সিলেট ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০২১
আশিস রহমান : ‘সামন্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। চলাচলের রাস্তা থাকেনা। বর্ষাকালে সবসময়ই ঘরবন্দী থাকতে হয়। তখন কখনো সাঁতরে আবার কখনো বাঁশের সাঁকো পার হয়ে চলাচল করতাম।
এসময় বাড়ির স্কুল পড়ুয়া শিশুরা স্কুলে যেতে পারতো না। এখানকার প্রায় সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। ঘরবন্দী হয়ে তো আর জীবন চলেনা। জীবিকার তাগিদে কাজের সন্ধানে নারী-পুরুষ সবাইকেই ঘরের বাইরে বের হতে হয়। পানিতে ভিজে, কাদামাটি মাড়িয়ে চলাফেরা করে আমরা অভ্যস্ত হয়েগেছি। শুকনো মৌসুম ছাড়া বছরের বাকি সময়টুকু আমরা এভাবেই যাতায়াত করি। আমাদের এই ভোগান্তি নিরসনের চিন্তা এতোদিন পর্যন্ত কেউ করেনি। এতো বছর পর এখন আমাদের চলাফেরার সুযোগ হয়েছে। বর্ষাকালে বাড়িতে আসা যাওয়া করতে এখন আর পানিতে ভিজতে হবেনা।’ প্রায় ৫০ বছর পর গ্রামের সংযোগ রাস্তা পেয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এভাবেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন নূরপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন, আব্দুল হান্নান, মিনার উদ্দিন, গৃহিণী রহিবুন্নেছা, রাবেয়া খাতুন, শিক্ষার্থী রহিম উদ্দিনসহ আরো অনেকে। তাদের ভাষ্যমতে এমপির টিআর বরাদ্দ শুধু অপচয় হয়না, কাজও হয়।
সম্প্রতি সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান মানিকের দেওয়া টিআর বরাদ্দে রাস্তা পেয়ে খুশী দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের বাসিন্দারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের নাসির উদ্দিনের বাড়ি থেকে প্রধান সড়ক পর্যন্ত, আব্দুল হাসিমের বাড়ি থেকে পিয়ারা মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত, আলাউদ্দিন মিয়ার বাড়ি থেকে আব্দুল হান্নানের বাড়ি পর্যন্ত সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর সুফল ভোগ করবে এখানকার প্রায় শতাধিক পরিবার।
শুধু নূূরপুর-ই নয়, একই বরাদ্দে পার্শ্ববর্তী নন্দীগ্রামের আব্দুল মজিদের বাড়ি থেকে আব্দুল হাসিমের পুকুর পাড় পর্যন্ত, তাজ উদ্দিনের বাড়ি থেকে গ্রামের প্রধান সড়ক পর্যন্ত, নন্দীগ্রাম-সিরাজ নগরের এমরাজ মিয়ার বাড়ি থেকে গ্রামের প্রধান সড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে । এই সংযোগ সড়কগুলো নির্মিত হলে প্রায় দুুই শতাধিক উপকারভোগী পরিবার বর্ষাকালে পানিবন্দী হওয়া থেকে রেহাই পাবে। সারা বছর তারা যাতায়াতের সুবিধা পাবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ জানান, স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির উদাসীনতার কারণে প্রায় ৫০ বছর ধরে গ্রামের বিভিন্ন পাড়ার মানুষ চলাচলের কোনো রাস্তা পায়নি। অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের জনবান্ধব সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক মহোদয়কে।
সম্প্রতি গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে উনার কাছে গিয়ে রাস্তার চাহিদা জানানো হলে তিনি আমাদেরকে নিরাশ করেননি। গ্রামের সাধারণ মানুষের চলাচলের দুর্দশা নিরসনে এমপি মহোদয় টিআর বরাদ্দ দেওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। কয়েকটির কাজ অতি শিঘ্রই শেষ হবে। কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে এই এলাকায় বাঁশের সাঁকোর যুুুগের অবসান ঘটবে। দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আম্বিয়া আহমদ জানান, আমি খোঁজ খবর নিয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যেও আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কাজ হয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd