গোয়াইনঘাটে গ্রামবাসীর উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ

প্রকাশিত: ১০:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০

গোয়াইনঘাটে গ্রামবাসীর উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক থেকে রুস্তুমপুর ইউনিয়নের যৎনাথা (পূর্ব পাড়া) গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। সারা জীবন থেকে এ কিলোমিটার দূরত্বের গ্রামটিতে পৌঁছাতে হলে সবুজ ক্ষেতের মধ্যে হেঁটে যাতায়াত করতে হত।

এই গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থী, মানুষজনসহ গৃহপালিত পশু ধান ও সবজি ক্ষেতের উপর দিয়ে চলাচলের কারণে পথের বিভিন্ন অংশে অন্তত ৩০০ ফুট এলাকায় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। অন্য অংশগুলোতে সৃষ্টি হয় ছোট বড় গর্ত। বৃষ্টি-বর্ষায় ওই ৩০০ ফুট এলাকায় ২-৩ ফুট পানি হয়। তখন হেঁটে চলাচলও দুষ্কর। এ অবস্থায় গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় ১ কিলোমিটার মাটির রাস্তার তৈরি করে গ্রামবাসী।

রাস্তাটি গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তুমপুর ইউনিয়নের যৎনাথা গ্রামের। সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের যৎনাথা গ্রামের মধ্য দিয়ে সড়কে গিয়ে মিশেছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ কিলোমিটার রাস্তায় অতিমাত্রায় কাঁদা ছিল এবং সেখানে অধিকাংশ গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছিল। সৃষ্টি হয়েছিল খানাখন্দ। এই ১ কিলোমিটারে যৎনাথা পূর্ব পাড়া পর্যন্ত অন্তত ৩০০ ফুট এলাকা টানা বড় গর্ত ছিল। গর্ত ভরাট করা হয়েছে। সেখানে বালু দিয়ে তারপর মাটি দেওয়া হয়। শ্রমিকদের পাশাপাশি কিছু গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন। অন্য কাঁচা অংশে ছোট-বড় গর্ত।

গ্রামের লোকজন জানান, গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে ও অর্থায়নে দুই/৩ সপ্তাহ ধরে কাজ করা হচ্ছে। যৎনাথা গ্রাম ছাড়াও টুকইর ও গ্রামের মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। সড়কের এ অবস্থায় ওই তিন গ্রামের চার-পাঁচ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন। এ রাস্তা দিয়ে কবরস্থানে যেতে হয়। পাশেই টুকইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টুকইর মাদরাসা । ওই রাস্তার দুরবস্থায় বর্ষায় ওই বিদ্যালয়ে যেতে পারেনা শিক্ষার্থীরা। গ্রামের ব্যবসায়ীরা মালামাল নেওয়ার জন্য ভ্যান বা অন্য যানবাহন ব্যবহার করা যেত না।

গ্রামের কৃষিজীবী সেলিম মিয়া বলেন, ওই রাস্তায় বিশাল ফসলি মাঠ। সেখান থেকে রিক্সা, ভ্যান বা অন্য যানবাহন ওই রাস্তা দিয়ে বর্ষা মৌসুমে একদম চলে না। হেঁটেও চলা যায় না। তাই কৃষকদেরও দুর্ভোগের শেষ নেই। এদিকে নজর নেই কারোর। গ্রামবাসীর দুর্ভোগে গ্রামের সবাই এগিয়ে এসেছেন। নিজেদের অর্থে ও উদ্যোগে ওই ১ কিলোমিটার এলাকায় নির্মিত হয়েছে মাটির সড়ক।

অটোরিকশা চালক ইসলাম উদ্দিন সিলেটভিউকে বলেন, যে রাস্তাটি নির্মিত হয়েছে, সেখানে ইট বসানো জরুরি। গ্রামের মানুষকে বাড়ি থেকে বের হতে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তা বর্ণনাতীত। এ কষ্ট দেখেই গ্রামবাসী এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু পুরো রাস্তাটি পাকা করলেই দুর্ভোগের সমাপ্তি ঘটবে। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনেক ধরণা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

স্থানীয় রুস্তুমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন শিহাব বলেন, যৎনাথা পূর্ব পাড়া গ্রামবাসী কতৃক ‘নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণের কথা শুনেছি। তবে উক্ত সড়কে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দও রয়েছে। এই সড়কে রুস্তুমপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আরো ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে। পাশাপাশি এই সড়কটি ইটসলিং করার পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী রাসেন্দ্র চন্দ্র দেব সিলেটভিউকে বলেন, ‘এই রাস্তাটি এলজিইডির আওতাভুক্ত হলে যেকোনো প্রকল্পে দিয়ে সংস্কার করা যাবে। আর তা না হলে আওতাভুক্ত করে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব হবে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2020
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..