভাই আলফাজ মিয়া বাদি হয়ে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার করার পর তারা আমার বাড়ীতে বিভিন্ন সময় র্যাব সেজে প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার লোক পরিচয় দিয়ে আমার বাড়ীতে ভাঙচুর করে ভয়ভীতি দেখায়। এমনকি আমার ছেলে শিপুকে র্যাব ধরে নিয়ে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
ভুক্তভোগী আরও বলেন, এমতাবস্থায় আদালত থেকে জামিন নেয়ার পরও বাড়ীতে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিনা। আবুল গংরা আমি বাড়ীতে গেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাই আদালতের শরণাপন্ন হয়ে আবুল হোসেন (৩৫) সামিম হোসেন (৪০) উভয়ের পিতা মৃত মফিজ আলী, নাসির উদ্দিন (৫০) পিতা মৃত আহমদ আলী, আলফাছ আলী (২৫) পিতা মৃত মউর আলী, মরহম আলী (৪২) পিতা উম্মর আলী, মো. শাহরু হোসেন (১৮) পিতা মৃত আব্দুল বাছিত, মো. মুক্তাদির আলী (১৭) পিতা মরহম আলীর বিরুদ্ধে মামলা দাযের করি। উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তক্রমে প্রশাসনের কাছে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান রহিমা আক্তার।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd