সিলেটের বিশ্বনাথে গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে যদি আরও দুই-তিনদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উপজেলাজুড়ে বন্যা দেখা দিতে পারে। সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের বেশ কয়েক গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। উপজেলার কয়েকটি গ্রামের রাস্তঘাট,স্কুল মাঠ ইতোমধ্যে পানির নীচে তলিয়ে গেছে। বাড়ির বসত ঘরে এখনো পানি ওঠেনি, তবে ছুঁইছুঁই করছে। তবে বাড়ির আঙ্গিনায়-রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ফলে শত শত মানুষ বাড়িতে পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছেন। গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক বিপাকে। উপজেলার অনেক জায়গায় বন্যার পানির তলিয়ে গেছে আউশ ধানের জমি ও রোপা আমনের বীজতলা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপজেলাবাসীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে। কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। তবে এখনোও উপজেলার কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করা হয়নি। তবে পানি যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে উপজেলার কয়েক প্রাথমিক বিদ্যালয় তলিয়ে যেতে পারে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে সুরমা নদীর পাড়ে অবস্থিত বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মির্জারগাঁও, মাহতাবপুর, মাধবপুর, কাজীবাড়ি, রাজাপুর, তিলকপুর, হাজারীগাঁও, আকিলপুর, রসুলপুর, সোনাপুর ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওয়ানপুর, চরগাঁও, তেঘরী গ্রাম এলাকার মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া বাসিয়া নদীসহ উপজেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার দশঘর ও দেওকলস ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হচ্ছে বন্যার পানিতে।
বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া বিভিন্ন অঞ্চলের সড়কগুলো নিমজ্জিত থাকার কারণে এলাকার শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজ-মাদরাসায় যেতে ও সাধারণ মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে চলাচল করতে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অনেক পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। বৃষ্টি ও ঢলের পানি আসা অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরোও বৃদ্ধি পাবে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, গতকাল সোমবার পর্যন্ত এলাকার চাষকৃত ৫০ হেক্টর আউশ ধানের জমি ও ২০ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে দুই-একদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আর পানি না নামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলার শিক্ষা অফিসার মহি উদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলার মির্জারগাঁও, আকিলপুর, বাওয়ানপুর, হাজারীগাঁও শাখারিকোনা ও ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। তবে এখনও কোনো বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি নজরদারী করা হচ্ছে ও বর্তমান পরিস্থিতি অবনতি হলে মানুষকে সাহায্য করার জন্য আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এলাকার বন্যার্তদের জন্য সরকারিভাবে ত্রাণ বরাদ্ধ হয়েছে। এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
Sharing is caring!