সিলেট ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২০
এহিয়া আহমদ :: সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) উন্নয়নে সিটি মেয়র কিছু ক্ষেত্রে প্রশংসা কুড়ালেও অপরিকল্পিত উন্নয়নে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। নগরীর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নেই কোনো সঠিক পরিকল্পনা বলে বিভিন্ন মহল থেকে এমনটাই অভিযোগও উঠেছে। মেয়র উন্নয়ন বলতে রাস্তা সম্প্রসারণ ও ড্রেন নির্মাণ বা খননকে বোঝাতে চেয়েছেন। যখন যা মনে করছেন তাই করছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
ফুটপাত শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের চলাচলে অনুপযোগী। উন্নয়নের নামে তিনি পরিবেশবিরোধী বক্স-কালভার্ট নির্মাণ করছেন। এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন লোকজন ভিন্ন ভিন্ন সমালোচনা করছে। “কোথাও চলছে গালাগালি আবার কোথাও কোথাও মেয়রের উদ্দেশ্যে ছোড়া হচ্ছে হাততালি।” সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নগরীকে হকারমুক্ত ফুটপাত করতেও ব্যর্থ। ফলে সিলেট হয়ে উঠছে অপরিকল্পিত নগরীতে।
সরকার উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ দেয়ায় নগরজুড়ে একসঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে চালাচ্ছেন বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ। নগরীর রাস্তা প্রসস্থ করণ, ড্রেন খনন কাজ, গ্যাস লাইন, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ বিভাগ সহ বিভিন্ন কাজে যখন তখন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হচ্ছে। দিনের পর দিন কাজ না করে ফেলে রাখা হচ্ছে বা কাজ হলেও ধীর গতিতে কাজ করা হচ্ছে। আবার কোনো কোনো জায়গায় দেখা গেছে কাজ শেষে রাস্তায় কার্পেটিং না করায় জনগণ অতিষ্ঠ।
গত বছর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন খননের কাজে তেমন কোনো উন্নতি দেখা যায় নি বরং পাশাপাশি এই ড্রেন খননে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে সাধারণ জনগনকে। সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ডের রায়নগর, দাদা পীরের মোকাম, ভুমিছড়া এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় গত নভেম্বরে শুরু হয় ড্রেন খননের কাজ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই খনন কাজের কোনো উন্নতি হয় নি। শুরুর দিকে মাস দুয়েক কাজ চলতে থাকলেও পরবর্তীকালে কাজ স্থগিত রয়েছে। এই স্থগিততার কারণে স্থানীয় এলাকায় যেমন চলাফেরার সমস্যা হচ্ছে তেমনই বৃষ্টির জন্য জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে পাশাপাশি ড্রেন থেকে ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। একই রাস্তায় একটা প্রকল্প শেষ হতে না হতে শুরু হচ্ছে আরেকটি।
সিসিকের উন্নয়ন দুর্ভোগের কারণে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের। একই রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজের দুর্ভোগ শেষ হতে না হতেই কালভার্ট নির্মাণের দুর্ভোগে পড়ছেন নগরবাসী।
নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলফু মিয়া জানান, আমরা দুর্গন্ধে আটতাম (হাটা) ফারিনা। দীর্ঘদিন থাকি রাস্তা খুঁড়িয়া রাখায় আমরার চলাফেরা করতে সমস্যা অয়। তারবাদে মেঘ (বৃষ্টি) দিলে, পানি বাড়িয়া রাস্তা ভরিযায় হাটা চলা করা যায় না। ময়লা আবর্জনা রাস্তায় পড়িয়া থাকে।
নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাওছার খান জানান, দীর্ঘদিন থেকে ধীর গতিতে সিসিকের ড্রেন খননের কাজ চলছে। কাজ এতো ধীর গতিতে হচ্ছে যেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। তাছাড়া এই ড্রেন খননের জন্য এলাকায় বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যেমন, ময়লা পানি সহ বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনার জন্য ড্রেন থেকে বেশিরভাগ সময়ই দুর্গন্ধ বের হয়। এই দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা স্থানীয়রা দ্রুত এই খনন কাজের সমাপ্তি চাই।
সৈয়দ হাতিম আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী জুবায়দা ইয়াসমিন কয়েকদিন পরপরই সর্দিকাশিতে ভুগছে। ডাক্তার বলেছেন, রাস্তার ধুলোবালি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য এমনটি হচ্ছে। তার পিতা মুদি দোকানদার দেলোয়ার মিয়া জানালেন, কিছু করার নেই। এ অবস্থাতেই চলছে আমাদের জীবন। এতে নাগরিক জীবন প্রায় স্থবির হওয়ার উপক্রম। যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ প্রায় সর্বস্তরের মানুষ। ব্যবসা ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সৌজন্যে: দৈনিক সবুজ সিলেট
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd