সিলেট ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৯
দেখতে অনেকটা হাতীর মতো, বিশাল আকৃতির গরু। কাছে দাঁড়াতে ভয় হচ্ছিল। হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি, সাদা শরীরে কালো চক্কর, লম্বা শিং, উঁচু খুড়া, ঝুলে থাকা গলাকম্বল প্রায় মাটি ছুঁই ছুঁই করছে। নাম দিয়েছেন ভাগ্যরাজ।
উপজেলার দেলুয়া গ্রামের ৬ কন্যার জনক পুত্রহীন খান্নু মিয়া তৃতীয়বারের মতো ২ টন ওজনের কোরবানির গরু পালন করে পুরো এলাকায় হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন।
তাদের অনুসরণ করে বৃহৎ গরু পালনে প্রতিযোগিতা করছেন এলাকার আরও অনেকেই। তবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে খান্নু মিয়ার বলেন, আমার ভাগ্যরাজই দেশের সেরা বৃহৎ কোরবানির গরু।
খান্নু মিয়ার ছোট কন্যা ইতি আক্তার সাভারের শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে গরু মোটাতাজা করনের প্রশিক্ষণ নেয়। সম্বলহীন পরিবারে কিস্তির টাকায় ২০১৭ সালে ২৯ মণ ওজনের লক্ষ্মীসোনা পালন করে বিক্রি করেন ১০ লাখ।
২০১৮ সালে ৫২ মণ ওজনের রাজা বাবু পালন করে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৮ লাখ বিক্রি করে অনেকটা স্বাবলম্বী হয় তার পরিবার। বর্তমানে প্রায় ২ টনের ভাগ্যরাজকে ২৫ লাখ টাকায় বেচতে চান তিনি।
ভ্যাপসা গরমে বিক্রির জন্য হাটে নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন মালিক। তাই একটু কমে হলেও বাড়ি থেকেই বেচতে আগ্রহী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার দেলুয়া গ্রামের খান্নু মিয়ার বাড়িতে ভাগ্যরাজ নামের ওই বিশাল গরু এক নজর দেখতে ভিড় লেগেছে। পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত অনেকেই।
ভাগ্যরাজের দৈর্ঘ্য ৯৬ ইঞ্চি, উচ্চতা ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি, ওজন প্রায় দুই টন।
ওজনের সত্যতা নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
প্রায় ৩ বছর বয়সী ভাগ্যরাজের খাবারের তালিকা বেশ দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল। এর মধ্যে ১০ কেজি গমের ভুষি, ২ কেজি মালটা, ৩-৪ ডজন কলা, ১ কেজি গুড়, ভুট্টা ভাঙ্গা, ছোলা ভাঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, লেবু, ধানের খড় এবং কাঁচা ঘাস। চিকিৎসকের পরামর্শে এ সব খাবারে ব্যয় প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার টাকা।
ভাগ্যরাজের থাকার ঘরটাও বেশ রাজকীয়। পাকা মেঝেতে কার্পেট এবং গরম থেকে সুরক্ষার জন্য মাথার ওপরে তিনটি সিলিং ফ্যান চলছে নিয়মিত। ২৪ ঘণ্টায় ৫-৬বার গোসল করানো হয় ভাগ্যরাজকে। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করছেন বলে জানান মালিক।
এ ব্যপারে খান্নু মিয়া ও তার ছোট কন্যা ইতি আক্তার যুগান্তরকে বলেন, ক্রেতা আকর্ষণ করতে আর বিখ্যাত হতে অনেকেই তাদের গরুর ওজন বাড়িয়ে বলছে। আমার ভাগ্যরাজের ওজন ২ টনের কিছু কম হবে। সৌখিন ক্রেতার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। আপাতত ২৫ লাখ টাকা হলে বিক্রি করব।
এক প্রশ্নের জবাবে ইতি বলেন, অবৈধ ওষুধ ব্যবহার করা হলে এই ভ্যাপসা গরমে ভাগ্যরাজকে বাঁচানো সম্ভব হতো না।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. খোরশেদ আলম বলেন, মোটা অংকের মূলধনের ঝুঁকি নিয়ে বৃহদাকার গরু পালন করে পুরো এলাকায় তাক লাগিয়েছেন এ পরিবার। তাকে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ভালো বাজার পেয়ে লাভবান হলে ভবিষ্যতে খামারিরা আরও উৎসাহিত হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd