সিলেট ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:২৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : শরীয়তপুরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক সহকারী শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার ২০ নং পূর্ব গৈড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) স্থায়ী সমাধান চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষিকা।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১নং পশ্চিম রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা চাকরির সুবাদে ২০১৬ সাল থেকে ভেদরগঞ্জ পৌরসভার গৈড্যা এলাকায় এক ছেলে-এক মেয়ে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাসার কাছে হওয়ায় ছেলেকে ২০নং পূর্ব গৈড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন তিনি। ২০১৯ সালে ছেলের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই শিক্ষিকার। পরে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক হওয়ার পর শিক্ষিকার স্বামী বাসায় না থাকলে তার বাসায় যেতেন আব্দুর রহিম। শিক্ষিকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্কও করেছেন আব্দুর রহিম। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম এবং ওই শিক্ষিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে।
বিষয়টি শিক্ষিকার ভাড়া বাসার লোকজন, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যেনে যায় এবং ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ আব্দুর রহিম স্বামীকে তালাক দেয়া শর্তে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পরে স্বামীকে তালাক দেন ওই শিক্ষকা। কিন্তু আব্দুর রহিম তাকে বিয়ে করবে বলে সময় নিয়ে তালবাহানা করছেন। তাই বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন শিক্ষিকা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক গৈড্যা এলাকার কয়েকজন জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম ও শিক্ষিকার মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শিক্ষিকার বাসায় তাদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরা হয়। এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। সহকারী শিক্ষিকার এক ছেলে, এক মেয়ে এবং প্রধান শিক্ষকের দুই ছেলে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
ওই শিক্ষিকা বলেন, আব্দুর রহিমের জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া করেছি। তার কারণে স্বামীকে তালাক দিয়েছি। তিনি বিয়ে করবেন বলে সময় নিয়ে এখন তালবাহানা করছেন। আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই এর সমাধান চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেছি।
এদিকে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, ওই শিক্ষিকা খারাপ চরিত্রের নারী। বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে ওই শিক্ষিকা। এটা ষড়যন্ত্র।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই শিক্ষিকা ২০নং পূর্ব গৈড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও নড়িয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেনকে তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd