সিলেট ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:০৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৯
মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পুলিশ পরিদর্শক মো. জুয়েল মিয়া, উপ-পরিদর্শক মো. আল আমিন শেখ, মো. ময়নাল হোসেন, মো. নুরুল করিম ও মো. হায়দার আলী আকন সাক্ষ্য দেন। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন।
আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে সরকারি কৌঁসুলি হাফেজ আহাম্মদ বলেন, নুসরাত হত্যা মামলায় মঙ্গলবার পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। মামলার ৯২ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত বাদীসহ ৭৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সন্তোষ কুমার চাকমা নামে পিবিআইয়ের এক পুলিশ পরিদর্শকের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের ওসি মো. শাহ আলম বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা চলাকালে আদালতে তারা উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষ্য দেয়ার সময় পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন- নুসরাত হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। রাঙ্গামাটির টিএনটি কলোনী সংলগ্ন এলাকার একটি বাসা থেকে ইফতেখার উদ্দির রানাকে, ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে নুর উদ্দিনকে, মুক্তাগাছা থেকে শাহাদাত হোসেন শামীমকে, কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকার যাত্রীবাহী বাস থেকে এমরান হোসেন মামুনকে ও রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ভাইয়ের বাসা থেকে হাফেজ আব্দুল কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে তারা কোন আসামিকে কবে, কখন, কোন স্থান থেকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছেন তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তারা আরও বলেন, আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd