সিলেট ১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৫২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
সুরমা নদীর ওপর ৮৩ বছরের পুরনো ক্বিন ব্রিজ। দৃষ্টিনন্দন এই ব্রিজকে সংরক্ষণ করে ঐতিহ্যের মর্যাদা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা, অতিরিক্ত গাড়ির চাপে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। তাই এই ব্রিজে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা একান্ত আবশ্যক ছিল।
এবার কাণ্ড-জ্ঞানহীন কর্মের ব্যাপারে বলি। কোনো কিছু করার আগে একটু পর্যবেক্ষণ দরকার। ধুম-ধাম করলেই হয় না। উদ্দেশ্য ছিল ক্বিন ব্রিজে যানবাহন চলাচল বন্ধ হবে। জনগণের পথ চলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা নয়। আপনারা জানেন, বর্তস্বত্ত্ব (Easement) আইন আছে। এখানে স্পষ্ট বলা আছে, জনগণের দীর্ঘদিনের পথচলায় কেউ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারিবে না।
মানববন্ধন শব্দে এখন নতুত্ব এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের ওপর এক শো মানুষ দাঁড়িয়ে নাগরিকবন্ধন করতে দেখি আমরা। অর্থাৎ মানুষের বন্ধন করেন তারা। এখন এই ব্রিজটাকে আমি যদি একটা মানব দেহ হিসেবে তুলনা করি। তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে দেখুন- ‘ব্রিজমানবের’ মুখে-পাছায় দিয়েছে তালা, ওরা আবার এতিহ্যের ফেরিওয়ালা !
ব্রিজটির এই শিকল খুলে দেওয়া হোক। সিলেটের ট্রাফিক পুলিশ কী এই লোহার খাঁচার চেয়েও অধম ? যানবাহন চলাচল বন্ধে ব্রিজের দু-প্রান্তে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হোক। ব্রিজের এই ছিদ্রপথে যেন পথচারিদের শরীর বাঁকিয়ে চলতে না হয়। একটা স্কুল ছাত্র যেন বাই সাইকেল নিয়ে অনায়াসে স্কুলে যেতে পারে।
যেদিন ব্রিজটি বন্ধ করা হয়, সেদিনের একটি ভিডিও আমার হাতে এসেছে। দেখলাম আচমকা সিসিকের মেয়র ব্রিজটি বন্ধ করলেন। এসময় বাই সাইকেল চালিয়ে ব্রিজ পার হতে একটা স্কুল ছাত্র এসেছে। মেয়রের সাঙ্গপাঙ্গরা তাকে সাইকেল থেকে নামিয়ে এক ধরনের নাজেহাল করেছে। কে একজন মন্তব্য করেছে, ‘তিন টাকার সাইকেল’।
জনাব আরিফুল হক চৌধুরী, আপনি সেই অতীতের ওয়ার্ড কমিশনার নন। এখন এই স্কুল ছাত্রেরও মেয়র। সুতরাং আপনাকে তার কথাও ভাবতে হবে। আপনি তো স্বশিক্ষিত মেয়র। কে জানে, যাকে বাই সাইকেল থেকে নামিয়ে দিলেন, সে আপনার চেয়েও শিক্ষিত মেয়র হতে পারে।
তাই বলছি, ব্রিজে যাতে বাই সাইকেল নিয়েও চলা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। আপনাকে মালপত্র নেওয়া ঠেলা চালকের কথাও ভাবতে হবে। ব্রিজটি দিয়ে রিকশাযোগে যাতে রোগী যেতে পারে। এমনকি কর্মব্যস্ত অনেক মানুষ মোটরসাইকেল নিয়ে ব্যস্ততম রেলওয়ে ও টার্মিনাল সড়কে যাতে চলতে পারেন- এ কথাও মাথায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, জনগণকে যেন আমরা ঐতিহ্যের বিপক্ষে না নেই। ঐতিহ্যের সঙ্গে আরও হৃদ্যতায় তাদের আনতে হবে।
শুধু চলতে দিবেন না , সব ধরনের ভারি যানবাহন। আর ব্রিজটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার কাজ শুরু করেন। যাতে বিশ্বাসযোগ্য হয়, যে আপনি ক্বিন ব্রিজকে আসলেই ঐতিহ্যে মর্যাদা দিতে আন্তরিক।
গোটা সিলেটকে যেভাবে এবড়োখেবড়ো করে খুঁড়ে উন্নয়নের জট পাকিয়েছেন, এভাবে ক্বিন ব্রিজকে অবহেলায় ফেলে রাখবেন না। সিলেটের সবচেয়ে বড় ‘সাইন’ ক্বিনব্রিজকে অবিলম্বে আরও দৃষ্টিনন্দন করে সংরক্ষণ করুন, আপনার জন্য রইলো শুভ কামনা।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd