সিলেট ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতৈল গ্রামের বাসিন্ধা মছদ্দর আলীর ছেলে আব্দুল করিম ওরফে বেন্ডটিস করিম সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বুঙ্গার টাকায় কোটিপতি হয়ে এখন সে সীমান্তের রাজা। বেন্ডটিস করিমের এক মসয় নুন আনতে পান্তা ফুরাতো। এখন সে হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। চলাফেরা দেখলে মনে হয় বেন্ডটিস করিম আলাদিনের চেরাগ। সে এক সময় মোকাম পুঞ্জির খাসিয়াদের শ্রমিক হিসাবে হাজার টাকা মজুরিতে কাজ করতো। সম্প্রতি স্থানীয় জৈন্তাপুর থানা ও সীমান্ত বিজিবি ক্যাম্প গুলোর সাথে তার একটি সু-সম্পর্ক তৈরী হয়। এই সম্পর্কের সুবাদে সীমান্তের চোরাই লাইনের টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব নেয় বেন্ডটিস করিম। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আর সেই বুঙ্গার লাইন থেকে তিনি এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলায় যার রয়েছে বিলাশ বহুল দুই বাড়ি ও একাধীক গাড়ী সহ অধিক জমি-জমা। এখন তিনি সীমান্তের রাজা। এলাকার লোকজন তাকে সীমান্তের রাজা হিসাবে চিনেন। প্রতিদিন রাতে তার রাজ্য থেকে লেনদেন হয় লাখ লাখ টাকা। এই সকল টাকার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়মিত স্থানীয় প্রশাসনের নিকট পাঠিয়ে দেন করিম। বর্তমানে করিম ও তার ভাগিনা রুবেল এবং লেপটিন শহীদ এই তিনজনই বিজিবি-পুলিশের এই দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসছে ভারতীয় অবৈধ পণ্য এবং এসবের প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে বুঙ্গার লাইনম্যান সীমান্তের রাজা বেন্ডটিস করিম ও লেপটিন শহিদ। তারা প্রতিদিন রাতের আধাঁরে চোরাচালানকারীদের নিকট থেকে এই টাকা আদায় করেন। এই তিনজনের মধ্যে বেশি দায়িত্ব বেন্ডটিস করিমের কাঁধে। তাদের নেতৃত্বে বানের পানির মত সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় নাছির বিড়ি মদ, ইয়াবা, মোটরসাইকেল গাড়ি, মোবাইল ও কসমেট্রিক্স গবাদিপশু গরু সহ ইত্যাদি সামগ্রী।
সীমান্তের রাজা করিম তার লোকজন নিয়ে বিজিবি ও পুলিশের নামে চাঁদা অাদায় করে। যারফলে অবাধে সীমান্ত দিয়ে রাতের আধাঁরে আসা-যাওয়া হচ্ছে বুঙ্গার মাল। নিরবে ঘুমিয়ে থাকে স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে জৈন্তাপুর সীমান্তের ৪৮ বিজিবি’র নিয়ন্ত্রনাধীন, অালুবাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, কেন্দ্রী, কাটালবাড়ী, নিজপাট ইউনিয়নের ডিবিরহাওর, খলারবন্দ এবং ১৯ বিজিবি’র নিয়ন্ত্রনাধীন ফুলবাড়ী, ঘিলাতৈল, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, কলিঞ্জি, চারিকাটা ইউনিয়নের জালিয়াখলা,বাগছড়া, লালাখাল, তুমইর, অফিফানগর, বালিদাঁড়া, ইয়াং রাজা এলাকা দিয়ে গত এক সাপ্তাহ হতে নতুন করে চোরাকারবার সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা বানের পানির মত ভারতীয় মদ, বিআর, ফেন্সীড্রিল, শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি (পাতার বিড়ি), বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, ইয়াবা, বিস্কুট, কসমেট্রিক্স, বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল সহ নানান সামগ্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেখা যায়৷ অবৈধ লাইনম্যান সীমান্তের রাজা লেপটিন শহিদ, বেন্ডটিস করিম রুবেলের মত লোকেদের জন্য প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল।
এসব পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বিজিবি ও পুলিশের নাম ব্যবহার করে প্রকাশ্যে লাইনম্যান নামক এই চক্র আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অগ্রীম টাকা দিয়ে লাইন নিয়ে তারা চোরাকারবারীদের নিকট হতে চাঁদা আদায় করে আসছে৷ এতে করে একেক জন হচ্ছে কোটি কোটি টাকার মালিক।
একটি সূত্র জানায়, এই লাইনম্যানরা বিজিবি ও পুলিশকে দিচ্ছে উত্তোলনের তিন ভাগের এক ভাগ বাকিটা তাদের পকেটে। লাইনম্যান সীমান্তের রাজা বেন্ডটিস করিম, শহীদ ও রুবেলসহ আরও অনেকের সম্পদের তথ্য নিলে অচিরেই বেরিয়ে আসবে তাদের থলের বিড়াল। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের এসকল লাইনম্যানদের সম্পদের তথ্য নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এ্ররা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পন্তায় কোটিপতি হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, বিজিবি ও পুলিশের অন্য বাহিনীর কোন লাইনম্যান নাই, ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে অধৈধ ভাবে প্রবেশ বেআইনি তারপরও কেউ আমাদের নাম ব্যবহার করে টাকা আদায় করে থাকলে তাদেরকে ধরিয়ে দিন বা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন৷
তারা দাবী করেন জানান এসব বেআইনি কাজে যারা জড়িত সমাজের সচেতন মহল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিন, আমাদের নামে কাউকে চাঁদা না দেয় তার পরেও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি বলে জানান৷
কিন্তু এই লোকদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। রাতের আধাঁরে সীমান্তের গেলেই দেখা যায় লাইনম্যানদের কান্ড। এমনকি জৈন্তাপুর বাজারে প্রকাশ্যে বুঙ্গাড়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন তারা।
সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান বন্ধে এবং অবৈধ টাকার লাইনম্যান সীমান্তের রাজা কোটিপতি বেন্ডটিস করিম, শহীদ ও রুবেল এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট আশু হস্থক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd