দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র প্রকৃতি কন্যা জাফলংয়ে বন বিভাগের বাগান উজাড় করে চলছে জমি দখলের হিড়িক। বন বিভাগের ২০ ধারার জমিতে রূপায়িত ৪-৫ ফুটের অর্ধা শতাধিক বছরের পূরানো ৩/৪ শতাধিক গাছ কর্তন করে চলছে জমি দখলের হিড়িক। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, প্রকৃতি কন্যা জাফলংয়ের কাই জুড়ী এলাকায় বন বিভাগের ভূমিতে চলছে বাগান উজাড়ের সর্বনাশী যঞ্জ।
কাই জুড়ী এলাকায় প্রায় ৬-৭ একর জমিতে বন বিভাগ কতৃক রূপায়িত সকল প্রকার গাছ কর্তন করে নিয়ে গেছে দূরবৃত্তরা। বাগান উজাড় করে বন বিভাগের জমিতে করা হয়েছে পাথরের ডাম্পিং ইয়ার্ড। বন কতৃপক্ষ বাগান উজাড়ের সময় বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলেও দূর্বৃত্তদের হামলায় শিকার হয়ে ঘরে বসে আছেন। জাফলং বন বিট কর্মকর্তা মো আব্দুল খালিক জানান চলতি মাসের শুরু থেকেই জাফলং এলাকার গোলাম হোসেনের ছেলে রফিকুল হোসেন, নৈম উদ্দিনের পূত্র ফরমান আলী ও ফরহাদ হোসেন, তাজুল মিয়ার পূত্র রইছ উদ্দিন, রুহুল আমিনের পূত্র মিন্টু মিয়া,আবুল হোসেনের পূত্র আজাদ মিয়াসহ ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সাং ঙ্গ বদ্ধ হয়ে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই জাফলং বন বিভাগের ভূমিতে রূপায়িত গাছের বাগান উজাড় করে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাগানের গাছ কর্তন করতে বাঁধা দেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী আরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে আমদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমরা গুরুতর আহত হই।পরবর্তীতে জুন মাসের ৩০ তারিখে আরিফ উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করি।
গোয়াইনঘাট থানায় মামলা রুজু হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। বর্তমানে সন্ত্রাসীরা জাফলং কাই জুড়ি এলাকায় বন বিভাগের প্রায় ৬-৭ একর বাগানের গাছ কর্তন করে পাথরের ডাম্পিং ইয়ার্ড হিসেবে ব্যাহার করছে। তিনি বলেন জাফলং বন বিটে বিট কর্মকর্তা একজন ও প্রহরি রয়েছেন মাত্র দুইজন। লোকবল সংকট থাকায় সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জাফলং এলাকার স্থানীয় কয়েক জন লোক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান সরকারি বাগান উজাড় করে পাথরের ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরী হচ্ছে। রফিক মিয়াসহ এসব দূর্বৃত্তদের জরুরি ভিত্তিতে আইনের আওতায় না আনলে জাফলংয়ে বন বিভাগের ভূমি আর থাকবেনা। সন্ত্রাসীদের দেখাদেখি এলাকার সাধারণ মানুষেরাও আন বিভাগের ভূমিতে পাথরের ডাম্পিং ইয়ার্ড করার স্বপ্ন দেখছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত রফিক মিয়া বলেন বন বিভাগের বাগানের গাছ কর্তনের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। সিলেটের বন বিভাগের সারি রেঞ্জের কর্মকর্তা মো: ছাদ উদ্দিন আহমদ জানান জাফলং কাইজুড়ি এলাকায় বন বিভাগের বাগান উজাড় করে একটি সন্ত্রাসী চক্র পাথরের ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি করছে। খবর পেয়ে আমরা গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল ও গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুল জলিলের সাথে আলাপ আলোচনা ও পত্র চালাচালির মাধ্যমে আইনি ভাবে তাদের সাথে মোকাবিলা করছি। সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন জাফলং কাইজুড়িতে বন বিভাগের ২০ ধারার জমিতে বাগান রয়েছে। একটি চক্র বাগান উজাড় করে পাথরের ডাম্পিং ইয়ার্ডে রুপান্তরের অপচেষ্টা চালানোর খবর পেয়েছি। শ্রীগ্রই বন বিভাগের ভূমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।