আগামীকাল সোমবার এ ‘ ট্রায়াল ইলেকশন’। যেখানে নির্বাচন বা সিলেকশনের ব্যাপারে প্রকাশ্যে ভোটারদের হ্যা-না মতামতের নামে ভোট নেওয়া হবে। এতে ২৭ জন ভোটারের গোপনীয়তা ফাঁস হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠন করার কাজ শেষ হয়েছে। এবার ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল সামনে। সেখানে নির্বাচনের মাধ্যমে একটা কমিটি গঠন করার কথা। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক পেতে সুবিধার জন্য ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ পদটি ভাগিয়ে নিতে পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। বিষয়টি দলের বাইরে গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে জেলা কমিটির চাপের মুখে পড়ে লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। গত শুক্রবার রাতে লালাবাজারের আরমান আলী কমপ্লেক্সে আহ্বায়ক কমিটি এ বিষয়ে জরুরি সভা ডাকে। কিন্তু পকেট কমিটি থেকে বের হতে পারেনি আহ্বায়ক কমিটি। সুযোগ সন্ধানী প্রার্থীকে সাধারণ সম্পাদক করে পকেট কমিটি করতে সভায় আগামীকাল সোমবার ভোটারদের নিয়ে পরামর্শ সভা করার ঘোষণা আসে। এর ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা বিতর্ক জন্ম নিয়েছে।
অভিযোগ ওঠেছে, ২৭ জন ভোটার গোপন ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের কথা। কিন্তু পরামর্শ সভার নামে তাদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি একটি কৌশলে ‘ট্রায়াল ইলেকশন’ করে নিচ্ছে। যেখানে প্রার্থীদের কোনো গোপনীয়তা থাকবে না। তারা যদি ভোট চায় বা সমঝোতা চায় বলে মত দেন, তাহলে ভোটাররা দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাবেন। যাদেরকে সনাক্ত করে ফেলবেন প্রার্থী অথবা আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা। এতে গোপন ভোটের আগে ভোটাররা প্রার্থীদের চাপে পড়ে যেতে পারেন বলেও শঙ্কা রয়েছে। অথবা ভোটাররা কিছু প্রার্থীর রোষানলেও পড়ে যেতে পারেন। এবং এই ট্রায়াল ইলেকশন দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী বলেও প্রার্থীরা মনে করছেন।
স্থানীয় বিএনপির নেতারা জানান, জেলার পরিস্কার নির্দেশনা রয়েছে যে, ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে একাধিক প্রার্থী থাকলে তাদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বসতে পারে। কিন্তু ভোটারদের নিয়ে গোপন ব্যালটের আগে বসার কোনো নিয়ম নেই। প্রার্থীরা যদি বসে সমঝোতায় কমিটি মানেন, তা করা যাবে। কিন্তু যদি তাদের একজন প্রার্থীও ভোট চান, তাহলে গোপন ভোটেই কমিটি করতে হবে।
লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির প্রধান আহ্বায়ক জাহির আলী বলেন,‘ আমরা ভোটারদের নিয়ে একটা পরামর্শ সভা করতে যাচ্ছি। তাদের কাছে জানতে চাইবো, তারা ভোট চান নাকি সিলেকশন চান।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন,‘ লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির পকেট কমিটির ব্যাপারে আমরা জানতে পেরেছি। কোনো অবস্থাতেই পকেট কমিটি হবে না। জেলা থেকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হবে। আহ্বাক কমিটি প্রার্থীদের বসতে পারেন, তারা যদি সমঝোতা না চায় তাহলে গোপন ব্যালটে কমিটি হবে। এর বাইরে কিছু করা যাবে না।’