সিলেট ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম-দূর্নীতি কিছুতেই তাদের পিছো ছাড়ছে না। একের পর এক কান্ড করে চলেছে এই হাসপাতালটি। এবার অতিরিক্ত বিল, ৫ ঘণ্টা লাশ আটকে রেখে টাকা আদায় এবং করোনা রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ হওয়ার পরও রোগীকে কোভিড-১৯ ইউনিটে রেখে চিকিৎসা প্রদানের অভিযোগে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বরাবারে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের উলালমহল গ্রামের মৃত নাসির উদ্দিনের ভাতিজা আব্দুল বারী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের উলালমহল গ্রামের নাসির উদ্দিন (৬০) গত ৩ সেপ্টেম্বর রাত ২টায় শ্বাসকষ্ট নিয়ে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা ইউনিটে নিয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা ‘করোনা নেগেটিভ’ রিপোর্ট দেখান। তবু স্বজনদের কথা উপেক্ষা করে কর্তব্যরতরা রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে না রেখে করোনা ইউনিটে নিয়ে যান।
রোগীকে করোনা ইউনিটে নিয়ে পজিটিভ রোগীর মতোই চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একদিন পর রোগীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে করোনায় মুমূর্ষু রোগীর মতো রক্তের প্লাজমা দেয়ার কথা বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তবে স্বজনরা সম্মত না হলে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার ভোর রাত ৪টার দিকে নাসির উদ্দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনদের হাতে ৭৭ হাজার ৪শ ৭২ টাকার বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিলে শুধু পিপিই এবং সুরক্ষাসামগ্রী বাবদ প্রতিদিন ধরা হয় ৪ হাজার ২শ ৫০ টাকা।
বড় অংকের বিল এবং গভীর রাত হওয়ার কারণে স্বজনরা টাকা বকেয়া রেখে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ দেননি। ওই সময় সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল হাসপাতালে কর্তব্যরতদের ফোন করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে স্বজনর দাফন-কাফনের সুযোগ দেয়ার সুপারিশ করেন এবং নিজে উপস্থিত হয়ে বিল পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন।
কিন্তু আব্দুল জব্বার জলিলের সেই অনুরোধও রাখেননি হাসপাতালে কর্তব্যরতরা। পরে সকাল ৯টায় আব্দুল জব্বার জলিল হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বিলের টাকা পরিশোধ করার পরই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অভিযোগপত্রে আব্দুল বারী বলেন, ‘নর্থ ইস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে আমার চাচাকে করোনা রোগী সাজিয়ে চিকিৎসা প্রদানে বাধ্য করেছে। ফলে যেখানে দুই দিনে ১০-১৫ হাজার টাকা বিল আসার কথা, সেখানে আমাদের বিল পরিশোধ করতে হয়েছে ৭৪ হাজার টাকা। এছাড়াও টাকার জন্য লাশ আটকে রেখে অমানবিক কাজ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে নর্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের সমন্বয়ক ড. নাজমুল হক অতিরিক্ত বিল আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, করোনা সন্দেহভাজন রোগীদেরও আমরা করোনা ইউনিটে রাখি। এক্ষেত্র চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরর নিরাপত্তা সামগ্রীর ব্যয়ও রোগীকে বহন করতে হয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd