সিলেট ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৯ পূর্বাহ্ণ, মে ২৩, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: সিলেটের বিমানবন্দর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৩জন অপহরণকারী ও একজন মহিলা মানবপাচারকারী রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। শনিবার (২২ মে) সকালে বিমানবন্দর থানা পুলিশ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রায় ৪ বছর পূর্বে সিলেটের ঘাসিটুলা এলাকা থেকে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যায় পান্না বেগম (৪০) নামের এক প্রতিবেশী। চেন্নাইয়ে নিয়ে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি করার জন্য ভারতীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। এরপর থেকে একটানা দুই বছর সে ভারতের চেন্নাইয়ে বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়তে হয় কিশোরীকে। সেখানে থাকাবস্থায় রেবা বেগম ওরফে মীম (৩০) এর সাথে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে বছর দুই আগে ভারতের এক লোকের সহায়তায় ভিকটিম চেন্নাই থেকে পালিয়ে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে আসে। মীমের সাথে ঘনিষ্ট সর্ম্পক থাকায় সে দেশে এসে তার সাথে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। পরে মীম কিশোরীকে আশ্বস্থ করে তার গ্রামের বাড়িতে তাকে পৌঁছে দিবে। কিন্তু মানব পাচারকারী মীম (৩০) ভিকটিমকে কৌশলে তার গ্রামের বাড়ি থেকে সিলেটের বাদামবাগিচার একটি বাসায় নিয়ে আসে। ওই বাসায় কিশোরীকে জিম্মী করে তাকে নানারকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে।
এক পর্যায়ে ভিকটিম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে মীমের বাসা থেকে পালিয়ে হাউজিং এষ্টেট এলাকায় চলে আসে। সেখানে সিএনজিঅটোরিক্সা চালক রুবেল (২৯) এর নিকট সহায়তা চাইলে সে তাকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে অন্য এক সিএনজি চালক মামুন (২৬) এর সহায়তায় ভিকটিম বর্তমান ফরহাদ আহমদ (২৬) এর বাসায় আশ্রয় গ্রহণ করে। এরপর গত ২০ মে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে জোর পূর্বক অপহরণকারীরা ছোরার ভয় দেখিয়ে আশ্রয়দাতা ফরহাদ আহমদকে অপহরণ করে একটি সিএনজি অটোরিকশা করে বাদামবাগিচা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায় এবং ফরহাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবী করে। বিষয়টি জেনে ফরহাদের স্ত্রী ৬ হাজার টাকা আরেক সিএনজি ড্রাইভার আনোয়ারের মাধ্যমে টাকা দেয়ার জন্য গ্রেফতারকৃত মিশু আহমদ (৩৩) নিকট পাঠায়। একপর্যায়ে ফরহাদ বাধ্য হয়ে অবশিষ্ট ৪৪ হাজার টাকা পরে দেয়ার কথা জানালে গ্রেফতারকৃতরা ফরহাদ আহমদের সমস্ত কথা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রেখে তাকে ছেড়ে দেয়।
সিলেট বিমানবন্দর থানার ওসি মাইনুল ইসলাম জাকির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী দলের সদস্য মীম ও অপহরকারী চক্রের আরও ৩ সদস্যসহ মোট ৪জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় কিশোরী ভিকটিম ও ফরহাদ আহমদ থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার কাদিরপুর গ্রামের শামীম আহমদের স্ত্রী রেবা বেগম ওরফে সুমি ওরফে মীম (৩০), বিমানবন্দর থানাধীন বাদামবাগিচা এলাকার ১নং রোডের ৬৩নং বাসার সেলিম মিয়ার ছেলে শাহেদ আহমদ (৩৩), সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার মাছিমপুর গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৩)ও খাসদবির এলাকার বন্ধন বি/২৩ নং বাসার মৃত রফিক মিয়ার ছেলে ইমন আহমদ (৩২)।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd