সিলেটে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বিলাসবহুল গাড়ি চালাচ্ছেন ফিজা বাবুল

প্রকাশিত: ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২০

সিলেটে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বিলাসবহুল গাড়ি চালাচ্ছেন ফিজা বাবুল

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট নগরীতে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল প্রাডো গাড়ি চালাচ্ছেন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ফিজা এন্ড কোং এর স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বাবুল।

অভিযোগ রয়েছে, রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই তিনি গাড়িটি চালাচ্ছেন। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন না করার বিষয়টি নজরুল ইসলাম বাবুল নিজেও স্বীকার করেছেন। পুলিশ এবং বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’র (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউই নন। নগরীতে কেউ রেজিস্ট্রেশন বিহীন গাড়ি চালালে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাজস্ব ফাঁকির ঘটনাটি খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম বাবুল রাজধানী ঢাকার কাকরাইলের (১০৬/১) নিউ অটো গ্যালাক্সি নামক গাড়ির শো-রুম থেকে কয়েক বছর আগে টয়োটা প্রাডো গাড়িটি ক্রয় করেন। গাড়ির সামনে ঢাকা ৪৬৭/৪ নম্বর লেখা থাকলেও বিআরটিএ সূত্র বলেছে, এটি গাড়ির কোনো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নয়। সিলেটের ডাক-এর কাছে একাধিক ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বাবুলের গাড়ি চালানোর বিষয়ে অভিযোগ করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে ঢাকার নিউ অটো গ্যালাক্সি থেকে গাড়িটি কিনে আনেন নজরুল। এরপর থেকে গাড়িটি গ্যারেজের টোকেনের নম্বরেই রাজস্ব ফাঁকি দিয়েই চালাচ্ছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পোর্ট থেকে শো-রুম পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে যেতে একটি সাময়িক টোকেন ফিস নেয় বিআরটিএ। কেবলমাত্র শো-রুম কর্তৃপক্ষই এ ধরনের টোকেন ব্যবহার করেন। গাড়িটি বিক্রির পর স্বাভাবিকভাবেই প্রচলিত আইনেই মালিক সংশ্লিষ্ট যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন করেন এবং রাজস্ব পরিশোধ করেন।

গাড়ির বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান নিউ অটো গ্যালাক্সির কর্মকর্তা আরিফ আহমদ জানান, ‘ গাড়ির মালিক যেহেতু এখনো শো-রুমের নম্বর ব্যবহার করছেন; এতেই বোঝা যায় এখনো গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন হয়নি। রেজিস্ট্রেশন হয়ে থাকলে তাদের টোকেন নম্বর ব্যবহারের কথা নয়’ ।

বিআরটিএ সূত্র জানায়, এ ধরনের গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করতে আড়াই লাখ টাকা ও ট্যাক্স হিসেবে আরো ১ লাখ টাকা দিতে হয়। প্রতি বছর গাড়ির রুট ট্যাক্স, ফিটনেস এবং আয়কর মিলিয়ে আরো এক লাখ টাকারও বেশি খরচ হবার কথা। কিন্তু. রেজিস্ট্রেশন না করায় সরকারের বিপুল পরিমাণ এ অর্থ রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন বাবুল। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি চালানো বেআইনি বলেও বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়।

যোগাযোগ করা হলে সিলেট আয়কর অফিসের উপ-কর কমিশনার কাজল সিংহ বলেন, গাড়ি ক্রয়ের সাথে ওই ব্যক্তির আয়ের সামঞ্জস্য রয়েছে কিনা তা ট্যাক্স বিভাগ খতিয়ে দেখবে। আর ট্যাক্স দিয়ে গাড়ি চলছে, না রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে তা দেখবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বিলাসবহুল এ প্রাডো গাড়ির বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে বলে জানান এই কর কর্মকর্তা।

বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক মো: সানাউল্লাহ বলেন, বিআরটিএ-তে রেজিস্ট্রেশন হয়নি বলেই গাড়িতে কোনো নম্বর নই। বেআইনিভাবেই এটি চলছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার ফয়সল মাহমুদ বলেন, রেজিস্ট্রেশন বিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। সব সময়ই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এমন গাড়ি পেলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। কারণ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি রাস্তায় নামার কথা নয়। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

গতকাল বুধবার রাতে ফিজা এন্ড কোং এর স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বাবুলের কাছে অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গাড়িটি তো এখন চালাচ্ছি না। বছর খানেক আগে কিনলেও গাড়িটি তেমন ব্যবহার করেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার একাধিক গাড়ি থাকায় এটির ব্যবহার কম হয়। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন এখনো না করলেও শিগগিরই করে ফেলবেন বলে জানান তিনি। সূত্র-সিলেটের ডাক

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..