সিলেট ১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
হৃদরোগ থেকে বেঁচে থাকতে হলে আমাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা। আজ বিশ্ব হার্ট দিবসে আমার আপনার সুযোগ এসেছে হার্টকে সুস্থ রাখার শপথ নেয়ার। রবিবার সকালে বিশ্ব হার্ট দিবস ২০১৯ উপলক্ষে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচলক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ ইউনুছুর রহমান এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন শরীরের সবচেয়ে বড় এবং মূল্যবান অঙ্গ হচ্ছে হার্ট। সেটি বন্ধ হলে পুরো শরীরের কর্মক্ষমতা বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং তাকে সতেজ করে রাখতে হলে প্রতিরোধের উপর গুরুত্ব দিতে হবে যাতে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে। তিনি বলেন আমাদের দেশে হৃদরোগ চিকিৎসার যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। মোঃ ইউনুছুর রহমান বলেন করোনারি হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এবং কিছু কিছু ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে একটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তালিকা অনেকটাই সাহায্য করে। তিনি বলেন হৃদরোগের পিছনে যে কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে অধিক ও অসম খাদ্য গ্রহণ একটি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট এর সভাপতি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এম এনায়েত উল্লাহ’র সভাপতিত্বে এবং পাবলিসিটি সেক্রেটারী আবু তালেব মুরাদের সঞ্চালনায় শুরুতে হাফেজ আব্দুল বাছির কর্তৃক কোরআন থেকে তেলাওয়াতের পর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ব হার্ট দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আমিনুর রহমান লস্কর। তিনি তার বক্তব্যে বলেন বিশ্বব্যাপী জনগণকে হৃদরোগের বিভিন্ন তথ্য জানানো ও এর ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্ঠি এবং প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিশ্ব হার্ট দিবসের আয়োজন। তিনি প্রতি বছর বিশ্ব হার্ট দিবস আয়োজনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
এবারের বিশ্ব হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আমার হার্ট, তোমার হার্ট সুস্থ্য রাখতে অঙ্গীকার করি একসাথে’। সেমিনারে হৃদরোগের কারণ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের কনসালটেন্ট ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ মোঃ ইকবাল আহমদ। তিনি বলেন সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে হাটার অভ্যাস করার পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম ছাড়াও ৭৫ মিনিট শারিরিক পরিশ্রম করা অতিব জরুরী। এ ছাড়াও সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, সাদাপাতাসহ তামাক এর ব্যবহার থেকে সম্পূর্ন বিরত থাকতে হবে। কনসালটেন্ট ডাঃ ফারজানা তাজিন হৃদরোগের প্রতিকার এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বলেন এই অসংক্রামক ব্যধি প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে এবং পারিবারিকভাবে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সদিচ্ছা থাকলেই হৃদরোগ থেকে অনেকাংশে লাঘব পাওয়া যায়।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডাঃ এম এনায়েত উল্লাহ বলেন বিশ্বে প্রতিবছর ১ কোটি ৭৯ লক্ষ মানুষ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে মৃত্যু বরণ করে। এর অনেক কারণ রয়েছে তা থেকে পরিত্রান পেতে হলে ধুমপানমুক্ত জীবন, নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, সাভাবিক ওজন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং মানসিক চাপ পরিহার করতে হবে। এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে আমরা সুস্থভাবে জীবন-যাপন করতে পারব। আলোচনা সভা ও সেমিনারের আগে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে গণসচেতনতামূলক এক বর্নাঢ্য র্যালী বের করা হয়।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর সহ-সভাপতি কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডাঃ সুধাংশু রঞ্জন দে, আজীবন সদস্য রোটারিয়ান হানিফ মোহাম্মদ, সাংবাদিক ছমর উদ্দিন মানিক। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলতাফুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ মোস্তফা শাহ জামান চৌধুরী, কার্যকরি কমিটির সদস্য আব্দুল মালিক জাকা, উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ আব্দুল মুনিম চৌধুরী, গণদাবী ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ, গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল সাউথইস্ট রিজিওন ইউকের সভাপতি মোহাম্মদ ইছবাহ উদ্দিন প্রমূখ।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের পরিচালক ও সিইও কর্ণেল (অবঃ) শাহ আবিদুর রহমান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd