সিলেট ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজে এবার আহত হয়েছেন নগরীর দুই সাংবাদিক। দৈনিক বণিক বার্তার স্টাফ রিপোর্টার ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু এবং এটিএন বাংলার ক্যামেরাপার্সন ইকবাল মুন্সি রাস্তায় ফেলে রাখা সামগ্রীর জন্য মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন। সোমবার দেবাশীষ দেবু নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানিয়েছেন।
দেবাশীষ দেবু ফেসবুকে নিজের স্ট্যাটাসে লিখেন, কোনোরকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিটি করপোরেশের উন্নয়ন কাজের বলি হয়ে কিছুদিন আগে মারা গেছেন এক প্রবীণ নাগরিক। আজ আমাদের ক্ষেত্রেও সেরকম কিছু ঘটতে পারতো! গতরাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শাহ মুজিবুর রহমান জকন ভাই। মধ্যরাতে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই আমি, ইকবাল মুন্সি ও গোলজার আহমদ। শেষরাতে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়। ভোরে বৃষ্টি থামলে আল হারামাইন হাসপাতাল থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে জিন্দাবাজারের দিকে ফিরছিলাম। জিন্দাবাজার-বারুতখানা সড়কের উন্নয়ন কাজ করছে সিটি করপোরেশন। জেলরোড পয়েন্টের কাছে সড়কের মাঝেই উন্মুক্তভাবে স্তুপ করে ফেলা ছিলো পিচঢালার গালাসহ বিভিন্ন সামগ্রী। বৃষ্টিতে সড়কে জল জমে যাওয়ার এগুলো দেখা যায়নি। মোটরসাইকেল নিয়ে এই স্তুপে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাই আমরা। ফাঁকা সড়কে আমাদের টেনে তোলারও তখন কেউ ছিলো না। হাত-পা ছিলে গেছে। আমার চেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে মুন্সী। পায়ে তার গুরুতর জখম। তবে তারচেয়েও গুরুতর কিছু ঘটতে পারতো। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে উন্নয়ন কাজ আর কত?
এর আগে সিলেট সিটি কর্পোরেশণের উন্নয়নের বলি হয়েছিলেন বিশিষ্ট কবি, ছড়াকার ও সাবেক শিক্ষক নেতা আব্দুল বাসিত মোহাম্মদ। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট বিভাগ। একই সঙ্গে আবদুল বাসিত মোহাম্মদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের জন্য দুর্ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের লেখালেখিতে চরম ক্ষিপ্ত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সাংবাদিকরা যেনো এ বিষয়ে ঘাটাঘাটি না করেন বারবার তিনি এমনটিই আচরণে প্রকাশ করেন।
গেল বছরের ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর আম্বরখানার হুরায়রা ম্যানশনের সামনে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্মাণাধীন ড্রেনে পড়ে কবি আবদুল বাসিত মোহাম্মদের পেটের মধ্যে রড ঢুকে যায়। এ সময় তিনি গুরুতর আহত হন। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুÕদিন এমএজি ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর ১০ ডিসেম্বর সকালে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সিলেটের সচেতন মহল ঘটনাটিকে হত্যাকান্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। এর জন্য সিলেট সিটি করপোরেশনকে দায়ী করেছিলেন। দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার জন্য নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে আহবান জানিয়েছিলেন।
বাসিত মোহাম্মদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আবদুল বাসিত মোহাম্মদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সিলেটের জেলা প্রশাসককে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী সৈয়দ ফজলে ইলাহী ও গোলাম সুবহান চৌধুরী এ রিট দায়ের করেন। স্থানীয় সরকার সচিব, সিলেটের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত কমিটির ঘটনাস্থলে পরিদর্শনের খবরে হাজির হয়েছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এসময় সাংবাদিকরা এ বিষয়ে মেয়রের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি চরম বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, যেনোও যাও তোমরা অচু ফাতাই দেও।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd