সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৯
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় ঝড়ো বাতাসে সাতটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় ৮ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালমোহনের পশ্চিম চর উমেদ ও চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন পশ্চিম চর উমেদ ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মাল, তার ছেলে ইমরান ও তিশান।
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি ঘুর্ণিঝড়ের বিকট আওয়াজ শুনতে পায়। মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকার রশিদ মালসহ একই বাড়ির আরও দুইটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। এ সময় বাড়ির গাছপালাও উপড়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, একই সময়ে ওই এলাকার পাশের এলাকা চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুল মোতালেব ও তার ছেলে মামুন ও বিল্লালের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পাশের আরেকটি বাড়ির আব্দুল মুনাফের বসত ঘরটিও বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এ সময় ওই এলাকার রাস্তার গাছপালাও উপড়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে লালামোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের চরপেয়ারীমোহন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে অন্তঃত পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তবে সেখানকার আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বলেন, আমরা লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের রায়চাঁদ এলাকায় গাছ পড়ে একজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে বাকিদের খবর আমরা পাইনি।
এদিকে ‘‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে। এটি আরও উত্তর অথবা উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার (০৯ নভেম্বর) মধ্যরাত নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল (সুন্দরবনের কাছ দিয়ে) অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বইছে।
এ অবস্থায় সাতক্ষীরার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলার ২৭০টি সাইক্লোন শেল্টার ও ১ হাজার ২০০ স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে এসব মানুষকে রাখা হয়েছে। আশ্রিতদের মাঝে রাতের খাবার হিসেবে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। আশ্রিতদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় খাবার সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ইউনিয়নের ১১টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন তিন হাজারের অধিক মানুষ। এসব মানুষের মাঝে সন্ধ্যার আগে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছিল। রাতের খাবার হিসেবে খিচুড়ি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সুপেয় পানি বিতরণ করা হয়েছে।
একই উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল বলেন, বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত দুই হাজারের অধিক মানুষের জন্য খিচুড়ি রান্না হচ্ছে। সন্ধ্যায় শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছিল। আশ্রিতরা যেন কোনোভাবে খাবারের কষ্ট না পান সেটি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন বলেন, সুন্দরবনসংলগ্ন গোলাখালীর দ্বীপের মানুষদের স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে আশ্রিতদের মাঝে রাতের খাবার হিসেবে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রশান্ত কুমার রায় জাগো নিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যেন কোনোভাবে খাবারে কষ্ট না হয় আশ্রিতদের। উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনা খাবার ও খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত জেলায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ২০০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। তবুও সবাইকে সুন্দরভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd