সিলেট ১৬ই জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪২ হিজরি
প্রকাশিত: ২:২১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
Sharing is caring!
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ২০২০ সাল। মহামারি করোনাভাইরাস থমকে দিয়েছিল জীবন। এ মহামারি ছাড়াও নানা ঘটনায় বছরটি পার হচ্ছে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও পুলিশ হেফাজতে যুবক রায়হান আহমদের মৃত্যু। এ দুটি ঘটনা শুধু সিলেট নয়, সারাদেশকে নাড়া দিয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক পরিসরেও আলোচিত হয় ঘটনা দুটি।
এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ :১২৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ছাত্রাবাসের ভেতরে প্রাইভেটকারের মধ্যেই গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ঘটনার প্রতিবাদে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্নিষ্টরা রাজপথে নামেন। ক্ষোভ, ঘৃণা ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সিলেট। প্রবল আন্দোলনের মুখে একে একে সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দেশব্যাপী আলোচিত এ ঘটনায় ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ (রহ.) থানার ইন্সপেক্টর ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। এতে অভিযুক্ত করা হয় সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার সোনাপুরের চান্দাইপাড়ার তাহিদ মিয়ার ছেলে সাইফুর রহমান, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক, হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর, দিরাই উপজেলার জগদল গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম, কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম, মিসবাহ উর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে। ৮ জনের মধ্যে ৬ জনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসানের ছাত্রত্ব ও সনদ বাতিল করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিস্কারও করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু :সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ১০ অক্টোবর রাতে নগরীর আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে কাষ্টগড় এলাকা থেকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। সারারাত তার ওপর নির্যাতন করা হলে ১১ অক্টোবর সকালে মারা যান তিনি। প্রথমে ছিনতাই করতে গিয়ে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করে। পরে আসল ঘটনা বেরিয়ে এলে একের পর এক আন্দোলন শুরু হয় সিলেটে। রায়হানের পরিবারের পাশে দাঁড়ান সব পেশার মানুষ। আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই ৯ নভেম্বর মূল অভিযুক্ত বরখাস্ত হওয়া পুলিশের এসআই আকবর হোসেনকে সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী তামান্না বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত কোতোয়ালি থানার তখনকার ইন্সপেক্টর সৌমেন মৈত্র, বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এসআই বাতেন, এসআই হাসানসহ ৯ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ পর্যন্ত এসআই আকবর, এএসআই আশেক এলাহি, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস ছাড়াও ঘটনার রাতে ছিনতাইর অভিযোগকারী সেখ সাইদুর রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা কারাগারে রয়েছেন। দু-একদিনের মধ্যে আলোচিত এ মামলার চার্জশিট প্রদানের কথা রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই ইতোমধ্যে মামলার চার্জশিট প্রস্তুত করেছে বলে জানা গেছে।
………………………..
Design and developed by best-bd