সিলেট ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:০২ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২১
বিএনপির ৪৫ নেতাকর্মীর নামে পুলিশের মামলা
ছাতক প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীর সাথে আওয়ামীলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশংকাজনক। তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থক বলে জানা গেছে। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছাতক বাজারে।
সরেজমিন জানা যায়, গতকাল ছাতক উপজেলা বিএনপি বিভিন্ন দাবীতে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। আনুমানিক বেলা ২টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের দুই জন কর্মী রিকশাযোযোগে ছাতক কলেজে যাবার পথে বিএনপি অফিসের সামনে আসলে বিএনপি সমর্থকেরা তাদের রিকশার চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়। এরই জের ধরে বেলা ৩টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে বিএনপি অফিসের দিকে আসলে উভয়পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সংঘর্ষকারীদের ছাত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে বিএনপি সমর্থকদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে ৪/৫ জন আওয়ামীলীগ সমর্থক আহত হয়েছেন। তন্মধ্যে ১ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরই প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে লাঠিসোটা হাতে বিশাল মিছিল নিয়ে বিএনপি অফিসের দিকে আসলে পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়। এসময় সাবেক এমপি বিএনপি নেতা কলিম উদ্দিন মিলনের নেতৃত্বে কয়েক’শ বিএনপি নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামীলীগের মিছিলে হামলার চেষ্টা চালায়। তখন উভয় পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। শুরু হয় সংঘর্ষ। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি আক্রমন। ককটেল বিস্ফোরণ ও দেশীয় অস্ত্রের ঝনঝনানিতে এলাকায় আতংক নেমে আসে। পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ ৬৫টি টিআর সেল, ১৯৪ রাউন্ড শর্টগানের ফাকা গুলি নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে সংঘর্ষকারীরা। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ করলে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। আহত পুলিশ সদস্যদের হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় এসআই মোঃ এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে বিএনপির ৪৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪শ জনকে আসামী করে ছাতক থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামীরা সবাই সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার বাসিন্দা। তারা হলেন- মৃত হাবিব উল্লাহর পুত্র কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বাগবাড়ি এলাকার মৃত আং ওয়াহিদের পুত্র জসিম উদ্দিন সুমেন, জাউয়া এলাকার মোঃ মশাহিদ আলীর পুত্র মোঃ রবিউল করিম, বাগবাড়ি এলাকার মৃত বেনু মিয়ার পুত্র কার্জন, হিফজুল বারী @ শিমুল, আং মোতালিব @ আং মুক্তাদিরের পুত্র মামুনন, চরভরা গ্রামের সোনাহর আলীর পুত্র সুলেমান আহমদ, আং মোতালিব @ আং মুক্তাদিরের পুত্র মুহিত, দুদু মিয়ার পুত্র জাহেদ, একলাছ মিয়ার পুত্র পাবেল ও রাহেল, মাওলানা আং করিমের পুত্র বাকী বিলাহ, ইব্রাহিম আলীর পুত্র সুলেমান, কামিল, শেবুল, পাপ্পু, সাদেক, আরিফ বিল্লাহ, সোহাগ, জুম্মন, মনি, জীবন, তপন, লিমন, বাকী, রুবেল, মোহাগ, আবিদ, রিপন, বিপব, সাইফ উদ্দিন, সালমান, মতিউর রহমান, খোকন, সানি, রনি, ইমরান, লায়েক, শাহিন, সামছুর রহমান বাবুল, সামছুর রহমান সামছু, খাইরুদ্দিন, রিপন খান, কায়েছ আহমদ গং সহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪শ জন।
এ ব্যাপারে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি জানান, উশৃঙ্খল বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলায় পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বেপরোয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ককটেল বিস্ফোরন, টায়ারে আগুন দেয়া সহ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েও বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে। তার মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয় নাই। তবে আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযানে রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd