সিলেট ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:০৮ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২১
স্টাফ রিপোর্টার :: চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেছ শিশু সাব্বির হোসেন (১৩) হত্যা মামলার প্রধান আসামী অলিল মিয়া অলি সিলেট শাহপরান থানাধীন উপশহর তেররতন এলাকা থেকে গ্রেফতার। গ্রেফতাকৃত আসামী অলিল মিয়া অলি (৩৫) মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া রবির বাজারের মৃত বাদল মিয়া ড্রাইভার এর ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাহার ভাবী রাবিয়া খাতুনের সহিত পরক্রিয়া সম্পর্ক হওয়ায় তাহার ভাইয়ের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়। রাবিয়া খাতুন উক্ত আসামীর সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা থাকলেও উক্ত আসামীকে বিবাহ না করে জুড়ি থানা এলাকার জনৈক আয়নুল হক মস্তান মিয়াকে বিবাহ করে। এই আক্রোশে উক্ত আসামী রাবিয়া খাতুনের শিশু ছেলে সাব্বির হোসেন (১৩) কে গত ২৮/০২/২০২১ ইং তারিখ আখাউড়া এলাকায় তাহার সৎ পিতা আব্দুশ সহিদ এর বাসা হইতে কৌশলে ছাতক থানাধীন তাহার সহযোগী আসামী তাজুল মিয়া (খসরু মিয়া)’র বাড়ীতে তাহার ভাড়া করা রুমে নিয়ে আসে। একদিন সেখানে অবস্থান করার পর গত ০১/০৩/২০২১ ইং তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ১২.৩০ টার সময় ঘুমের মাঝে শিশু সাব্বির হোসেনকে গলায় গামছা দিয়ে পেচিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। লাশ কাঁথা ও কম্বল দিয়ে ডেকে রুমে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনার পর গত ০৩/০৩/২০২১ ইং তারিখ সন্ধা সময় রুম থেকে দূর্গন্ধ বাহির হওয়ায় ঘটনায় সহযোগী আসামী তাজুল মিয়া (খসরু মিয়া) ও তাহার স্ত্রী সুফিয়া বেগম তাহাদের সহযোগী আসামীদের সহযোগীতায় খুনের ঘটনাটি আড়াল করার জন্য লাশটি উক্ত রুম থেকে বাহির করে তাহাদের বসতঘরের পিছনের রুমে নিয়ে যায় এবং তরল ধার্য্য পদার্থ দিয়ে মৃতের মুখমন্ডল সহ শরীর বিকৃত করে ঝলসিয়ে দেয় এবং খসরু মিয়া প্রথমে তাহার বসত ঘরের পিছনে কচু বাগানে নিয়ে কাঁথা ও কম্বল দিয়ে পেচিয়ে লুকিয়ে রাখে। তারপরও প্রচুর দুর্গন্ধ বাহির হওয়ায় ঐ দিন দিবাগত রাত্র অর্থাৎ ০৪/০৩/২০২১ ইং শেষ রাত্র ০৩.০০ টার সময় ছাতক থানাধীন লাফার্জঘাটের দক্ষিন পার্শ্বে দক্ষিন বাগবাড়ী হাওরে লাশটি লোক চক্ষুর আড়ালে ফেলে রাখে।
উল্লখ্য যে গত ০৪/০৩/২০২১ ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০টার সময় ছাতক থানাধীন দক্ষিন বাগবাড়ী সাকিনস্থ্য জনৈক হাজী বাবুল মিয়ার পতিত জমিতে বিকৃত করা লাশটি স্থানীয় জনগন দেখতে পেয়ে ছাতক থানায় খবর দেন।
ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ সাহেবের নির্দ্দেশে ছাতক এসআই মাসুদ রানা মৃত (লাশটির) সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের লক্ষে লাশ পোষ্ট মডেমের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতালে প্রেরন করেন। মৃতের কোন পরিচয় , দাবিদার বা হত্যার কোন ক্লু না পাওয়ায় এসআই মাসুদ রানা নিজেই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ছাতক থানার মামলা নং-০৬ তারিখ-০৪/০৩/২০২১ইং ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
সুনামগঞ্জ জেলার মান্যবর পুলিশ মিজানুর রহমান বিপিএম মহোদয় সহ ছাতক সার্কেল মোঃ বিল্লাল হোসেন , অফিসার ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন সাহেবের দিক নির্দ্দেশনায় চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেছ মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই হাবিবির রহমান পিপিএম দ্রুত সময়ের মধ্যে চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করিতে সক্ষম হন এবং মৃত অজ্ঞাতনামা শিশুর পরিচয় সনাক্ত করিতে সক্ষম হন। মৃত কিশোরের নাম সাব্বির হোসেন(১৩) পিতা- বাবুল হোসেন, সাং- নয়াগ্রাম , থানা- জুড়ি, জেলা- মৌলবীবাজার।
ছাতক থানাধীন পৌর এলাকার দক্ষিন বাগবাড়ী সাকিনস্থ আসামী তাজুল মিয়া (খসরু মিয়া)’র বসতঘরেই শিশু সাব্বির হোসেনের হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হওয়ার পর আসামী খসরু মিয়া তাহার স্ত্রী সহ মৃত দেহ ধার্য পদার্থ দ্বারা পোড়াইয়া বিকৃত করা সহ লাশ ঘুম করার ঘটনায় জড়িত থাকায় ছাতক থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান পিপিএম এর নেতৃত্বে ছাতক থানা পুলিশ আসামী ১! তাজুল মিযা খসরু (৫৫)পিতা- মৃত আব্দুস সামাদ , সাং- নরশিংপুর, থানা-দোয়ারা বাজার, বর্তমানে- দক্ষিন বাগবাড়ী (লেবার পাড়া), থানা-ছাতক, জেলা- সুনামগঞ্জ এবং তাহার স্ত্রী আসামী ২! সুফিয়া বেগম(৪৫) স্বামী- তাজুল মিয়া @ খসরু , সাং- নরশিংপুর, থানা-দোয়ারাবাজার, জেলা- সুনামগঞ্জ দ্বয়কে গত ২৩/০৫/২০২১ইং তারিখ আসামীদের নিজ বাড়ী হইতে গ্রেফতার করিতে সক্ষম হন। গ্রেফতারকৃত আসামী দুইজন মামলার ঘটনায় জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে কাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় সেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করে এবং শিশু সাব্বির হোসেনকে মুল হত্যাকারী অলিল মিয়া (অলি)’র নাম প্রকাশ করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মতে গোয়েন্ধা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সহকারী পুলিশ সুপার ছাতক সার্কেল জনাব বিল্লাল হোসেন সাহেবের নেতৃত্তে ছাতক থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান পিপিএম ছাতক থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামী অলিল মিয়া অলিকে গত ২৭/০৫/২০২১ ইং তারিখ বিকাল ১৭.৩০ঘটিকার সময় সিলেট শাহপরান থানাধীন উপশহর তেররতন এলাকা হইতে গ্রেফতার করেন।
চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সহ দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করায় ছাতক থানা তথা সুনামগঞ্জ জেলা সহ বাংলাদেশ পুলিশকে সুনামগঞ্জ ছাতক বাসী ধন্যবাদ জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd