সিলেট ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৪৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে মুখরিত টঙ্গীর তুরাগ নদের পূর্ব পাড়ের বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। পবিত্র হজের পর মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ইজতেমার প্রথম দিনেই জুমার নামাজকে ঘিরে সকাল থেকেই তুরাগ তীরে অগণিত মুসল্লিদের ঢল নামে।
সময় যতই এগিয়ে যাচ্ছিল ততই জনস্রোত বাড়ছিল। জুমার নামাজ শুরুর আগেই সমগ্র ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের রাস্তাঘাট কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে বিশাল জুমার নামাজের ইমামতি করেন বাংলাদেশের মাওলানা মোশারফ। জুমার নামাজ আদায় করার জন্য রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সী মানুষ। দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে এসেছেন অনেকেই। তিলধারণের ঠাঁই ছিল না প্রায় ১৬০ একর জমিতে তৈরি করা বিশাল ছাউনির নিচে। বহু মসুল্লীকে স্থানাভাবে পাকা রাস্তায়, খবরের কাগজ, হুগলা ও পলিথিন বিছিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা যায়।
এর আগে ফজরের নামাজের পর বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
দ্বিতীয় পর্বে শুক্রবার বয়ানে বিশিষ্ট আলেমগণ বলেন, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে কঠিন মেহনত করতে হবে। ঈমান আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না।
দ্বিতীয় দিনের বয়ানে যা বলা হয় : বয়ানে বলা হয়, জুমা’র নামাজ আদায়ের লক্ষে গোসল-অজু করে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর থেকে তার নেকি লেখা হয়। আমরা যা করবো আল্লাহকে রাজি করার জন্য করবো। আল্লাহ পাকের হুকুম মতো আমরা যেন সারা জীবন চলতে পারি সে চেষ্টা করতে হবে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে ও সারা দুনিয়ায় মানুষের মাঝে দ্বীন কায়েম করার জন্য ছড়িয়ে পড়তে হবে।
বয়ানে আরো বলা হয়, জুম্মার দিন একটি পবিত্র দিন, সপ্তাহের সেরা দিন। সবচেয়ে উত্তম দিন হলো এদিন। এটি হলো সবচেয়ে বড় ও সম্মানি দিন। এটি দু’ঈদের চেয়েও ফজিলতপূর্ণ। এদিনে হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়। এদিনই দুনিয়া ধ্বংস হবে। এদিনে হারাম ছাড়া আল্লাহর কাছে যা চাইবে, আল্লাহ তা তাকে দেবেন।
জু’মার নামাজে মুসল্লিদের ঢল : ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের শুরুর দিন জুমা’র দিন হওয়ায় সকাল থেকেই গাজীপুর এবং রাজধানী ঢাকার উত্তরা ছাড়াও টঙ্গী এর আশপাশের এলাকার কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ ইজতেমায় বৃহত্তর জুমার নামাজে অংশ নিতে পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন।
শুক্রবার বাদ ফজর থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জিকির আসকার ইবাদত বন্দেগিতে টঙ্গী এক পবিত্র পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়। জুমার নামাজকে ঘিরে ভোর থেকেই তুরাগ তীরে জনস্রোতের ঢল নামে। ইজতেমার প্রথম দিনেই ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় দেশের স্মরণকালের বৃহত্তম জুমার নামাজ।
বিশ্ব ইজতেমায় এক মসুল্লীর মৃত্যু : টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিয়ে বার্ধক্যজনিত রোগে বৃহস্পতিবার রাতে এক মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম কাজী আলাউদ্দিন (৬৬)। তিনি সুনামগঞ্জের লক্ষ্মীপুর চাঁনপুর এলাকার হযরত আলীর ছেলে। এ নিয়ে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দফায় যোগ দিতে গিয়ে মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বরত গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মনজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আলাউদ্দিন নিজ খিত্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে স্থানীয় শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd